"ব্যবসা-বাণিজ্য" ক্যাটাগরীর সকল আর্টিকেল
ব্যবসা-বাণিজ্য লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
করোনাঃ সংক্রমণ রোধে নতুন ১৮ দফা নির্দেশনা, গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী পরিবহন; করোনা; করোনা ভাইরাস; Covid19; Covid; সংবাদ; সারাদেশ; ঢাকা; চট্টগ্রাম; পটিয়া; পটিয়া; চট্টগ্রাম; Patiya; Chittagong; Chattogram
করোনাঃ সংক্রমণ রোধে নতুন ১৮ দফা নির্দেশনা, গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী পরিবহন

ভয়েস অব পটিয়া-ন্যাশনাল ডেস্কঃ দেশে করোনার সংক্রমণ আবারও উর্ধ্বগতির দিকে যাওয়ায় এর সামাজিক, প্রাতিষ্ঠানিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয়সহ সকল ক্ষেত্রে সংক্রমণ রোধে নতুন করে ১৮ দফা নির্দেশনা জারী করেছে সরকার। 

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ নির্দেশনা জারি করা হয়।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এক ভিডিও কনফারেন্সে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের এ ১৮ দফা নির্দেশনার বিষটি নিশ্চিত করেছেন। 
নির্দেশনাগুলো হলঃ-  
১. সকল ধরণের জনসমাগম (সামাজিক/ রাজনৈতিক/ ধর্মীয়/ অন্যান্য) সীমিত করতে হবে। উচ্চ সংক্রমণযুক্ত এলাকায় সকল ধরণের জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হলো। 
বিয়ে /জন্মদিন সহ যেকোন সামাজিক অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে জনসমাগম নিরুৎসাহিত করতে হবে।

২. মসজিদসহ সকল উপাসনালয়ে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে। 

৩. পর্যটন / বিনোদন কেন্দ্র/ সিনেমা হলে জনসমাগম সীমিত করতে হবে এবং সকল ধরণের মেলা আয়োজন নিরুৎসাহিত করতে হবে।
 
৪. গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে এবং ধারণক্ষমতার ৫০ ভাগের অধিক যাত্রী বহন করা যাবে না। 

৫. সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাতে আন্তঃজেলা যান চলাচল সীমিত করতে হবে, প্রয়োজনে বন্ধ রাখতে হবে।

৬. বিদেশ হতে আগত যাত্রীদের ১৪ দিন পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক (হোটেলে নিজ খরচে) কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে হবে। 

৭. নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী খোলা / উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি পরিপালনপূবর্ক ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। ওষুধের দোকানে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে।

৮. স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানসমূহে মাস্ক পরিধানসহ যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে। 

৯. শপিং মলে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েরই যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে। 

১০. সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে মাস্ক পরিধানসহ যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে।

১১.অপ্রয়োজনীয় ঘোরাফেরা / আড্ডা বন্ধ করতে হবে। জরুরী প্রয়োজন ছাড়া রাত ১০টার পর বাইরে বের হওয়া নিয়ন্ত্রিত করতে হবে। 

১২. প্রয়োজনে বাইরে গেলে মাস্ক পরিধানসহ সকল ধরণের স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে। মাস্ক পরিধান না করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

১৩. করোনায় আক্রান্ত / করোনার লক্ষণযুক্ত ব্যক্তির আইসোলেশন নিশ্চিত করতে হবে। করোনায় আক্রান্ত ব্যাক্তির ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা অন্যান্যদেরও কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে হবে। 

১৪. জরুরি সেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান ছাড়া সকল সরকারি/বেসরকারি অফিস /প্রতিষ্ঠান/ শিল্প-কলকারখানাসমূহ ৫০ ভাগ জনবল দ্বারা পরিচালনা করতে হবে। গর্ভবতী / অসুস্থ/ বয়স ৫৫ উর্দ্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বাড়িতে অবস্থান করে কর্মসম্পাদনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

১৫. সভা, সেমিনার, প্রশিক্ষণ কর্মশালা যথাসম্ভব অনলাইনে আয়োজনের ব্যবস্থা করতে হবে।

১৬. স্বশরীরে উপস্থিত হতে হয় এমন যে কোন ধরণের গণপরীক্ষার ক্ষেত্রে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে। 

১৭. হোটেল-রেঁস্তোরাসমূহে ধারণ ক্ষমতার ৫০ভাগের অধিক মানুষের প্রবেশ বারিত করতে হবে। 

১৮. কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ এবং অবস্থানকালীন সর্বদা বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধানসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে।

উপরোক্ত নির্দেশনাগুলো অবিলম্বে সারাদেশে কার্যকর হবে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত আপাততঃ ০২ সপ্তাহ পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
প্রজ্ঞাপন

 

বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতুর উদ্বোধন, দ্বার খুলেছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের; চট্টগ্রাম বন্দর; চট্টগ্রাম; খাগড়াছড়ি; রাঙ্গামাটি; রামগড়; সাব্রুম
বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতুর উদ্বোধন, দ্বার খুলেছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের

ভয়েস অব পটিয়া-ন্যাশনাল ডেস্কঃ বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ফেনী নদীর উপর নির্মিত মৈত্রী সেতুর উদ্বোধন করা হয়েছে। 
আজ মঙ্গলবার (০৯ মার্চ) দুপুরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভিডিও কনফারেন্সিং এ যুক্ত হয়ে এই সেতুর উদ্বোধন করেন। 

এই প্রথম বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার কোনো নদী সেতুর উদ্বোধন হলো। ফেনী নদীর উপর নির্মিত এই সেতুর নাম রাখা হয়েছে ‘মৈত্রী সেতু’। 
দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী এই সেতু উদ্বোধন করার পাশাপাশি ত্রিপুরার সাবরুমে একটি ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্টেরও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। 

ত্রিপুরাবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি মনে করি এই সেতু আমাদের দুই দেশের মাঝে শুধু সেতুবন্ধই রচনা করবে না বরং ব্যবসা-বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিরাট অবদান রাখবে। শুধু চট্টগ্রাম বন্দর নয়, চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও ত্রিপুরাবাসী ব্যবহার করতে পারবে।’

ফেনী নদীর উপর নির্মিত ফেনী সেতুর দৈর্ঘ্য ১.৯ কিলোমিটার। এটি বাংলাদেশের রামগড় উপজেলার সাথে ভারতের ত্রিপুরার সাবরুমকে যুক্ত করেছে।
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ত্রিপুরাসহ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে আমদানি-রপ্তানির সুবিধার জন্য ১৩৩ কোটি রুপি ব্যয়ে ভারতের ন্যাশনাল হাইওয়েস অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন এই সেতু নির্মাণ করেছে। 

এই সেতু নির্মিত হওয়ায় সহজেই পণ্য আমদানি-রপ্তানির পাশাপাশি দীর্ঘ দশক যোগাযোগ ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকা ত্রিপুরাসহ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে উন্নয়নের দ্বার উন্মোচিত হল।



অবিক্রিত লাল চিনি, বেতন না পেয়ে শ্রমিকদের মানবেতর জীবন; রাজশাহী, চট্টগ্রাম বন্দর, চট্টগ্রাম, ভারত, বাংলাদেশ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, চিনি, আখ, রাষ্ট্রায়াত্ত মিল, সুগার মিল, brown sugar, sugar mill, white sugar

ভয়েস অব পটিয়া-ন্যাশনাল ডেস্কঃ রাষ্ট্রায়াত্ত চিনিকলগুলোতে উৎপাদিত লাল চিনি বিক্রি না হওয়ায় গত ৪ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না চিনিকল শ্রমিকরা। যার ফলে বেতনহীন মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে রাজশাহী-ঠাকুরগাঁওয়ের লাল চিনিকলে উৎপাদনকারী শ্রমিকদের।

চিনিকল সূত্রে জানা গেছে, গত মৌসুমে ৫৪ হাজার ১৪৮ মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে প্রায় ৩ হাজার ৩৫৮ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদন করা হয়েছে। এর মধ্যে এ পর্যন্ত প্রায় ১৮ কোটি ২৭ লাখ টাকা মূল্যের ৩ হাজার ৪৫ মেট্রিক টন চিনি অবিক্রিত রয়েছে।

বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের নির্ধারিত মূল্য অনুযায়ী প্রতি টন চিনির মিল গেটে মূল্য ৬০ হাজার টাকা। কর্পোরেশনের নির্ধারিত বিক্রয়মূল্যের চেয়ে বেসরকারি চিনি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের চিনির বিক্রয়মূল্য কম হওয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
চিনি বিক্রি না হওয়ার ফলে ৪ মাস ধরে বেতন বন্ধ শ্রমিকদের। যার ফলে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে তারা।

বাংলাদেশ চিনি শিল্প কর্পোরেশনের ডিলাররা জানায়, ‘বেসরকারি চিনি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর চিনি কেজি প্রতি মূল্য ৫৩ থেকে ৫৫ টাকা নির্ধারণ করেছে। অন্যদিকে রাষ্ট্রীয়াত্ত চিনিকলের উৎপাদিত চিনির মিল গেট মূল্য কেজি প্রতি ৬০ টাকা হওয়ায় আমরা অল্প পরিমাণে চিনি বিক্রির জন্য সরবরাহ করছি। বেসরকারি শোধনাগারের সাদা চিনি প্রতি গ্রাহকদের পছন্দ থাকায় বাজারে রাষ্ট্রীয় কলের উৎপাদিত লাল চিনির চাহিদা কম বলে মনে করছেন ডিলাররা। যার ফলে বেশিরভাগ চিনিই চিনিকলে অবিক্রিত অবস্থায় থেকে যাচ্ছে।

