|
নম্বর ঠিক রেখে অপারেটর বদল (এমএনপি) সেবা চালু হচ্ছে আজ রাত ১২ টায় |
ভয়েস অব পটিয়া-প্রযুক্তি ডেস্কঃ নম্বর ঠিক রেখে অপারেটর বদল (এমএনপি) সেবা চালু হচ্ছে আজ রবিবার, (৩০ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১২টায়। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির চেয়ারম্যান জহুরুল হক এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
বিটিআরসির চেয়ারম্যান বলেন, ‘এমএনপি সেবা চালু হলে মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোকে মানসম্মত সেবা দিয়ে টিকে থাকতে হবে। অপারেটর পছন্দ বা পরিবর্তনে গ্রাহক সম্পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করবেন। এই সেবা গ্রহণে মোবাইল ব্যবহারকারীকে কিছু অর্থ ব্যয় করতে হবে।’
এমএনপি সেবা প্রদানে লাইসেন্স পাওয়া প্রতিষ্ঠান ইনফোজিলিয়ন বিডি-টেলিটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাবরুর হোসেন বলেন, ‘আগামী ১ অক্টোবর থেকে এমএনপি সেবা দিতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ১ অক্টোবর রাত থেকেই এ সিস্টেমটি শুরু হবে। ওইদিন বিটিআরসিতে এক সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণার মাধ্যমে এ সেবা শুরু করা হবে। সব অপারেটরদের সাথেই এমএনপি দিতে আমাদের কারিগরি সেবা পরিপূর্ণ প্রস্তুত।’
এমএনপি (মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি) সেবা নিতে যে নতুন অপারেটর পছন্দ করা হবে সেই অপারেটরের কাস্টমার কেয়ার সেন্টার বা বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন পয়েন্টে গিয়ে সিম প্রতিস্থাপন (রিপ্লেসমেন্ট) করে নিতে হবে। এতে, এমএনপি ফি বাবদ ৫০ টাকার সাথে ট্যাক্স ও সিম প্রতিস্থাপন খরচসহ মোট ১৫৮ টাকা প্রযোজ্য হবে।
নতুন সিম চালু হতে ৭২ ঘণ্টা সময় লাগবে। তবে অতিরিক্ত খরচের বিনিময়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেও এমএনপি সিম চালু করা যাবে। একবার অপারেটর বদল করে ৯০দিন পরে আবার আগের অপারেটরে বা নতুন অপারেটরে যাওয়া যাবে।
বিটিআরসির তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বের ৭২টি দেশে এমএনপি সেবা চালু আছে।
প্রতিবেশী দেশ ভারত ২০১১ সাল থেকে এবং পাকিস্তান ২০০৭ সাল থেকে এমএনপি সেবা দিচ্ছে।
বাংলাদেশে এমএনপি সেবার জন্য প্রথমে ৩০ টাকা ফির কথা বলা হলেও পরে তা বাড়িয়ে ৫০ টাকা করা হয়। এর সাথে অন্যান্য খরচ মিলিয়ে যে টাকা দিতে হচ্ছে, তা প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় বেশি।
এ বিষয়ে গণমাধ্যমের প্রশ্নে বিটিআরসির চেয়ারম্যান জহুরুল হক বলেন, ‘এ সেবা নিতে গ্রাহককে এখন যে টাকা দিতে হচ্ছে, এমএনপি প্রতিষ্ঠান লাভ বেশি করলে এই টাকার হার ধীরে ধীরে কমিয়ে দেওয়া হবে।’
গত নভেম্বরে এমএনপি সেবার লাইসেন্স পায় বাংলাদেশ ও স্লোভেনিয়ার কনসোর্টিয়াম ইনফোজিলিয়ন বিডি-টেলিটেক। আগস্টে এ সেবা শুরুর কথা থাকলেও নির্দেশনা ও নেটওয়ার্ক জটিলতার কারণে তা দুই মাস পিছিয়ে যায়।
নম্বর পরিবর্তনের ঝক্কিতে যেতে চান না বলে সেবায় সন্তুষ্ট না হওয়ার পরও অনেকে এতদিন অপারেটর বদলাতে পারেননি। এমএনপি চালু হওয়ায় তারা পুরনো নম্বর রেখেই অন্য অপারেটরে যাওয়ার সুযোগ পাবেন।
ইনফোজিলিয়ন বিডি-টেলিটেক জানিয়েছে, যেহেতু গ্রাহকের অপারেটর বদল হচ্ছে এবং তার তথ্য নতুন একটি অপারেটরে যাচ্ছে, তাই গ্রাহককে এমএনপির জন্য নতুন সিম তুলতে হচ্ছে।
এমএনপি চালুর ফলে অপারেটররা তাদের সেবার মান উন্নত করতে আরও বেশি সচেষ্ট হবে এবং বাজারে প্রতিযোগিতা বাড়বে বলে সরকার আশা করছে।
কোনো গ্রাহক অপারেটর বদলালে তার অব্যবহৃত টকটাইম বা ডেটার কী হবে জানতে চাইলে বিটিআরসির সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিস বিভাগের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল আজিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, ‘আগের অপারেটরের অব্যবহৃত ব্যালেন্স নতুন অপারেটরে পাওয়া যাবে না। তবে ওই টাকা দুই বছর পর্যন্ত আগের অপারেটরে জমা রাখার নিয়ম করা হচ্ছে।
দুই বছরের মধ্যে যদি কেউ আগের অপারেটরে ফিরে যান, তাহলে তিনি ওই ব্যালেন্স ব্যবহার করতে পারবেন। তা না হলে তা সরকারি কোষাগারে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা হবে।
আর অপারেটর বদলালে অব্যবহৃত ডেটা আর ব্যবহারের সুযোগ থাকবে না। সেজন্য ব্যালেন্স শেষ করে তবেই অপারেটর বদল করার জন্য গ্রাহকদের পরামর্শ দেন বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
কোনো গ্রাহকের বিল বকেয়া থাকলে কী হবে জানতে চাইলে ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশনস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ মোস্তফা কামাল বলেন, ‘অপারেটর পরিবর্তনের সময় গ্রাহক সেবা কেন্দ্রে সব যাচাই করা হবে, বকেয়া বিল পরিশোধ করেই অন্য অপারেটরে যেতে হবে।’
এদিকে মোবাইল অপারেটরগুলো এমএনপি সেবা চালু করতে ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানা গেছে।