"বুয়েট" ক্যাটাগরীর সকল আর্টিকেল
বুয়েট লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
আবরার হত্যাকান্ডে জড়িত ২৫ হত্যাকারীর মধ্যে ২০ জনের মৃত্যুদন্ড ও ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ডের রায়; BUET; Bangladesh Government; Chatrolig; Pro-gov party; ছাত্রলীগ; সন্ত্রাসী; রাজনীতি; ইসকন; ইস্কন সন্ত্রাসী; ISKCON
আবরার হত্যাকান্ডে জড়িত ২৫ হত্যাকারীর মধ্যে ২০ জনের মৃত্যুদন্ড ও ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ডের রায়

ভয়েস অব পটিয়া-ন্যাশনাল ডেস্কঃ বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও বাকি ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের রায় দিয়েছে আদালত।

গত ‍দু’বছর আগে দায়ের করা এ মামলায় হত্যাকান্ডে জড়িত অভিযুক্ত ২৫ আসামী দোষী প্রমাণিত হওয়ায় ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের বিচারক আবু জাফর কামরুজ্জামান বুধবার এ রায় প্রদান করেন।

উল্লেখ্য, আসামীদের সবাই বুয়েট শিক্ষার্থী এবং ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। তাদের মধ্যে গ্রেফতারকৃত ২২ জনের উপস্থিতিতে আদালত এই রায় ঘোষণা করে; যাদের মধ্যে বাকি ৩ জন মামলার শুরু থেকেই পলাতক রয়েছে। 

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ২৫ আসামীরা হচ্ছেঃ বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল (সিই বিভাগ, ১৩তম ব্যাচ), সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন (কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ১৫তম ব্যাচ), তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৫তম ব্যাচ), সাহিত্য সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির (ওয়াটার রিসোর্সেস ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৬তম ব্যাচ), ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন (মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৫তম ব্যাচ), উপসমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশারফ সকাল (বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৬তম ব্যাচ), সদস্য মুনতাসির আল জেমি (এমআই বিভাগ), সদস্য মুজাহিদুর রহমান (ইইই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), সদস্য হোসেন মোহাম্মদ তোহা (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), সদস্য এহতেশামুল রাব্বি তানিম (সিই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), শামীম বিল্লাহ (মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মাজেদুল ইসলাম (এমএমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর (মেকানিক্যাল, ১৭তম ব্যাচ), মাহমুদুল জিসান (ইইই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), এ এস এম নাজমুস সাদাত (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মিজানুর রহমান (ওয়াটার রিসোসের্স, ১৬ ব্যাচ), শামসুল আরেফিন রাফাত (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং), উপ-দপ্তর সম্পাদক মুজতবা রাফিদ (কেমিকৌশল) এবং মাহামুদ সেতু (কেমিকৌশল)। 

যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত ৫ আসামী হচ্ছেঃ বুয়েট ছাত্রলীগের সহসভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ (১৪তম ব্যাচ, সিই বিভাগ), গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ইসতিয়াক আহমেদ মুন্না (মেকানিক্যাল, তৃতীয় বর্ষ), আইনবিষয়ক উপসম্পাদক অমিত সাহা (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং), সদস্য আকাশ হোসেন (সিই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ) ও মোয়াজ আবু হোরায়রা (সিএসই, ১৭ ব্যাচ)। পলাতক ৩ জন এহতেশামুল রাব্বি তানিম (সিই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মাহমুদুল জিসান (ইইই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ) এবং মুজতবা রাফিদ (কেমিকৌশল)। 
 
স্বীকারোক্তি দেয়া ৮ আসামী হচ্ছেঃ মেহেদী হাসান রবিন, অনিক সরকার, ইফতি মোশাররফ সকাল, মনিরুজ্জামান মনির, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ, এ এস এম নাজমুস সাদাত এবং খন্দকার তাবাখ্খারুল ইসলাম তানভীর। 
 
পিটানোতে সরাসরি জড়িত ১১ আসামী হচ্ছেঃ মেহেদী হাসান রবিন, অনিক সরকার, ইফতি মোশাররফ সকাল, মনিরুজ্জামান মনির, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ, শামীম বিল্লাহ, এ এস এম নাজমুস সাদাত, মুনতাসির আল জেমি, এহতেশামুল রাব্বি তানিম এবং খন্দকার তাবাখ্খারুল ইসলাম তানভীর। 
 
ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত ১১ আসামী হচ্ছেঃ মেহেদী হাসান রাসেল, মুহতাসিম ফুয়াদ, মেহেদী হাসান রবিন, অনিক সরকার, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, মনিরুজ্জামান মনির, ইফতি মোশাররফ সকাল, মুনতাসির আল জেমি, এহতেশামুল রাব্বি তানিম, মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ এবং মুজতবা রাফিদ। 
আবরার হত্যাকান্ডে দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা

মামলার বাদী আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ রায়ের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, রায়ে তিনি সন্তুষ্ট। এই রায় যাতে দ্রুত কার্যকর হয়, এটাই তার প্রত্যাশা। অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলেছেন, এ রায়ে তারা সন্তুষ্ট নন, পুরো রায় দেখে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন তারা। 

যে ফেসবুক পোস্টের কারণে আবরারকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়
যে ফেসবুক পোস্টের কারণে আবরারকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়

২০১৯ সালের ০৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরে বাংলা হলের আবাসিক ছাত্র আবরারকে ফেসবুকে দেশমাতৃকার পক্ষে পোস্ট দেয়াকে কেন্দ্র করে নির্যাতন চালিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ঘটনা ঘটানোর সময় নিষ্ক্রিয় ছিল বুয়েটের শেরেবাংলা হলের দায়িত্বে থাকা প্রভোস্টসহ সমগ্র বুয়েট প্রশাসন। সেই ঘটনায় শিক্ষার্থীদের ক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে বুয়েট। নিষিদ্ধ হয় ছাত্র রাজনীতি। 

২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এ মামলার বিচারকার্য শুরু হয়েছিল। দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে গত ১৪ নভেম্বর বিচারক এ মামলার রায়ের জন্য ২৮ নভেম্বর তারিখ নির্ধারণ করেছিলেন। কিন্তু আরও কিছু সময়ের প্রয়োজন জানিয়ে এ মামলার রায় পিছিয়ে ০৮ ডিসেম্বর নতুন তারিখ নির্ধারণ করেন বিচারক।