ঠাকুরগাঁও আখ চাষি সমিতির সভাপতি ইউনুস আলী বলেন, ‘প্রতি বছর আখ সরবরাহ করার পর আখের মূল্য দিতে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে কৃষকরা আখ চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন। যথাসময়ে আখের মূল্য পরিশোধ এবং বাজারে লাল চিনি বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হলে নতুন ভোক্তা তৈরি হবে, এতে কৃষক এবং মিলগুলোও লাভবান হবে।’

ঠাকুরগাঁও সুগার মিলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আমাদের চিনি বিক্রি করে শ্রমিকদের বেতন দিতে হয়। চিনি বিক্রির গতি খুব ধীর হওয়ায় তাদেরকে সময়মতো বেতন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। যার ফলে মানবেতন দিন কাটাতে হচ্ছে চিনিকল শ্রমিকদের। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চিনিকলগুলোকে বাঁচাতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর চিনি তৈরির উপকরণের ওপর আমদানি শুল্ক বাড়াতে হবে। যাতে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চিনিকলগুলোতে উৎপাদিত চিনির বাজার মূল্যের চেয়ে কম দামে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো চিনি বিক্রি করতে না পারে। এর মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় চিনিকল প্রতিষ্ঠানগুলোসহ এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হাজার-হাজার পরিবারের জীবন-জীবিকা রক্ষা পাবে’ বলেও মনে করেন তিনি।

সাদা চিনি খেয়ে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, লিভার বিকলের ঝুঁকি বাড়াচ্ছেন না তো?

আসুন জেনে নিয়ে লাল চিনি ও সাদা চিনির মধ্যে পার্থক্য

•  লাল চিনি হলো সরাসরি আখ থেকে তৈরি অপরিশোধিত চিনি। লাল চিনিতে থাকে আখের সব উপাদান। যেমনঃ- শর্করা, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, লৌহ, ম্যাঙ্গানিজ, উপকারি অ্যামাইনো অ্যাসিড, জিঙ্ক, থায়ামিন, রাইবোফ্লেবিন, ফলিক এসিড, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ইত্যাদি। 

লাল চিনির উপকারী কয়েকটি দিকঃ-
১) প্রচুর মাত্রায় ক্যালসিয়াম থাকার কারণে লাল চিনি খেলে হাড় শক্তপোক্ত হয়। সেই সঙ্গে দাঁতের স্বাস্থ্যেরও উন্নতি ঘটে। ক্যাভিটি এবং ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন হওয়ার আশঙ্কাও দূর হয়। 

২) আখের অ্যাটিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ করে এবং শরীরের ভিতরে উপস্থিত ক্ষতিকর টক্সিক উপাদান বের করে দেয়। 

৩) লিভার সুস্থ রাখে। 

৪) জন্ডিসের প্রকোপ কমায়। 

৫) কোষ্ঠকাঠিন্যে দূর করে। 

৬) আখে থাকা অ্যালকেলাইন প্রপাটিজ গ্যাস-অম্বলের প্রকোপ কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে। 
৭) শরীরের মিনারেল তথা খনিজ পদার্থের চাহিদা পূরণ করে মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ স্বাভাবিক রাখে যা স্ট্রোক প্রতিরোধ করে। 

৮) শরীরের ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করে। কিন্তু লাল চিনি রিফাইন বা পরিশোধন করতে গিয়ে ভিটামিন, মিনারেল, প্রোটিন, এনজাইম এবং অন্যান্য উপকারি পুষ্টি উপাদান দূর হয়ে যায়। চিনি পরিশোধন করতে ব্যবহার করা হয় সালফার এবং হাড়ের গুঁড়ো। 

সাদা চিনি বা রিফাইন করা চিনি যে শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর সে সম্পর্কে ড. উইলিয়াম কোডা মার্টিন এক গবেষণাপত্র বের করেছিলেন। 
ড. উইলিয়াম কোডা মার্টিন গবেষণাপত্রে বলেনঃ- ‘চিনি রিফাইন করে সাদা করার জন্য চিনির সাথে যুক্ত প্রাকৃতিক ভিটামিন ও মিনারেল সরিয়ে শুধু কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা রাখা হয়। কিন্তু শুধু কার্বোহাইড্রেট শরীর গ্রহণ করতে পারে না। মিনারেল ও ভিটামিনবিহীন কার্বোহাইড্রেট দেহের মধ্যে টক্সিক মেটাবোলাইট সৃষ্টি করে। এতে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রতঙ্গের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা নষ্ট হতে থাকে। ফলে কোষ অক্সিজেন পায় না এবং অনেক কোষ মারা যায়।’

ড. উইলিয়াম কোডা মার্টিন গবেষণা লব্ধ ফলাফল প্রমাণ করে- রিফাইন করা চিনি খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। হার্ট ও কিডনী ধীরে ধীরে কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে এবং ব্রেনের উপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি করে। 

সাদা চিনির ক্ষতিকারক দিক 


১) যেহেতু পরিশোধনের সময় চিনির মিনারেল বা প্রাকৃতিক খনিজ উপাদান দূর হয়ে যায়। তাই সহজেই বলা যায়, এতে করে মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ কমে যায়। নিউরন কোষগুলো ধীরে ধীরে মারা যায়। যা স্ট্রোক ঘটায়। 

২) ভিটামিন সরিয়ে ফেলায় শরীর পুষ্টি উপাদান পায় না। 

৩) সাদা চিনিতে অতিরিক্ত পরিমাণে ফ্রুক্টোজ থাকে। ফ্রুক্টোজ হজম করাতে সাহায্য করে লিভার বা কলিজা। কিন্তু অতিরিক্ত ফ্রুক্টোজ লিভার হজম করাতে না পারায় লিভারে তা ফ্যাট আকারে জমা হয়। এতে করে লিভার ড্যামেজ বা লিভার নষ্ট হয়ে যায়।

৪) চিনি পরিশোধনে ব্যবহার হয় সালফার আর হাড়ের গুড়ো যা কিডনি বিকলাঙ্ক করে দেয়। 

৫) সালফার ইনসুলিন নিঃসরণে প্রধান বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। ফলে শরীরের গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায় এবং ডায়াবেটিস হয়। 

এত এত অপকারী বা বিধ্বংসী দিক থাকার কারণেই ড. উইলিয়াম কোডা মার্টিন সাদা চিনিকে বলেছেন বিষ। 

আমাদের দেশের মানুষ টাকা দিয়ে ধবধবে সাদা বিষ খাবে তবুও লাল চিনি কিনবে না! নিজে তো মরছেন, দেশীয় চিনিকলের শ্রমিকদেরও বিনাবেতনে মারছেন!

আসুন সবাই লাল চিনি কিনি, নিজেদের শরীর-স্বাস্থ্য ভালো রাখার পাশাপাশি দেশ ও দশের কথা চিন্তা করি।
চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার শুরু ভারতের, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আসাম-ত্রিপুরায় যাচ্ছে ভারতীয় পণ্য; চট্টগ্রাম বন্দর, চট্টগ্রাম, ভারত, বাংলাদেশ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়
চট্টগ্রাম বন্দর

ভয়েস অব পটিয়া-নিউজ ডেস্কঃ বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দর পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করে ভারতের আসাম ও ত্রিপুরা রাজ্যে পণ্য পৌঁছে দিতে কলকাতার বন্দর থেকে একটি জাহাজ রওনা হয়েছে। আগামী সোমবার এটি চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছাবে। একই দিনে একটি বাংলাদেশি পণ্য বোঝাই জাহাজ ও ভারতের পণ্য বোঝাই জাহাজ বন্দরে এলে চুক্তি অনুযায়ী ভারতের পণ্যবাহী জাহাজটি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সুবিধা পাবে। দেশীয় ব্যবসায়ীদের চেয়ে ভারতের ব্যবসায়ীরা বেশি সুযোগ সুবিধা পাওয়ার বিষয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে ব্যবসায়ী মহলে।

বৃহস্পতিবার ভারতের কলকাতার শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বন্দর থেকে চারটি কনটেইনারে রড ও ডালের একটি চালান নিয়ে যাত্রা করেছে এমভি সেঁজুতি নামের ভারতীয় জাহাজ। 
বাংলাদেশে নিযুক্ত  ভারতের হাই কমিশনার ও বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ভারত বাংলাদেশ ট্রান্সশিপমেন্ট এর চুক্তির আওতায় প্রথমবারের মতো এ জাহাজটি ১০৮ টি কনটেইনার নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছাবে। এরপর, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কাভার্ড ভ্যানে করে চারটি কনটেইনার আখাউড়া-আগরতলা স্থলবন্দর হয়ে প্রবেশ করবে ভারতের ত্রিপুরা ও আসাম রাজ্যে।

