"বাম্পার ফলন" ক্যাটাগরীর সকল আর্টিকেল
বাম্পার ফলন লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
চারিদিকে হাহাকার, ময়লার ভাগাড়ে পেঁয়াজ !; ভয়েস অব পটিয়া; পটিয়া; চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা; চট্টগ্রাম; চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক; ইন্দ্রপুল লবণ শিল্প, পটিয়া লবণ শিল্প, পটিয়া বাইপাস, কক্সবাজার; পেঁয়াজ;
চারিদিকে হাহাকার, ময়লার ভাগাড়ে পেঁয়াজ !

ভয়েস অব পটিয়া-ন্যাশনাল ডেস্কঃ পেঁয়াজের উচ্চমূল্যের ঝাঁজে নাজেহাল সারাদেশ। হু হু করে দাম বেড়ে যাওয়া সেই পেঁয়াজই নাকি পরে আছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ‘ভাগাড়ে’! শুধুই ভাগাড়ই নয়, গতকাল শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যার পর কে বা কারা নগরের ফিরিঙ্গীবাজার ব্রীজঘাট এলাকায় কর্ণফুলী নদীতেও ফেলে গেছে ৭ থেকে ৮ বস্তা পচা পেঁয়াজ।

খাতুনগঞ্জের কয়েকটি আড়তে গিয়ে দেখা যায়, বস্তাভর্তি পেঁয়াজ পচে মাটিতে পড়ে আছে। দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে গোটা এলাকায়। শ্রমিকরা এসব পেঁয়াজ ভাগাড়ে নিয়ে ফেলছেন। প্রায় ১৫ টন পঁচা পেয়াজ বের হয়েছে খাতুনগঞ্জের আড়তগুলো থেকে।

এই ঘটনার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর নগরবাসীর মাঝে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। তারা বলছেন, দাম বাড়াতে অতি মুনাফার লোভে গুদামজাত করা পেঁয়াজ এখন পচে নষ্ট হচ্ছে। মুনাফার লোভে ন্যায্য মূল্যে বিক্রি না করে, সেই পচা পেঁয়াজ এখন ফেলা হচ্ছে ভাগাড়ে-নদীতে। তবে ব্যবসায়ীদের দাবি, মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ পচা হওয়ায় তারা সেগুলো ফেলে দিচ্ছেন। এ কারণে তাদের ব্যাপক লোকসান হচ্ছে। 

এদিকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শক সৈয়দ আহমদ ছফা মাতব্বর জানান, ‘গত তিন-চারদিন ধরে খাতুনগঞ্জসহ নগরের বিভিন্ন পাইকারী ও খুচরা বাজার থেকে বেশি পরিমাণ পচা পেঁয়াজ সরাতে হয়েছে। পচে নষ্ট হওয়া এসব পেঁয়াজ ফেলা হচ্ছে সিটি কর্পোরেশনের ভাগাড়ে। পাঁচ টন ধারণক্ষমতার চারটি গাড়ি দিয়ে এসব বর্জ্য অপসারণ করা হচ্ছে।’

তবে খাতুনগঞ্জের আড়ৎদাররা বলেন, ‘মজুদকৃত পেঁয়াজ নয়, সদ্য মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের বড় একটি অংশ পচা। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে টেকনাফ স্থলবন্দরে আটকে পড়া পেঁয়াজের চালান এখন ঢুকছে। পানিতে সেসব পেঁয়াজের অধিকাংশই পচে গেছে। ব্যবসায়ীরা সেসব পেঁয়াজ ভাগাড়ে-নদীতে ফেলছে।’
পানি প্রবাহের পথ বন্ধ করে খালে ব্রীজ নির্মাণ, ক্ষতির আশঙ্কায় কয়েকশ একর বোরো ফসল; পটিয়া; ইউনিয়ন; খাল; বড়লিয়া;  চাষাবাদ; বোরো; ধান; কৃষক; বাম্পার ফলন; চট্টগ্রাম; Patiya; Chittagong; Chattogram
পানি প্রবাহের পথ বন্ধ করে খালে ব্রীজ নির্মাণ, ক্ষতির আশঙ্কায় কয়েকশ একর বোরো ফসল