ভারতীয় হাইকমিশন ও বাংলাদেশের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের এক চিঠির সূত্রে জানা গেছে, এ চারটি কনটেইনারের মধ্যে দুটি কনটেইনারের রড ত্রিপুরার জিরানিয়ার এস এম করপোরেশনের। বাকি দুই কনটেইনারের ডাল যাবে আসামের জেইন প্রতিষ্ঠানের কাছে। 
এ চালানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দর ও সড়কপথ ব্যবহার করে ভারতীয় পণ্য উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যেগুলোতে পরিবহনের প্রথম পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু হলো। 

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, ‘এখন বন্দরে কোন জাহাজের জট নেই। ফলে ভারতীয় জাহাজটি আসা মাত্রই আমরা বার্থিং কার্যক্রম শুরু করতে পারবো।’ বাংলাদেশের অন্যান্য আমদানিকারকদের মতোই নির্ধারিত হারে মাশুল আদায় করে জাহাজটিকে ছাড়পত্র দেয়া হবে বলে জানান তিনি। 

সূত্র জানায়, চুক্তি অনুযায়ী ভারতীয় পণ্য ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশ কাস্টমস কর্তৃপক্ষ সাত ধরনের মাশুল আদায় করবে। এই সাতটি হলো প্রতি চালানের প্রসেসিং ফি ৩০ টাকা, প্রতি টনের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট ফি ৩০ টাকা, নিরাপত্তা মাশুল ১০০ টাকা, এসকর্ট মাশুল ৫০ টাকা এবং অন্যান্য প্রশাসনিক মাশুল ১০০ টাকা। এ ছাড়া প্রতি কনটেইনার স্ক্যানিং ফি ২৫৪ টাকা এবং বিধি অনুযায়ী ইলেকট্রিক সিল ও লক মাশুল প্রযোজ্য হবে। 

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের অক্টোবরে দিল্লিতে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে পণ্য সরবরাহ করতে দুই দেশের চুক্তি হয়। চুক্তির আর্টিক্যাল-৪ (পোর্ট এন্ড আদার্স ফ্যাসিলিটিজ) এ বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি পণ্যের ক্ষেত্রে যে ধরণের সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে পরিবাহিত ইন্ডিয়ার পণ্যের ক্ষেত্রেও একই সুবিধা প্রদান করবে। এছাড়াও এ ধরনের পণ্যের ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ‘প্রায়োরিটি’র ভিত্তিতে ‘স্পেস’ প্রদান করবে ‘ডেডিকেটেড’ নয়। 

ভারতীয় পণ্য অগ্রাধিকার (প্রায়োরিটি) দেয়ার প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, এর অর্থ এই নয়, ভারতীয় পণ্যবাহী জাহাজ ভেড়ানোর জন্য আমরা দেশীয় জাহাজকে জেটি থেকে বের করে দেবো। বন্দরের জেটি ও ইয়ার্ড খালি থাকা সাপেক্ষেই তাদের এ সুবিধা দেয়া হবে। একই দিনে একটি বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের পণ্য বোঝাই জাহাজ ও ভারতের পণ্য বোঝাই জাহাজ বন্দরে এলে কোনটি আগে বন্দরে ভিড়বে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দুই দেশের চুক্তি অনুযায়ী অবশ্যই ভারতের পণ্যবাহী জাহাজটিকেই আগে প্রায়োরিটি দিতে হবে।’ এতে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের বঞ্চিত করা হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে হওয়া একটি চুক্তিকে সবারই সম্মান করা উচিত।’ 
চট্টগ্রাম বন্দরের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ভারতের পণ্যের ক্ষেত্রে যে প্রায়োরিটি দেয়ার কথা বলা হয়েছে তাতে বন্দরের কিছু করার নেই। চুক্তি অনুযায়ী তা আমাদের করতে হবে। যদিও চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি রপ্তানি বাড়ার কারণে বছরে কয়েক দফা, প্রায় ৫-৬ মাস জাহাজ জটে পড়তে হয়।’ তিনি বলেন, ‘শুরুতে ভারতের পক্ষ থেকে তাদের পণ্যবাহী জাহাজের জন্য একটি ডেডিকেটেড জেটি ও ইয়ার্ড দাবি করা হয়েছিল। বন্দর বিভিন্ন চেষ্টার মাধ্যমে ‘ডেডিকেটেড’ এর পরিবর্তে ‘প্রায়োরিটি’ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। 

দেশীয় ব্যবসায়ীদের চেয়ে ভারতের ব্যবসায়ীরা বেশি সুযোগ সুবিধা পাওয়ার বিষয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে বিভিন্ন ব্যবসায়ী মহলে। তবে ভারতীয় পণ্যের এ সুবিধার পক্ষেও মত দিয়েছেন অনেক ব্যবসায়ী। 
চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘আপনার বাড়িতে কোন মেহমান এলে নিজে খাওয়ার আগে অবশ্যই মেহমানদের খাওয়ানো উচিত। সে হিসাবে ভারতীয় পণ্য বেশি প্রায়োরিটি পেতে পারে। এতে দেশি আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের তেমন কোন সমস্যা হবে না বলে দাবি করেন তিনি।’

তবে তৈরি পোশাক শিল্পের সংগঠন বিজিএমইএর সহ সভাপতি এ এম চৌধুরী সেলিম বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে বন্দরে যেহেতু জাহাজ জট ও কনটেইনার জট নেই সেহেতু আপাতত কোন সমস্যা হবে না। তবে যখন বন্দরের জাহাজ জট শুরু হবে এবং চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে ভারতের পণ্য পরিবহন আস্তে আস্তে বাড়বে তখন দেশীয় ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। একজন ব্যবসায়ী যখন নিজ দেশে প্রায়োরিটি পাবেন না তখন তিনি কোথাও ভালো কিছু করতে পারবেন না।’

বিজিএমইএর সাবেক প্রথম সহ-সভাপতি নাছির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘আমদানি পণ্য হাতে বুঝে পেতে এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় লাগে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের। ঈদ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বাজেটের আগে-পরে চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ জট তীব্র হয়ে পড়ে। তা কাটিয়ে উঠতে কয়েক মাস সময় লাগে। এমন অবস্থায় ভারতীয় পণ্য অগ্রাধিকার পেলে দেশের অর্থনীতিতেই এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তৈরি পোশাক ক্রেতাদের কাছে জাহাজের গড় অবস্থান ও পণ্য খালাসের দীর্ঘসূত্রতার কারণে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক মনোভাব রয়েছে। ভবিষ্যতে তা আরো বাড়বে এবং রপ্তানিতে এর প্রভাব পড়তে পারে।’ 

বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন এর সভাপতি আহসানুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমরা এখনো জানি না বছরে ভারত থেকে কী পরিমান পণ্য এ বন্দর দিয়ে পরিবহন করা হবে। ফলে এখনই বিস্তারিত কিছু বলা যাচ্ছে না। যদি ভারতের পণ্য পরিবহন বাড়ার পাশাপাশি আমাদের বন্দরের অবকাঠামোগত সম্প্রসারণ না হয় তাহলে তা দেশের আমদানি-রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালক (অপারেশন) এনামুল হক বলেন, ‘বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে কোন জাহাজ জট কিংবা কনটেইনার জট নেই। ফলে এখন প্রায়োরিটি দেয়া না দেয়া একই কথা। করোনার শুরুতে প্রতিটি জাহাজের গড় অবস্থান চার দিন হলেও তা কমে এখন একদিনে চলে এসেছে বলেও জানান তিনি। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে জাহাজ জট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
বিমানে আসছে এস. আলম গ্রুপের পেঁয়াজ; পটিয়া; চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা; চট্টগ্রাম; চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক; ইন্দ্রপুল লবণ শিল্প, পটিয়া লবণ শিল্প, পটিয়া বাইপাস, চাঁনখালী খাল, কক্সবাজার; শ্রীমাই খাল; শ্রীমতি খাল; পেঁয়াজ; এস আলম
বিমানে আসছে এস. আলম গ্রুপের পেঁয়াজ

ভয়েস অব পটিয়া-ন্যাশনাল ডেস্কঃ দেশে পেঁয়াজের সরবরাহ ও মূল্য স্বাভাবিক রাখতে জরুরি ভিত্তিতে মিশর থেকে কার্গো বিমানযোগে পেঁয়াজ আমদানির যে ঘোষণা দিয়েছে সরকার তার প্রথম চালান মঙ্গলবার ঢাকায় এসে পৌঁছাবে।

শনিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আব্দুল লতিফ বকসী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। 
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘এস আলম গ্রুপ বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করছে, এটি তার প্রথম চালান। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য আমদানিকারকদের আমদানিকৃত পেঁয়াজ কার্গো উড়োজাহাজ যোগে ঢাকায় পৌছাবে।’

এর আগে শুক্রবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দেশে পেঁয়াজের সরবরাহ ও মূল্য স্বাভাবিক রাখতে জরুরি ভিত্তিতে কার্গো উড়োজাহাজে করে পেঁয়াজ আমদানি করার প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়েছে এবং অল্প সময়ের মধ্যে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ বাজারে সরবরাহ করা সম্ভব হবে। 
এছাড়া, সমুদ্র পথেও আমদানিকৃত পেঁয়াজের বড় চালান বাংলাদেশের পথে রয়েছে, যা অতিশীঘ্রই দেশে এসে পৌঁছাবে। 

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে টিসিবি’র মাধ্যমে সরাসরি তুরস্ক থেকে, এস. আলম গ্রুপ মিশর থেকে, বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান আফগানিস্তান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে জরুরী ভিত্তিতে কার্গো উড়োজাহাজযোগে পেঁয়াজ আমদানি করছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় হতে জরুরী ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে জানিয়ে সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে টেকনাফ স্থলবন্দর, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরসহ বিভিন্ন স্থানে পেঁয়াজ পরিবহনে কয়েকদিনের জন্য সমস্যা হয়েছিল। কেউ পেঁয়াজ অবৈধ মজুত করলে, কারসাজি করে অতি মুনাফা অর্জনের চেষ্টা করলে বা অন্য কোনো উপায়ে বাজারে পেঁয়াজের সংকট সৃষ্টির চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে আইন মোতাবেক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে উল্লেখ করে বলা হয়, দেশের গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃ্খংলা বাহিনী এ বিষয়ে তৎপর রয়েছে। 

ভারতের মহারাষ্ট্র ও অন্য এলাকায় বন্যার কারণে পেঁয়াজের ফলন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় গত ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করে দেয়ার পর বাংলাদেশ মিয়ানমার থেকে এলসি এবং বর্ডার ট্রেডের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পেঁয়াজ আমদানি শুরু করেছে। পাশাপাশি মিশর ও তুরস্ক থেকেও এলসি’র মাধ্যমে পেঁয়াজ আমদানি শুরু করা হয়েছে। সংবাদ বিজ্ঞতিতে বলা হয়, আমদানিকারকদের উৎসাহিত করতে পেঁয়াজ আমদানি ক্ষেত্রে এলসি মার্জিন এবং সুদের হার হ্রাস করা হয়েছে। স্থল ও নৌ বন্দরগুলোতে আমদানিকৃত পেঁয়াজ দ্রুত ও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে খালাসের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও বন্দর কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। 
দেশে পেঁয়াজের দাম ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ট্রেডিং করপোরেশন অফ বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে ট্রাক সেলে ঢাকা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ৩৫টি ট্রাকের মাধ্যমে প্রতি কেজি ৪৫ টাকা মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি করছে। এছাড়াও, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাজার মনিটরিং টিম ঢাকার শ্যামবাজার ও চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের মতো বড় পাইকারি বাজারগুলোতে অভিযান জোরদার করেছে। সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে তারা আশা করছেন, খুব কম সময়ের মধ্যে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ বাজারে চলে আসবে এবং মূল্য স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
চারিদিকে হাহাকার, ময়লার ভাগাড়ে পেঁয়াজ !; ভয়েস অব পটিয়া; পটিয়া; চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা; চট্টগ্রাম; চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক; ইন্দ্রপুল লবণ শিল্প, পটিয়া লবণ শিল্প, পটিয়া বাইপাস, কক্সবাজার; পেঁয়াজ;
চারিদিকে হাহাকার, ময়লার ভাগাড়ে পেঁয়াজ !

ভয়েস অব পটিয়া-ন্যাশনাল ডেস্কঃ পেঁয়াজের উচ্চমূল্যের ঝাঁজে নাজেহাল সারাদেশ। হু হু করে দাম বেড়ে যাওয়া সেই পেঁয়াজই নাকি পরে আছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ‘ভাগাড়ে’! শুধুই ভাগাড়ই নয়, গতকাল শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যার পর কে বা কারা নগরের ফিরিঙ্গীবাজার ব্রীজঘাট এলাকায় কর্ণফুলী নদীতেও ফেলে গেছে ৭ থেকে ৮ বস্তা পচা পেঁয়াজ।

খাতুনগঞ্জের কয়েকটি আড়তে গিয়ে দেখা যায়, বস্তাভর্তি পেঁয়াজ পচে মাটিতে পড়ে আছে। দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে গোটা এলাকায়। শ্রমিকরা এসব পেঁয়াজ ভাগাড়ে নিয়ে ফেলছেন। প্রায় ১৫ টন পঁচা পেয়াজ বের হয়েছে খাতুনগঞ্জের আড়তগুলো থেকে।

এই ঘটনার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর নগরবাসীর মাঝে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। তারা বলছেন, দাম বাড়াতে অতি মুনাফার লোভে গুদামজাত করা পেঁয়াজ এখন পচে নষ্ট হচ্ছে। মুনাফার লোভে ন্যায্য মূল্যে বিক্রি না করে, সেই পচা পেঁয়াজ এখন ফেলা হচ্ছে ভাগাড়ে-নদীতে। তবে ব্যবসায়ীদের দাবি, মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ পচা হওয়ায় তারা সেগুলো ফেলে দিচ্ছেন। এ কারণে তাদের ব্যাপক লোকসান হচ্ছে। 

এদিকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শক সৈয়দ আহমদ ছফা মাতব্বর জানান, ‘গত তিন-চারদিন ধরে খাতুনগঞ্জসহ নগরের বিভিন্ন পাইকারী ও খুচরা বাজার থেকে বেশি পরিমাণ পচা পেঁয়াজ সরাতে হয়েছে। পচে নষ্ট হওয়া এসব পেঁয়াজ ফেলা হচ্ছে সিটি কর্পোরেশনের ভাগাড়ে। পাঁচ টন ধারণক্ষমতার চারটি গাড়ি দিয়ে এসব বর্জ্য অপসারণ করা হচ্ছে।’

তবে খাতুনগঞ্জের আড়ৎদাররা বলেন, ‘মজুদকৃত পেঁয়াজ নয়, সদ্য মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের বড় একটি অংশ পচা। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে টেকনাফ স্থলবন্দরে আটকে পড়া পেঁয়াজের চালান এখন ঢুকছে। পানিতে সেসব পেঁয়াজের অধিকাংশই পচে গেছে। ব্যবসায়ীরা সেসব পেঁয়াজ ভাগাড়ে-নদীতে ফেলছে।’
প্রবল বর্ষণে পটিয়া সদরে জলজট; চরম দূর্ভোগে বিপর্যস্ত জনজীবন; ভয়েস অব পটিয়া; পটিয়া; চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা; চট্টগ্রাম; চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক; ইন্দ্রপুল লবণ শিল্প, পটিয়া লবণ শিল্প, পটিয়া বাইপাস, চাঁনখালী খাল, কক্সবাজার; Voice of Patiya
প্রবল বর্ষণে পটিয়া সদরে জলজট; চরম দূর্ভোগে বিপর্যস্ত জনজীবন

ভয়েস অব পটিয়া-নিউজ ডেস্কঃ টানা বৃষ্টিতে পটিয়া সদরে সৃষ্টি হয়েছে জলজট। তিন দিনের প্রবল বর্ষণের ফলে পটিয়ার অধিকাংশ এলাকায় পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। চরম দূর্ভোগে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। বিশেষ করে পটিয়া পোষ্ট অফিস মোড়, ছবুর রোড, মিশন রোড, স্টেশন রোড, ক্লাব রোড, থানার মোড়, ডাকবাংলো রোড, জামিয়া মাদ্রাসা রোড, আমির ভান্ডার রোডসহ পটিয়া পৌর সদরের বেশ কয়েকটি প্রধান সড়ক পানিতে ডুবে গেছে। এর ফলে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষদের। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, ‘পটিয়া পৌর কর্তৃপক্ষের অপর্যাপ্ত ও অপরিকল্পিত ড্রেন নির্মাণের ফলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ব্যবসায়ীরা প্রতিনিয়ত পলিথিনসহ ময়লা-আবর্জনা সরাসরি ড্রেনের পানি নিষ্কাশনের পথে ফেলার কারণে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা।’

পটিয়ার বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বললে তারা ভয়েস অব পটিয়া’কে জানান, ‘গত ৫ বছর আগেও পটিয়া পৌরসভার প্রধান সড়কগুলোতে এই ধরনের জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়নি; পৌর কর্তৃপক্ষের অপরিকল্পিত ড্রেন নির্মাণ, ড্রেন দিয়ে পানি নিষ্কাশন না হওয়ার কারণে পটিয়া পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টির মূল কারণ। যার ফলে দৈনন্দিন চলাফেরা, ব্যবসা-বাণিজ্য করতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। হিমশিম থেকে রক্ষা পেতে সঠিক পরিকল্পনার বিকল্প নেই বলে মনে করছেন একাধিক ব্যবসায়ী।’

স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, ‘সামান্য বৃষ্টিতেই পটিয়ার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়; যার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে-আসতে আমাদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।’

এদিকে সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, পৌর কর্তৃপক্ষের অপরিকল্পিতভাবে ড্রেন নির্মাণের ফলে রাস্তায় জমে থাকা পানি সহজে নিষ্কাশনে বাধা পাচ্ছে। তাছাড়া বিগত ২ বছর যাবত ধীরগতিতে ড্রেন নির্মাণ এর একটি বড় কারণ।

পৌর কর্তৃপক্ষের সাথে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পৌর মেয়র হারুনুর রশিদ ভয়েস অব পটিয়া’কে জানান, ‘উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বৃষ্টির পানি সরাসরি পটিয়া পৌর এলাকার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়, যার ফলে এ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া টানা তিন দিনের বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলের ফলে পৌর সদরের নিম্নাঞ্চলগুলো তলিয়ে গেছে। বৃষ্টি কমার সাথে সাথে পানি নেমে যাবে। এছাড়া পৌর সদরের নির্মাণাধীন ড্রেনগুলোর কাজ শেষ হলে অচিরেই পৌরবাসী এই জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাবে।’