ভয়েস অব পটিয়া-নিউজ ডেস্কঃ পটিয়া উপজেলার বড়লিয়া ইউনিয়নে জোয়ার-ভাটার খালে বাঁধ দিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ করে ব্রীজ নির্মাণকে কেন্দ্র করে উদ্বিগ্ন কৃষকরা। ক্ষতির আশঙ্কায় কয়েকশ একর বোরো ফসল। 
উপজেলার বড়লিয়া ইউনিয়নের ওকন্যরা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা বদিউজ্জামানের বাড়ির পাশে কাটাখালী খালে একটি ব্রীজ নির্মাণকে কেন্দ্র করে খালের উপর বাঁধ স্থাপনের মাধ্যমে পানি প্রবাহ বন্ধ করার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেন কৃষকরা। সেচের পানি চলাচলের কোন ব্যবস্থা না রেখে ব্রীজ নির্মাণের জন্য বাঁধ দেয়া হলে কয়েকশ একর জমিতে রোপিত বোরো ফসলে সেচ কার্যক্রম বিঘ্নিত হবে আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। এর ফলে চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলার বড়লিয়া, কর্তালা, পূর্ব বাড়ৈকারা, পশ্চিম বাড়ৈকারা, বেলখাইন, ওকন্যরা সহ আশপাশের এলাকায় বোরো চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। 

ইতোমধ্যে বিষয়টি পটিয়া উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা কৃষি অফিসের মাঠ কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে বলে জানায় কৃষকরা। খালের পানি প্রবাহ বন্ধ করে বাঁধ নির্মাণ হলে কৃষকদের চাষকৃত বোরো ফসল নষ্টের আশঙ্কা। জোয়ার-ভাটার খালের পানি আটকে রাখার চেষ্টার ঘটনায় শুক্রবার সকালে এলাকার কৃষকরা বিক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। 

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) অধীনে বড়লিয়া ইউনিয়নের ওকন্যরা গ্রামে কাটাখালী খালের উপর একটি ব্রীজ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। নির্মানাধীন ব্রীজের উত্তর ও দক্ষিণ দিকে রয়েছে শত শত একর ফসলি জমি। ব্রীজ নির্মাণের জন্য উক্ত খালে বাঁধ স্থাপনের ফলে খালের পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাবে। যার ফলে ওই এলাকার পানি সেচের জন্য স্থাপিত প্রায় ১২টি স্কীম বন্ধ হয়ে বোরো চাষাবাদ বিঘ্ন সৃষ্টি হবে। 

এ ব্যাপারে কৃষকদের সাথে কথা বললে তারা জানান, কাটাখালী খালটি চানখালী কেরিঞ্জা খালের সঙ্গে যুক্ত। জোয়ার-ভাটার এই খালের পানি দিয়ে অত্র এলাকার কৃষকরা ইরি, বোরো মওসুমে চাষাবাদ করে থাকেন। ব্রীজ নির্মাণে নিয়োজিত ঠিকাদার খালের পানি প্রবাহ বন্ধ করে কৃষকের বোরো চাষাবাদে ক্ষতি করার চেষ্টা করছে। এ ব্যাপারে কৃষক মোঃ আবু হাজী, জাহাঙ্গীর আলম, আবদুস ছত্তার ও স্কীম ম্যানেজার মো. রফিক পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তাদের অভিযোগ, ব্রীজ নির্মাণের ঠিকাদার খালের পানি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে নিজের ইচ্ছেমত কাজ করার অপচেষ্টা করছে। খালের পানি প্রবাহ বন্ধ করে দিলে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

পটিয়া উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা (পিআইও) আবুল হোসেন বলেন, কৃষকের ক্ষতি হয় এমন কোন কাজ ঠিকাদারকে করতে দেওয়া হবে না। জনগণের জন্য ব্রীজ নির্মাণ করাও জরুরী। খালের পানি নিয়ে কৃষক যাতে বোরো চাষাবাদ করতে পারেন সে ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, কৃষকদের নিয়ে বৈঠক করে বিষয়টির সমাধান করবেন বলে তিনি জানান। 