এদিকে উপজেলার কচুয়াই ইউনিয়নের শ্রীমাই খালের বাঁধ ভেঙে পানিতে তলিয়ে গেছে বিস্তীর্ণ এলাকা। ডুবে গেছে শখানেক পুকুর। কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে মৎস্য ব্যবসায়ীদের।
কোরবানি সামনে রেখে পটিয়ায় গরুচোরদের উৎপাত, নির্ঘুম খামারিরা; পটিয়া; চট্টগ্রাম; ইউনিয়ন; জিরি; কুসুমপুরা; বড়লিয়া; আশিয়া; কাশিয়াইশ; জঙ্গলখাইন; কোরবানি; গরু; খামার; Patiya; Chittagong; Chattogram
কোরবানি সামনে রেখে পটিয়ায় গরুচোরদের উৎপাত, নির্ঘুম খামারিরা

ভয়েস অব পটিয়া-নিউজ ডেস্কঃ কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে পটিয়ায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে গরু চোরচক্র। উপজেলা-পৌরসদরের বিভিন্ন এলাকায় প্রায়ই ঘটছে গরু চুরির ঘটনা। পটিয়া থানা পুলিশ সূত্র জানায়, গত একমাসে বিভিন্ন কৌশলে গরু চুরির ঘটনায় দশ চোর গ্রেপ্তার ও চারটি গরু উদ্ধার করেছে পুলিশ। এছাড়া মালিক খুঁজে না পাওয়ায় বর্তমানে পটিয়া থানায় একটি গরু ও একটি মহিষ নিয়ে বিপাকে পড়েছে পুলিশ।

জানা যায়, পটিয়া উপজেলার জিরি ইউনিয়নের একটি ফার্ম থেকে ছয়টি গরু চুরির পর থেকে খামারিরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। গরু চোরের ভয়ে খামারি ও এলাকার লোকজন রাতে বিভিন্ন এলাকায় পাহারা দিচ্ছেন। পাশাপাশি গরু চোরদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। সম্প্রতি পুলিশের হাতে আটক হওয়া আল ওয়ালী খামারের নৈশপ্রহরীর কাছ থেকে গরু চোরদের সম্পর্কে পাওয়া গেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। গরু চুরির মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন খোদ গরু ব্যবসায়ীর পুত্র তৌহিদ। 

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার আরাকান মহাসড়কটি পটিয়া উপজেলা সদর দিয়ে যাওয়ার কারণে চোরেরা গরু চুরি করে তা নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যেতে সক্ষম হচ্ছে। আসন্ন কোরবানি ঈদে বিক্রি করার জন্য পটিয়ার জিরি ইউনিয়নে আল ওয়ালী খামার ২৩টি গরু মোটাতাজা করে। তারা আনোয়ারা উপজেলার বরুমছড়া এলাকার গরু ব্যবসায়ী আবদুর রাজ্জাকের কাছ থেকে নগদ ও বাকিতে গত ২৫ মে ১৪টি গরু ১৬লাখ ৬০হাজার টাকায় মৌখিক চুক্তিতে ক্রয় করেন। এর মধ্যে ১০ লাখ ৫ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। বাকি টাকার মধ্যে গত ঈদ-উল-ফিতরের আগের দিন আরো সাড়ে তিন লাখ টাকা পরিশোধ করার জন্য চাপ দেয়। কিন্তু হঠাৎ করে ঈদের পর দিন রাতেই খামারের ১২ লাখ টাকার মূল্যের ছয়টি ষাঁড় গরু চুরি হয়। এ বিষয়ে খামারিরা পটিয়া থানায় অভিযোগ করার পর পুলিশ নৈশপ্রহরী মো. ইসহাককে আটক করে। নৈশপ্রহরী জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে স্বীকার করে রাতে ছয়টি গরু আবদুর রাজ্জাকের পুত্র তৌহিদ অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে গাড়ি করে নিয়ে গেছে। বর্তমানে নৈশপ্রহরী ইসহাক ও গরু ব্যবসায়ী আবদুর রাজ্জাকের পুত্র তৌহিদ জেলও খেটেছে। 

খামারি আবদুর রহমান আনোয়ার বলেন, ‘হঠাৎ করে পটিয়ায় গরু চুরি বেড়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত খামারিরা থানায় লিখিত অভিযোগ করলেও ১৫ দিনেও তাদের গরু উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বোরহান উদ্দিন ভয়েস অব পটিয়া’কে জানান, ‘গরু চোরদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। ইতোমধ্যে একজন নৈশপ্রহরী, গরু ব্যবসায়ীর পুত্রসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্তমানে থানায় একটি গরু ও একটি মহিষ রয়েছে। মালিক খুঁজে না পাওয়ায় পুলিশ এসব গরু ও মহিষ নিয়ে বিপাকে পড়েছে। চুরি বন্ধে সকলের সহযোগীতা কামনা করেছেন ওসি বোরহান উদ্দিন।’
পটিয়ায় মেয়াদোত্তীর্ণ ও ভেজাল পণ্য বিক্রয় করার দায়ে জরিমানা; পটিয়া; চট্টগ্রাম; ভেজাল; অভিযান; পণ্য; ভেজাল পণ্য; তেল; ট্যাংক; মোবাইল কোর্ট; ভ্রাম্যমাণ আদালত; চট্টগ্রাম; সারাদেশ; Patiya; Chittagong; Chattogram; Mobile Court;
পটিয়ায় মেয়াদোত্তীর্ণ ও ভেজাল পণ্য বিক্রয় করার দায়ে জরিমানা

ভয়েস অব পটিয়া-নিউজ ডেস্কঃ পটিয়ায় মেয়াদোত্তীর্ণ, ভেজাল পণ্য বিক্রয় ও পণ্যের মূল্য তালিকা না টাঙানোর দায়ে কয়েকজন দোকানীকে ৫০,০০০/- টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। 

গতকাল রবিবার দুপুরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পটিয়া পৌর সদরের কামাল বাজারে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাব্বির রহমান সানির নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। এতে মেয়াদোত্তীর্ণ তীর, ওকে, সান ব্র্যান্ডের সয়াবিন তেল, ভেজাল ঘি, আচার ইত্যাদি বিক্রয় ও মূল্যতালিকা না টাঙানোর দায়ে বিসমিল্লাহ ষ্টোরকে ২০,০০০/- টাকা, দেলোয়ার ষ্টোরকে ১০,০০০/- টাকা ও বাদল ষ্টোরকে ৫,০০০/- টাকা সহ মোট ৫০,০০০/- টাকা জরিমানা করা হয়। 

সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাব্বির রহমান সানি জানান, দুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের উপস্থিতি টের পেয়ে অনেক দোকানী দোকান বন্ধ করে সটকে পড়েন। ব্যবসায়ীরা ২০১৭ সালে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে এমন পণ্যও দোকানে রেখেছেন। আবার ট্যাংকের নকল টাংক নাম দিয়েও পণ্য বিক্রয়ের জন্য পসরা সাজিয়েছে, যা মানব দেহের খুবই ক্ষতিকর। তাদেরকে মূল্য তালিকা টাঙানোর পাশাপাশি ভেজাল পণ্য বিক্রি না করতে সর্তক করা হয়েছে। এরপরেও ব্যবসায়ীরা সঠিক পথে না আসলে ভোক্তা অধিকার আইনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
লবণ পানিতে পিচ্ছিল চট্টগ্রাম-পটিয়া-কক্সবাজার মহাসড়ক যেন মৃত্যুফাঁদ; পটিয়া; চট্টগ্রাম; কক্সবাজার; মহাসড়ক; লবণ; Patiya; Chittagong; Chattogram; Coxsbazar; Highway; Salt industry
লবণ পানিতে পিচ্ছিল চট্টগ্রাম-পটিয়া-কক্সবাজার মহাসড়ক যেন মৃত্যুফাঁদ

ভয়েস অব পটিয়া-নিউজ ডেস্কঃ লবণ পানিতে মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়া অংশ। প্রতিদিন কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পানিযুক্ত অপরিশোধিত লবণ আনলোড করা হয় পটিয়ার ইন্দ্রপুল শিল্প এলাকায়। যার ফলে অপরিশোধিত লবণ থেকে ঝরে পড়া পানি পিচ্ছিল করে তুলছে ইন্দ্রপুল লবণ শিল্প এলাকা সংলগ্ন চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অংশের উভয় পাশের প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সড়ক। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা, ঝরছে প্রাণ। গত এক বছরে প্রায় ১০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে, আহত হয়েছে শতাধিক মানুষ। যাদের বেশিরভাগই ছিল মোটরসাইকেল আরোহী। 

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, লবণ থেকে ঝরে পড়া পানিতে এত দুর্ঘটনা ঘটলেও তা বন্ধে এখনো পর্যন্ত প্রশাসন থেকে তেমন কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে লক্ষ্য করা যায় নি। 

অপরদিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে পলিথিন দিয়ে লবণ পরিবহনের জন্য বার বার অবহিত করা হলেও তাতে কর্ণপাত করছে না লবণ ব্যবসায়ীরা। অনেক লবণ পরিবহনকারী ট্রাকে পলিথিন ব্যবহার করলেও ইন্দ্রপুল এলাকায় সড়কের উপর লবণ আনলোড করার সময় লবণাক্ত পানিতে সয়লাব হয়ে যায় মহাসড়ক। 

এদিকে পানিযুক্ত লবণ পরিবহনের ফলে মহাসড়ক ক্ষতিগ্রস্ত এবং পিচ্ছিল হয়ে দুর্ঘটনা বাড়ার কারণে গত জানুয়ারি মাসে চট্টগ্রাম জেলার উন্নয়ন সমন্বয় সভায় সড়ক ও জনপথ বিভাগ থেকে পানিযুক্ত লবণ পরিবহনের নেতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরা হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে লবণ ব্যবসায়ীদের নিয়ে মতবিনিময় করা হবে। 

এদিকে মহাসড়কের পাশে পানিযুক্ত লবণ আনলোড বন্ধে মিল মালিকদের নির্দেশনা দিয়েছে পটিয়া লবণ মিল মালিক সমিতি। তা সত্বেও সড়কের উপর লবণ আনলোড বন্ধ করেনি কেউ। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পটিয়া লবণ শিল্প এলাকায় চাঁনখালী খাল দিয়ে লবণ বোঝাই ট্রলার আসা কমে গেলে ট্রাকে লবণ পরিবহন বেড়ে যায়। বিগত ১০ বছর ধরে ট্রাকে করে লবণ পরিবহন করা হলেও এতে কোন পলিথিন ব্যবহার করা হতো না। সম্প্রতি কিছু কিছু লবণ পরিবহনকারী পলিথিন ব্যবহার শুরু করলেও এতে তেমন একটা উন্নতি পরিলক্ষিত হয় নি। 

কক্সবাজার সদর, মহেশখালী, চকরিয়া ও বাঁশখালী থেকে সড়ক পথে আসা ট্রাক থেকে লবণ আনলোড করার সময় ঝরে পড়া লবণের পানিতে ইন্দ্রপুল মহাসড়ক এলাকা সয়লাব হয়ে যায়। এসব ঝরে পড়া লবণাক্ত পানির ফলে, পটিয়া থানার মোড় হতে আমজুর হাট পর্যন্ত চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সড়ক সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এতে গত এক বছরে অসংখ্য দুর্ঘটনায় ১০ জনের প্রাণহানিসহ শতাধিক লোক আহত হয়। 

এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের (দোহাজারী) নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদ হাসান ভয়েস অব পটিয়া’কে জানান, ‘পানিযুক্ত লবণ পরিবহন বন্ধ করতে জানুয়ারি মাসের জেলা উন্নয়ন সভায় পানিযুক্ত লবণ পরিবহনের ক্ষতিকারক দিকগুলো তুলে ধরা হয়। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসককে অনুরোধ জানানো হয়েছে।’ 
পটিয়া লবণ মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক আল্লাই ভয়েস অব পটিয়া’কে বলেন, ‘মহাসড়কের উপর যারা পানিযুক্ত লবণ আনলোড করেন তাদেরকে সতর্ক করে চিঠি দেয়া হয়েছে। চিঠিতে মহাসড়কের উপর লবণ আনলোড বন্ধ করতে বলা হয়েছে। আমরা পুনরায় ওইসব মিল মালিকদের আবারো সতর্ক করব; অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাবিবুল হাসান ভয়েস অব পটিয়া’কে বলেন, ‘বিষয়টি অতিব গুরুত্বপূর্ণ। আমরা শীঘ্রই এ ব্যাপারে লবণ মালিকদের সাথে আলোচনায় বসব। তবে যারা সড়কের পাশে লবণ আনলোড করছে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
পটিয়ার লবণ শিল্পের ফিরছে সুদিন, যাচ্ছে সারাদেশে; পটিয়া; চট্টগ্রাম; লবণ শিল্প; পটিয়া সদর; ইন্দ্রপুল; চাঁনখালী; খাল; Salt; Patiya; Chattogram; Chittagong
পটিয়ার লবণ শিল্পের ফিরছে সুদিন, যাচ্ছে সারাদেশে

ভয়েস অব পটিয়া-নিউজ ডেস্কঃ বিলুপ্তপ্রায় পটিয়ার লবণ শিল্পের আবার ফিরেছে সুদিন। সরকারী গৃহীত নানান পদক্ষেপের সুফল পেতে শুরু করেছে পটিয়ার ইন্দ্রপুল এলাকার লবণ মিল মালিকরা। বৃটিশ আমল থেকে পটিয়া সদরে চাঁনখালী খালের পাড়ে গড়ে উঠা দেশের অন্যতম বৃহৎ লবণ পরিশোধন এলাকা ইন্দ্রপুল থেকে পরিশোধিত লবণ যাচ্ছে সারাদেশে। 
এ লবণ শিল্পকে কেন্দ্র করে প্রায় ১০ হাজারের অধিক শ্রমিকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে শ্রমিকরা এসে এখানে কাজ করছেন। বছরের ছয় মাস এখানে পুরোধমে চলে লবণ পরিশোধন প্রক্রিয়া। 

জানা যায়, দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাঁশখালী, কক্সবাজারের মহেশখালী, কুতুবদিয়া, পেকুয়া, টেকনাফ, উখিয়া, মগনামা এলাকায় মাঠে উৎপাদিত কাঁচা লবণ সাঙ্গু নদী থেকে মুরালীঘাট হয়ে চাঁনখালী খাল দিয়ে লবণ বোঝাই বড় বড় নৌকা আসত পটিয়ার ইন্দ্রপুল এলাকার লবণ মিলগুলোতে। 

কিন্তু ৯০ দশকের পর থেকে চাঁনখালী খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে ইন্দ্রপুল লবণ শিল্প। চাঁনখালী ভরাট হয়ে যাওয়ার পরেও কর্ণফুলী নদী দিয়ে বোয়ালখালী খাল হয়ে ইন্দ্রপুলে লবণবোঝাই ট্রলার আসতো। কিন্তু ধলঘাট এলাকার চন্দ্রকলা সেতু ভেঙে খালে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হলে ইন্দ্রপুল লবণ শিল্পের কপালে শেষ পেরেকটি ঠুঁকে দেয়া হয়। পরবর্তীতে চাঁনখালী খাল খনন হলেও নানান প্রতিবন্ধকতার কারণে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলতে থাকে এ শিল্পটি। এক সময় ধীরে ধীরে অনেক লবণ মিল বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় একশ লবণ মিল থেকে ডজনে নেমে আসে লবণ মিলের সংখ্যা। পরে ট্রাকে করে লবণ আসতে থাকে ইন্দ্রপুলে। কিন্তু বিগত কয়েক বছর থেকে সরকারী গৃহীত নানান পদক্ষেপের ফলে ইন্দ্রপুলের লবণ মিলগুলোতে আবারো কাঁচা লবণ আসতে শুরু করে। বর্তমানে ট্রলার ও ট্রাকে করে নিয়মিত কাঁচা লবণ আসে এখানে। 

বর্তমানে ইন্দ্রপুল এলাকায় রয়েছে প্রায় ৪৮টি লবণ মিল। যেখানে বিগত কয়েক বছর আগেও ২০টি মিলও ভালোভাবে চলতো না, কিন্তু এখন পুরোদমে চলছে লবণ পরিশোধের কাজ। চাঁনখালী খাল হয়ে ট্রলারে করে এবং চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক হয়ে ট্রাকে করে লবণের কাঁচামাল আসে এখানে। আবার পরিশোধন করে পটিয়া থেকে যেসব লবণ সারাদেশে যাচ্ছে। যা দেশের ৪০ শতাংশ চাহিদা মেটাচ্ছে। 

ট্রলার মালিক মোঃ আজগর জানান, তিনি নিয়মিত কুতুবদিয়া থেকে লবণের কাঁচামাল নিয়ে পটিয়া ইন্দ্রপুলে আসেন। তার ট্রলারে সর্বোচ্চ দুই হাজার মন কাঁচা লবণ আনা যায়। মেসার্স মমতাজিয়া সল্টের মার্কেটিং অফিসার আনোয়ার রহমান বলেন, তাদের মিলে বর্তমানে দুই শতাধিক নারী-পুরুষ শ্রমিক লবণ পরিশোধনের কাজে নিয়োজিত। কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকা থেকে যেসব কাঁচা লবণ ট্রাকে এবং ট্রলারে করে আনা হয়। কাঁচা লবণ মিলে পরিশোধন করে প্যাকেটজাত করে সারাদেশে সরবরাহ করা হয়। ইসলামাবাদ সল্টের পরিচালক মুহাম্মদ আশেক এলাহী বলেন, ইন্দ্রপুলের মিলে পরিশোধিত লবণ প্যাকেটজাত করে সিলেট, সিরাজগঞ্জ, ঢাকা, রংপুর, দিনাজপুর, সৈয়দপুর, রাজশাহী, বগুড়া, ভৈরব, নরসিংদী, নোয়াখালীসহ আরো অনেক জেলায় সরবরাহ করা হয়। সরকারী বিভিন্ন পদক্ষেপ এর কারণে বর্তমানে লবণ শিল্প সঠিক পথেই এগুচ্ছে। কথা হলে কয়েকজন শ্রমিক জানান, তারা ভোলা, নোয়াখালীসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ইন্দ্রপুল লবণ শিল্পে শ্রমিকের কাজে নিয়োজিত প্রায় ৫ বছর ধরে। প্রত্যেক মিলে অন্তত দুই শতাধিকের অধিক শ্রমিক রয়েছেন। ইন্দ্রপুল এলাকায় যেসব মিল রয়েছে সেসব মিলে প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। তাদের বিভিন্ন দাবি দাওয়া আদায়ের জন্য একটি সমিতিও রয়েছে বলে জানান তারা। 