এ বিষয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকার কৃষকেরা স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী’র সাথে সাক্ষাত করে তার জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন। তিনি বিষয়টি তদারকি করে দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস প্রদান করেন বলে সূত্র জানায়।
দক্ষিণ চট্টগ্রামে উৎপাদিত লেবুর সুখ্যাতি দেশজুড়ে; পটিয়া; চট্টগ্রাম; Patiya; Chittagong; Chattogram; চন্দনাইশ; সাতকানিয়া; লোহাগাড়া; আনোয়ারা; বোয়ালখালী; রাঙ্গুনিয়া; বাঁশখালী;
দক্ষিণ চট্টগ্রামে উৎপাদিত লেবুর সুখ্যাতি দেশজুড়ে

ভয়েস অব পটিয়া-নিউজ ডেস্কঃ দক্ষিণ চট্টগ্রামের লেবুর সুখ্যাতি সর্বত্র। চলিত বর্ষা মৌসুমে নির্দিষ্ট সময়ে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ায় লেবুর বাম্পার ফলন হয়েছে। লেবুর দাম ভালো থাকায় কৃষকেরাও মহাখুশি।

দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়া ও বোয়ালখালীর পাহাড়ী এলাকায় প্রতি বছর প্রচুর লেবুর চাষ হয়ে থাকে। রমজান, ঈদ ও আবহাওয়া গরম থাকার কারণে লেবুর দাম চড়া থাকায় কৃষকরা খরচ পুষিয়ে লাভের মুখ দেখছেন বলে জানিয়েছেন অনেক লেবু চাষী। জনপ্রিয় ও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ লেবু ফলটি দক্ষিণ চট্টগ্রামের ঐতিহ্যও বহন করে।

লেবু চাষীরা জানান, লেবু সাধারণত ৫ জাতের হয়ে থাকে। এগুলো হলো, কাগজী, পাতি, এলাচি, বাতাবি ও নতুন জাতের হাইব্রিড সিডলেস নামে একটি লেবু চাষও বর্তমানে হচ্ছে। উৎপাদিত লেবুগুলোর মধ্যে কাগজী লেবু ছোট আকৃতির হয়। বাণিজ্যিকভাবে লেবু উৎপাদন ও বিক্রি করে প্রতি বছরই লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করেন এ এলাকার লেবু চাষীরা।

বাণিজ্যিকভাবে লেবু উৎপাদন ও বিক্রয় করার কারণে এ পাহাড়ের গ্রামগুলোকে লেবু গ্রামও অনেকেই বলে থাকেন। পাহাড়ী ও সমতল উর্বরভূমি লেবু চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে লেবু চাষের প্রতি অনেকেই ঝুঁকে পড়েছেন। ফাল্গুন-চৈত্র মাসে লেবুর ফুল আসে এবং জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ়-শ্রাবণ মাস জুড়ে ফলন পাওয়া যায়।

চলতি বছর লেবুর ফলন ভাল হওয়ায় রমজান মাস ও ঈদের চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত লেবুর প্রয়োজনীয়তার ফলে গত বছরের তুলনায় ৫-৬ গুণ দাম বেশি পাচ্ছে লেবু চাষীরা। ফলে লেবু চাষীরা বেজায় খুশি। তারা জানান, প্রতিদিন প্রচুর লেবু বিক্রি হচ্ছে।

এখানকার উৎপাদিত লেবু চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা, চট্টগ্রাম শহর ও ঢাকার কয়েকটি বড় বড় বাজারে সরবরাহ করে থাকেন লেবু ব্যবসায়ীরা। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর কমল মুন্সীর হাট, খরনা রাস্তার মাথা, কেলিশহর দারগা হাট, বোয়ালখালীর কড়লডেঙ্গা-গোমদণ্ডী-ফুলতল সড়ক হয়ে ৪/৫ টি লেবু ভর্তি ট্রাক পিক-আপ লেবু নিয়ে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে চলে যাওয়ার দৃশ্য দেখা যায়।