বিসিক সূত্র জানায়, বাংলাদেশে প্রতি বছর ১৫ লক্ষ মেট্রিক টন লবণ উৎপাদন হয়ে থাকে। কিন্তু বাংলাদেশে লবণের চাহিদা রয়েছে ১৬ লক্ষ ২৫ হাজার মেট্রিক টন। এতে আরও ১ লক্ষ ৩০ হাজার মেট্রিক টন লবণের ঘাটতি রয়েছে। তাই আপদকালীন মজুতসহ প্রায় ৩ লক্ষ মেট্রিক টন লবণের প্রয়োজন রয়েছে। এ ঘাটতি মেটাতে প্রায় ৩ লক্ষ মেট্রিক টন লবণের আমদানি করা প্রয়োজন রয়েছে।

সম্প্রতি এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কিছু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বিভিন্ন কলকারখানায় শিল্প লবণ হিসেবে ব্যবহৃত সোডিয়াম সালফাইড আমদানি করে থাকে। তা ধবধবে সাদা বিধায় ভোজ্য লবণ বলে বিক্রি করে আসছে। সোডিয়াম সালফাইড নামের বস্তার গায়ে লিখে সোডিয়াম ক্লোরাইড (ভোজ্য লবণ) আমদানি করে লাভবান হচ্ছে। কারণ, সোডিয়াম সালফাইড আমদানিতে সরকারকে ৭% ট্যাক্স দিতে হয়। কিন্তু সোডিয়াম ক্লোরাইড আমদানিতে শতভাগ ট্যাক্স দিতে হয়। তাই তারা ৭% ট্যাক্স দিয়ে প্রতারণা করে ভোজ্য লবণ আমদানিতে ব্যয় কম হচ্ছে এবং অধিক মুনাফা লাভের সুযোগ পাচ্ছে। এতে করে গুটিকয়েক ব্যবসায়ী লাভবান হলেও অধিকাংশ লবণ ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া এ লবণ সরাসরি মানবদেহের জন্য ক্ষতিক্ষর। সাধারণ জনগণ এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দাবি জানান। 

তবে সম্প্রতি সরকারী নজরদারী বাড়ানোর কারণে অসাধু ব্যবসায়ীদের সোডিয়াম সালফাইডের আমদানি কমেছে। এছাড়াও চাঁনখালী খাল খনন, মহাসড়কে যান চলাচলে হয়রানি বন্ধসহ বেশ কয়েকটি গৃহীত পদক্ষেপের কারণে বর্তমানে পটিয়া ইন্দ্রপুলে নতুন নতুন কারখানা তৈরি হচ্ছে। 

পটিয়া ইন্দ্রপুল লবণ মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফজলুল হক বলেন, কয়েক বছর আগেও ইন্দ্রপুল লবণ শিল্প থেকে ব্যবসায়ীরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছিল। কিন্তু বর্তমানে সরকারের বেশ কয়েকটি ইতিবাচক পদক্ষেপের কারণে এখানে নতুন করে লবণ শিল্পের সৃষ্টি হচ্ছে। বিশেষ করে লবণ বোঝাই ট্রাক হয়রানী বন্ধ, চাঁনখালী খাল খনন করার ফলে সহজে ট্রলার চলাচল করতে পারছে। তাছাড়া লবণ শিল্পের প্রসারে পটিয়া বিসিক শিল্প নগরীর প্রতিনিধি সবসময় তাদের সহায়তা করছেন বলে জানান।
পটিয়ায় অজ্ঞাত রোগে মরছে ফার্মের মুরগী, রোগাক্রান্ত মুরগী কমদরে বিক্রির অভিযোগ; পটিয়া; ইউনিয়ন; আশিয়া; মুরগী; চট্টগ্রাম; Patiya; Chittagong; Chattogram
পটিয়ায় অজ্ঞাত রোগে মরছে ফার্মের মুরগী, রোগাক্রান্ত মুরগী কমদরে বিক্রির অভিযোগ

ভয়েস অব পটিয়া-নিউজ ডেস্কঃ পটিয়ায় অজ্ঞাত রোগে মরছে বিভিন্ন পোল্ট্রি ফার্মের মুরগী। গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে উপজেলার আশিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় এ রোগের প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে বলে জানায় স্থানীয়রা। এতে সর্বস্বান্ত হয়েছে অনেক খামারি বলে জানা যায়। 
অভিযোগ উঠেছে, খামারিরা লোকসান পুষিয়ে নিতে রোগাক্রান্ত প্রতিটি মুরগী ৫০ টাকা দরে গ্রামের লোকজনের কাছে বিক্রি করছে। 

এদিকে প্রতিদিন এক ফার্ম থেকে অন্য ফার্মে রোগ ছড়িয়ে পড়ছে বলে জানা যায়। এ ঘটনায় পোল্ট্রি ফার্ম মালিকদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। 
উপজেলার আশিয়া ইউনিয়নাধীন পোল্ট্রি ফার্মের মালিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত এক সপ্তাহ ধরে এলাকার বেশ কয়েকটি ফার্মের মুরগী মারা গেছে। একের পর এক ফার্মে অজ্ঞাত এ রোগ ছাড়াচ্ছে। এক সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি মুরগী মারা গেছে শুধু আশিয়া ইউনিয়নে। অজ্ঞাত রোগে মুরগী মারা যাওয়ায় এ শিল্পে ধস দেখা দিয়েছে। রোগ নির্ণয় করতে না পারায় ফার্মের মুরগীর মৃত্যু থামানো যাচ্ছে না। এতে ফার্ম মালিকরা সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছে বলে সূত্র জানায়। 

ক্ষতিগ্রস্ত ফার্ম মালিকরা জানান, বেশিরভাগ ফার্মের মুরগী হলুদ রং-এর মল ত্যাগ করে এক থেকে ছয় ঘণ্টার মধ্যে মারা যাচ্ছে। কিছু কিছু ফার্মের মুরগী প্রথমে ঝিমাচ্ছে, খাবার খাচ্ছে না। এসব মুরগী সাদা ও রক্তমাখা পাতলা মল ত্যাগ করে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টার মধ্যে মারা যাচ্ছে। ফার্ম মালিকদের ধারণা, বার্ড ফ্লুর মতো কোন রোগে আক্রান্ত হয়ে এসব মুরগী মারা যাচ্ছে। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, রোগাক্রান্ত এসব মুরগী প্রতিটি ৫০ টাকা দরে গ্রামের লোকজনের কাছে বিক্রি করছে খামারিরা। এ কারণে মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে- এমন আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এছাড়া কিছু ফার্মের মালিক মরা মুরগী মাটিচাপা না দিয়ে বিভিন্ন স্থানে উন্মুক্তভাবে ফেলে রাখছে। যার ফলে গৃহপালিত ছাড়াও বিভিন্ন পশু-পাখি এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। 

এ ব্যাপারে কয়েকটি পোল্ট্রি ফার্ম মালিকদের সাথে কথা বললে তারা জানায়, ফার্মের মালিকদের অবহেলা ও সময়মত ভ্যাকসিন না দেয়ায় এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারে। নিয়মিত ভ্যাকসিন না দিলে আবহাওয়া পরিবর্তনের এ সময়ে ঠান্ডা-গরম এবং ধূলোবালিতে আক্রান্ত হয়ে মুরগীর মধ্যে সিআরডি, সিসিআরডি এবং রাণীক্ষেত রোগের সংক্রমণ ঘটে। হয়ত এসব ফার্মের মুরগীর বেলায় তাই ঘটেছে। 

ভেটেরিনারি চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ তারেক জানান, তিনি কয়েকটি মুরগী দেখেছেন। এতে তার মনে হয়েছে বার্ড ফ্লু নয়, এসব মুরগী অবহেলার কারণে রাণীক্ষেত রোগে আক্রান্ত হয়েছে। ভ্যাকসিন দেয়া না হলে এবং রক্ষণাবেক্ষণ যথাযথ নিয়মে না হলে এই আবহাওয়ায় এমন রোগের প্রকোপে আক্রান্ত হতে পারে।
পানি প্রবাহের পথ বন্ধ করে খালে ব্রীজ নির্মাণ, ক্ষতির আশঙ্কায় কয়েকশ একর বোরো ফসল; পটিয়া; ইউনিয়ন; খাল; বড়লিয়া;  চাষাবাদ; বোরো; ধান; কৃষক; বাম্পার ফলন; চট্টগ্রাম; Patiya; Chittagong; Chattogram
পানি প্রবাহের পথ বন্ধ করে খালে ব্রীজ নির্মাণ, ক্ষতির আশঙ্কায় কয়েকশ একর বোরো ফসল