লেবু চাষীদের অভিযোগ, পরিত্যক্ত পাহাড়ী ভূমি যদি লেবু চাষের আওতায় আনা হয় তাহলে উৎপাদিত লেবু দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিপুল পরিমাণে বিদেশেও রপ্তানী করা যেত। স্থানীয় লেবু চাষীরা আক্ষেপ করে বলেন, সবজি রাখার জন্য হিমাগার না থাকায় উৎপাদিত লেবু সহ বিভিন্ন ধরনের সবজি সংরক্ষণ করতে না পারার কারণে অনেক সময় কম দামে শাক-সবজি বিক্রি করতে হয়, এতে কৃষকদের মূলধন তুলতেই বেগ পেতে হয়।
দক্ষিণ চট্টগ্রামে পেয়ারার বাম্পার ফলন, ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত কৃষক; পটিয়া; চট্টগ্রাম; Patiya; Chittagong; Chattogram; চন্দনাইশ; সাতকানিয়া; লোহাগাড়া; আনোয়ারা; বোয়ালখালী; রাঙ্গুনিয়া; বাঁশখালী;
দক্ষিণ চট্টগ্রামে পেয়ারার বাম্পার ফলন, ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত কৃষক

ভয়েস অব পটিয়া-নিউজ ডেস্কঃ চলতি মৌসুমে দক্ষিণ চট্টগ্রামের ৭ উপজেলায় পেয়ারার বাম্পার ফলন হয়েছে। এবার প্রায় ৪০ কোটি টাকার পেয়ারা উৎপাদন হয়েছে বলে জানান কৃষি অফিস ও পেয়ারা চাষীরা। দক্ষিণ চট্টগ্রামে উৎপাদিত পেয়ারা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাইকাররা সরবরাহ করে থাকেন। এখন পর্যন্ত কোনো হিমাগার বা পেয়ারা সংরক্ষণের যথাযথ ব্যবস্থা না থাকায় অনেক সময় সংরক্ষণের অভাবে অনেক কম দামে পেয়ারা বিক্রয় করে দিতে হয় বলে জানায় পেয়ারা চাষীরা। এতে পেয়ারা চাষীরা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হয়।

দক্ষিণ চট্টগ্রামের ৭ উপজেলার কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, গত বছর প্রায় তিন হাজার ছয় শত একর জমিতে পেয়ারার চাষ হয়েছে। এ বছর চাষ আরো বেড়েছে। লোহাগাড়া, সাতকানিয়া, বাঁশখালী, বোয়ালখালী, আনোয়ারা, চন্দনাইশ, পটিয়া উপজেলায় ছোট-বড় পেয়ারার বাগান রয়েছে প্রায় ৬ হাজার ৮০০ টির মত। বেশিরভাগ বাগান গড়ে উঠেছে পাহাড়ে। যার বেশিরভাগের অবস্থান চন্দনাইশ উপজেলার কাঞ্চননগর, হাশিমপুর. ছৈয়দাবাদ, রায়জোয়ারা, ধোপাছড়ি, দোহাজারী শঙ্খ নদী পাশ ঘেষে; পটিয়া উপজেলার কেলিশহর, হাইদগাঁও, খরনা, কচুয়াই ইউনিয়নের শ্রীমতি খাল পাশে; বাঁশখালী উপজেলার, কালীপুর, বোয়ালখালী উপজেলার করলডেঙ্গা পাহাড়ে; এছাড়াও সাতকানিয়া উপজেলার পদুয়া, বাজালিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলার পূর্বাংশের পাহাড় এবং সমতল ভূমিতে পেয়ারা চাষ করা হয়। 
গত বছরে চাইতে এবার ফলন খুব ভালো হয়েছে। তবে বিশ্বে বিভিন্ন জাতের পেয়ারা থাকলেও দক্ষিণ চট্টগ্রামে কাজী, আঙ্গুরি, বাউ ও কাবিরি— এ চার জাতের পেয়ারা বেশি পাওয়া যায়। এ এলাকার হাজার হাজার একর বনভূমিকে যদি পেয়ারা চাষের আওতায় আনা যায়, তাহলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিপুল পরিমাণ পেয়ারা বিদেশে রফতানি করা সম্ভব। পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।

কৃষি অফিস সূত্রে আরও জানা যায়, পটিয়া ও চন্দনাইশের অধিকাংশ পেয়ারার মাঝেখানে লাল আবরণ থাকে। দেশজুড়ে এ লাল পেয়ারার খ্যাতি রয়েছে। তাছাড়া কিছু বাগানে ১২ মাস পেয়ারা পাওয়া যায়। কৃষক এই পেয়ারাকে বারোমাসি পেয়ারা নামে ডাকেন। তবে চন্দনাইশ ও পটিয়া উপজেলার পেয়ারা সবচেয়ে বেশি সুস্বাদু। তাই দেশজুড়ে এর প্রচুর চাহিদাও রয়েছে। 

পেয়ারা চাষী একাধিক কৃষক বলেন, ‘শুধু মাত্র দক্ষিণ চট্টগ্রামে বছরে ৪০ কোটি টাকার পেয়ারা উৎপাদিত হয়। সরকার বা কৃষি বিভাগ পেয়ারা চাষীদের সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসেনি। বেসরকারিভাবে কোনো সাহায্য-সহযোগিতা পাননি বলেও অভিযোগ পেয়ারা চাষীদের।’ 
দক্ষিণ চট্টগ্রামের এ অপার সম্ভাবনাময় পেয়ারা চাষে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন এ অঞ্চলের পেয়ারাচাষী ও ব্যবসায়ীরা। 
পেয়ারা চাষীরা আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কোনো হিমাগার বা পেয়ারা সংরক্ষণের সরকারীভাবে যথাযথ ব্যবস্থা না থাকায় অনেক সময় সংরক্ষণের অভাবে পেয়ারা চাষীদের অত্যন্ত কম দামে পেয়ারা-লেবুসহ বিভিন্ন সবজি বিক্রয় করে দিতে হয়। এতে পেয়ারা ও সবজিচাষীরা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হন। ’

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ১৩টি স্পটে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার পেয়ারা বেচাকেনা হয়। হাটে আসা পেয়ারা চাষীরা জানান, শুধু রওশন হাটে প্রতিদিন এক হাজার বারেরও বেশি পেয়ারা বিক্রি হয়। পটিয়ার কমল মুন্সীর হাট, চন্দনাইশ উপজেলার বাদমতল, গাছবাড়িয়া খান হাট ও বাগিচা হাটে চাষিরা পাহাড়ি অঞ্চলে উৎপাদিত পেয়ারা নিয়ে আসেন ভারে করে। সেখান থেকে সংগ্রহ করে ব্যাপারীদের হাত ঘুরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলে যায় এই পেয়ারা। বংশপরম্পরায় পেয়ারা চাষ ও বিক্রিতে নিয়োজিত এ অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ। জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত শুধু চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরাই নন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকারি ক্রেতারা ছুটে আসেন দক্ষিণ চট্টগ্রামের এই পেয়ারা বাজারগুলোতে। এক একটি পেয়ারা খুচরা বাজারে ২ থেকে ৮ টাকায় পর্যন্ত বিক্রয় হতে দেখা যায়। 

চন্দনাইশ উপজেলার পেয়ারা চাষী কৃষক কামাল বলেন, আমি নিজের ৩০০ শতক জমিতে পেয়ারা চাষ করেছি। যাতে বাগান সংখ্যা হচ্ছে ৮টি। এতে পেয়ারার বাম্পার ফলন হয়েছে। একটি বাগান থেকে ২-৩ লাখ টাকার পেয়ারা বিক্রি করা সম্ভব বছরে। বর্তমানে প্রতি ভার পেয়ারা বিক্রি হচ্ছে ৮০০-১০০০ টাকায়। এক ভারে ৫০০ থেকে ৬০০ পেয়ারা থাকে। 

পটিয়া ও চন্দনাইশ উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা রঘুনাথ নাহা ও তৌফিক হোসেন খান ভয়েস অব পটিয়া’কে বলেন, ‘পটিয়া ও চন্দনাইশে সবচাইতে বেশি পেয়ারা উৎপাদিত হয়। এ বছর উৎপাদন অনেক ভালো। তবে বাগান পরিচর্যা ও অন্য কতিপয় বিষয়ে মনোযোগ দেয়া গেলে এ উপজেলাগুলোতে পেয়ারার উৎপাদন দ্বিগুণ করা সম্ভব। বাংলাদেশে যে কয়টি পেয়ারার জাত রয়েছে তার মধ্যে সবচাইতে চন্দনাইশ ও পটিয়ার পেয়ারা বেশি সুস্বাদু। এই অঞ্চলের পেয়ারা চাষীদের দাবির কথা আমাদের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। তারা সরকারের সীমাবদ্ধতার কথা বলেন। তবে সবজি ও ফলমূল সংরক্ষণের জন্য এই এলাকায় একটি হিমগারের প্রয়োজন রয়েছে।’

পেয়ারা বিষয়ে ডাক্তাররা বলেন, ‘দাঁতের ব্যাথার জন্য পেয়ারা খুব উপকারী। পেয়ারা গাছের ছাল ও শেকড় আমাশয়ের ওষুধ হিসাবে ব্যবহার করা হয়। মুখের রুচি বাড়াতে পেয়ারা খুব ভালো। পেয়ারার পুষ্টির সাথে রয়েছে ভেষজগুণও। একটি পেয়ারাতে রয়েছে একটি কমলার চাইতে চারগুণ বেশি ভিটামিন সি। তাই বিশ্বজুড়ে পেয়ারার গুণি ফল হিসাবে স্বীকৃতি রয়েছে।

পটিয়া ও চন্দনাইশে শীতকালীন সবজির বাম্পার ফলন; পটিয়া; চন্দনাইশ; শীতকালীন সবজি; Vegetables
পটিয়া ও চন্দনাইশে শীতকালীন সবজির বাম্পার ফলন


ভয়েস অব পটিয়া-নিউজ ডেস্ক: দক্ষিণ চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী পটিয়া উপজেলার শ্রীমতি খাল ও চন্দনাইশের শঙ্খ নদীর তীরবর্তী এলাকায় শীতকালীন সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। সবজি উৎপাদন ভালো হওয়ায় কৃষকরাও দারুণ খুশি। এ বছর শীত মৌসুমের শুরুতে শীতকালীন সবজি আগাম বাজারে আসায় ভালো দাম পাচ্ছে কৃষকরা।

পটিয়া ও চন্দনাইশ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, পটিয়া উপজেলায় ২২ টি ইউনিয়নে শীতকালীন সবজি আবাদ হয়েছে তার মধ্যে ফুলকপি ১২০ হেক্টর ,বাধাকপি ৬০, বেগুন ৮০ হেক্টর ,বরবটি ৫ হেক্টর, মিষ্টি কুমড়া ৬৫ হেক্টর , বাটি শাক ৪ হেক্টর ,লাল শাক ৬ হেক্টর ,পুঁই শাক ১৬ হেক্টর , পালংশাক ৬ হেক্টর, লাউ ৩০ হেক্টর, টমেটো ৬০ হেক্টর,হলুদ ৪০হেক্টর,আদা ১২ হেক্টর,বাঙ্গি ৫ হেক্টর,তরমুজ ৫ হেক্টর,মুগ ডাল ১২ হেক্টর,মরিচ ২০০ হেক্টর,সরিষা ১২ হেক্টর, মিষ্ট আলু ১৫ হেক্টর,আলু ১৯০ হেক্টর. পেঁপে ১০ হেক্টর ।

তবে পটিয়া উপজেলার খরনা ,কচুয়াই ও ইউনিয়নের শ্রীমতি খালকে ঘিরে উপজেলার কৃষক শীতকালীন সবজির ব্যাপক চাষাবাদ করছে। সবচেয়ে বেশি সবজি উৎপাদন হয় উপজেলার কেলিশহর ইউনিয়নের । ওই ইউনিয়নের বহু কৃষক শীতকালীন সবজি চাষাবাদ করে স্বাবলম্বী হয়েছে। এর মধ্যে চন্দনাইশ উপজেলায় শীতকালীন সবজি আবাদ হয়েছে ফুলকপি ১৬০ হেক্টর ,বাধাকপি ১২০, বেগুন ১২৫ হেক্টর ,বরবটি ৮ ৫ হেক্টর, মিষ্টি কুমড়া ১০০ হেক্টর , বাটি শাক ৩০০ হেক্টর ,লাল শাক ৭০ হেক্টর ,পুঁই শাক ৩০ হেক্টর , পালংশাক ৭০ হেক্টর, লাউ ৫০ হেক্টর,মুলা ২৪৫হেক্টর, টমেটো ২২০ হেক্টর,হলুদ ৩০হেক্টর,আদা ৩০ হেক্টর,বাঙ্গি ৫ হেক্টর,তরমুজ ৫ হেক্টর,মুগ ডাল ৫০ হেক্টর,মরিচ ৩১০ হেক্টর,সরিষা ২৫ হেক্টর, মিষ্ট আলু ৩০০ হেক্টর,আলু ৫০০ হেক্টর. পেঁপে ১৫ হেক্টর,তবে শঙ্খ তীরবর্তী দোহাজারী লালুটিয়া, দিয়াকুল, ধোপাছড়ি, বৈলতলী, জাফরাবাদ, বরমা ব্যাপক হারে সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে।

আরো জানা যায়, প্রতিদিন সকালে পটিয়া উপজেলার কেলিশহর রমেশ বাবুর হাট ও দোহাজারী রেলস্টেশনসংলগ্ন কাঁচা বাজারে শীতের কুয়াশা ভেদ করে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মুখরতায় জমজমাট হয়ে উঠে শীতকালীন সবজির পাইকারী বাজার দোহাজারী রেলওয়ে মাঠ। সকাল গড়তেই শঙ্খের বুক জুড়ে নৌকা-সাম্পানে শাক-সবজি বহন করে আসতে থাকে শত শত চাষি।

পটিয়া ও চন্দনাশ উপজেলার একাদিক পাইকারী সবজি ব্যবসায়ী বলেন,পটিয়া উপজেলার কেলিশহর রমেশ বাবুর হাট ও চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী রেলস্টেশন বাজার থেকে মিনিট্রাক, বাস,টেম্পুসহ বিভিন্ন মাধ্যমে চট্টগ্রাম,ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা যাচ্ছে দুই উপজেলার উৎপাদিত এসব সবজি। মিনিট্রাক ভাড়া চট্টগ্রাম পর্যন্ত ২৫০০-২৮০০ টাকা।
দোহাজারী থেকে নগরীতে আসতে পটিয়ার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক পুলিশকে চাঁদা দিতে হয়। ফলে পথে মধ্যে লাইন খরচসহ প্রতি কেজিতে ১০ থেকে ১২ টাকা অতিরিক্ত খরচ পড়ে যায়। সে জন্য পাইকারী ব্যবসায়ীদের প্রতিকেজি সবজি চট্টগ্রাম বিভিন্ন বাজারে ১০-১২ টাকা বেশি দামে বিক্রয়
করতে হয়।

পটিয়ায় কেলিশহর ইউনিয়নের সবজি চাষী সুবল দে বলেন, ৩০ শতকে জমিতে ফুলকপি চাষাবাদ করতে খরচ পরছে ৩০ হাজার টাকা। বিক্রয় করেছি ৫০হাজার টাকার । বর্তমানে জমিতে থাকা ফুলকপি আরো ১৫-২০ হাজার টাকা বিক্রয় করা যাবে ।

পটিয়া উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ কর্মর্কতা মোহাম্মদ রিয়াজুর রহমান ও চন্দনাইশ উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ কর্মর্কতা তৌফিক হোসেন খান ভয়েস অব পটিয়াকে বলেন, চলতি বছর আবহাওওয়া অনুকূলে থাকায় দুই উপজেলায় সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। শ্রীমতি খাল ও শঙ্খ নদীর তীরবর্তী চরের মাটিগুলো সবজি চাষের জন্য বেশ উপযোগী। তাছাড়া এখানকার উৎপাদিত সবজি খেতে খুব সুস্বাদু বলে দেশে এই দুই উপজেলার সবজির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ সবজি চাষিদের সফলতা দেখে অনেকে অন্য পেশা ছেড়ে সবজি চাষে আগ্রহী হয়ে পড়েছে। এজন্য প্রতি বছর সবজি চাষির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

পটিয়া ও চন্দনাইশে উৎপাদিত সবজি দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রফতানি করা সম্ভব হবে; যদি সরকারিভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।