ভয়েস অব পটিয়া-নিউজ ডেস্কঃ পটিয়া উপজেলার বড়লিয়া ইউনিয়নে জোয়ার-ভাটার খালে বাঁধ দিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ করে ব্রীজ নির্মাণকে কেন্দ্র করে উদ্বিগ্ন কৃষকরা। ক্ষতির আশঙ্কায় কয়েকশ একর বোরো ফসল। 
উপজেলার বড়লিয়া ইউনিয়নের ওকন্যরা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা বদিউজ্জামানের বাড়ির পাশে কাটাখালী খালে একটি ব্রীজ নির্মাণকে কেন্দ্র করে খালের উপর বাঁধ স্থাপনের মাধ্যমে পানি প্রবাহ বন্ধ করার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেন কৃষকরা। সেচের পানি চলাচলের কোন ব্যবস্থা না রেখে ব্রীজ নির্মাণের জন্য বাঁধ দেয়া হলে কয়েকশ একর জমিতে রোপিত বোরো ফসলে সেচ কার্যক্রম বিঘ্নিত হবে আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। এর ফলে চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলার বড়লিয়া, কর্তালা, পূর্ব বাড়ৈকারা, পশ্চিম বাড়ৈকারা, বেলখাইন, ওকন্যরা সহ আশপাশের এলাকায় বোরো চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। 

ইতোমধ্যে বিষয়টি পটিয়া উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা কৃষি অফিসের মাঠ কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে বলে জানায় কৃষকরা। খালের পানি প্রবাহ বন্ধ করে বাঁধ নির্মাণ হলে কৃষকদের চাষকৃত বোরো ফসল নষ্টের আশঙ্কা। জোয়ার-ভাটার খালের পানি আটকে রাখার চেষ্টার ঘটনায় শুক্রবার সকালে এলাকার কৃষকরা বিক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। 

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) অধীনে বড়লিয়া ইউনিয়নের ওকন্যরা গ্রামে কাটাখালী খালের উপর একটি ব্রীজ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। নির্মানাধীন ব্রীজের উত্তর ও দক্ষিণ দিকে রয়েছে শত শত একর ফসলি জমি। ব্রীজ নির্মাণের জন্য উক্ত খালে বাঁধ স্থাপনের ফলে খালের পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাবে। যার ফলে ওই এলাকার পানি সেচের জন্য স্থাপিত প্রায় ১২টি স্কীম বন্ধ হয়ে বোরো চাষাবাদ বিঘ্ন সৃষ্টি হবে। 

এ ব্যাপারে কৃষকদের সাথে কথা বললে তারা জানান, কাটাখালী খালটি চানখালী কেরিঞ্জা খালের সঙ্গে যুক্ত। জোয়ার-ভাটার এই খালের পানি দিয়ে অত্র এলাকার কৃষকরা ইরি, বোরো মওসুমে চাষাবাদ করে থাকেন। ব্রীজ নির্মাণে নিয়োজিত ঠিকাদার খালের পানি প্রবাহ বন্ধ করে কৃষকের বোরো চাষাবাদে ক্ষতি করার চেষ্টা করছে। এ ব্যাপারে কৃষক মোঃ আবু হাজী, জাহাঙ্গীর আলম, আবদুস ছত্তার ও স্কীম ম্যানেজার মো. রফিক পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তাদের অভিযোগ, ব্রীজ নির্মাণের ঠিকাদার খালের পানি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে নিজের ইচ্ছেমত কাজ করার অপচেষ্টা করছে। খালের পানি প্রবাহ বন্ধ করে দিলে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

পটিয়া উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা (পিআইও) আবুল হোসেন বলেন, কৃষকের ক্ষতি হয় এমন কোন কাজ ঠিকাদারকে করতে দেওয়া হবে না। জনগণের জন্য ব্রীজ নির্মাণ করাও জরুরী। খালের পানি নিয়ে কৃষক যাতে বোরো চাষাবাদ করতে পারেন সে ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, কৃষকদের নিয়ে বৈঠক করে বিষয়টির সমাধান করবেন বলে তিনি জানান। 

এ বিষয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকার কৃষকেরা স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী’র সাথে সাক্ষাত করে তার জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন। তিনি বিষয়টি তদারকি করে দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস প্রদান করেন বলে সূত্র জানায়।
পটিয়ায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশে বর্জ্য-পৌর কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনায় দূর্ভোগ চরমে; পটিয়া; চট্টগ্রাম; Patiya; Chittagong; Chattogram; বিসিক; bscic
পটিয়ায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশে বর্জ্য-পৌর কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনায় দূর্ভোগ চরমে

ভয়েস অব পটিয়া-নিউজ ডেস্কঃ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়া বিসিক শিল্প নগরী সংলগ্ন অংশে দীর্ঘদিন যাবত পৌরসভা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক স্তুপকৃত বর্জ্য যথাযথভাবে ডাম্পিং না করে উন্মুক্ত স্থানটিতে স্তুপ করে রাখার কারণে দূর্গন্ধে এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। এতে করে নিদারুণ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় ও দূরপাল্লার বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রীসহ মহাসড়কের পাশ দিয়ে চলাচলরত পথচারীদের। 

স্থানীয় লোকজন ও যাত্রী সাধারণ এ দুর্ভোগ থেকে রেহাই পেতে পৌর কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানিয়েছেন। তারা বর্জ্য উন্মুক্ত স্থানে না রেখে শহরাঞ্চল থেকে দূরবর্তী স্থানে এ ধরণের বর্জ্য অপসারণের আহবান জানান। 

পটিয়া পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কামাল উদ্দিন বেলাল ভয়েস অব পটিয়া’কে বলেন, ‘পৌরসভা কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা ও পৌর মেয়রের খামখেয়ালীর কারণে মহাসড়কের পাশে পশুর বর্জ্য স্তুপ করা হয়েছে। এসব বর্জ্যে পুরো এলাকাজুড়ে বিরক্তিকর দুর্গন্ধ প্রতিদিন মানুষকে বিষিয়ে তুলছে।’

সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়া পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের বিসিক শিল্প এলাকার সামনে দীর্ঘদিন ধরে পটিয়া পৌরসভা কর্তৃপক্ষ বর্জ্য ফেলে আসছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত কোরবানীর পশুর বর্জ্য-আবর্জনা একই স্থানে রাখা হয়েছে। এ কারণে দুর্গন্ধের মাত্রা আরো বেড়েছে। এতে এসব ময়লা-আবর্জনার দূর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে বিসিক শিল্পনগরীর লোকজন, ব্যবসায়ী, কর্মচারী, শ্রমিক, শিক্ষার্থী ও মহাসড়কে যাতায়াতকারী যানবাহনের প্রতিদিনকার সহস্রাধিক যাত্রী। কোরবানীর দিন বিকেলে পৌরসভার বর্জ্যবাহী গাড়ি বর্জ্য তুলে নিয়ে মহাসড়কের বিসিক শিল্প এলাকার সন্নিকটে ফেলে। স্তুপকৃত বর্জ্যে দুর্গন্ধ প্রতিরোধে কোন ধরনের রাসায়নিক পদার্থ/কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় গত তিন দিন ধরে চারিদিকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। 

তাছাড়া পটিয়া পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের সর্দারপাড়া কবরস্থানের পাশে চলাচল রাস্তার উপর বর্জ্য, ৩ নং ওয়ার্ডের আবদুর রহমান সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে হাড্ডি সুলতানের ভাঙ্গারী মালের গুদামে স্তুপ করা হয়েছে পশুর হাড়গোড়। ফলে এসব এলাকাতেও দূর্গন্ধে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা দুর্গন্ধে যাতায়াতে বেকায়দায় পড়ছে। 

পৌরসভার ৯ টি ওয়ার্ডের চলাচল রাস্তার বিভিন্ন স্থানে এখনো পড়ে রয়েছে কোরবানীর পশুর বর্জ্য। যার ফলে পুরো পটিয়া পৌরসভার আকাশ বাতাস বর্জ্যের দুর্গন্ধে ভারী হয়ে উঠেছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পটিয়া পৌরসভার মেয়র হারুনুর রশিদ ভয়েস অব পটিয়া’কে জানান, ‘পৌরসভার বর্জ্য অপসারণ ও মজুতের জন্য অনেকবছর যাবত বিসিকের সামনে এ এলাকাটি নির্ধারিত ছিল। তারই ধারাবাহিকতায় প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও একই স্থানে বর্জ্য রাখা হয়েছে। দুর্গন্ধরোধে পৌরসভার পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ঔষধ ছিটিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’ 

পটিয়া পৌরসভার সচিব মোহাম্মদ মহসিন জানান, ‘পৌরসভার বর্জ্য অপসারণের নির্ধারিত কোন জায়গা না থাকায় বিসিক শিল্প এলাকার সামনে অস্থায়ীভাবে মজুদ করা হচ্ছে। বর্জ্য প্রক্রিয়াজাত করার জন্য ইন্দ্রপুল এলাকায় জনবসতি স্থাপনার অদূরে একটি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। প্রকল্পটি এখনো মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
কর্ণফুলী নদীর উপর নির্মিত হচ্ছে নতুন সেতু-ট্রান্সএশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কে পটিয়াসহ দক্ষিণ চট্টগ্রাম; পটিয়া; চট্টগ্রাম; Patiya; Chittagong; Chattogram
কর্ণফুলী নদীর উপর নির্মিত হচ্ছে নতুন সেতু-ট্রান্সএশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কে পটিয়াসহ দক্ষিণ চট্টগ্রাম

ভয়েস অব পটিয়া-বিশেষ প্রতিনিধি দেশের প্রথম টানেলের পর এবার চট্টগ্রামের কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদীর ওপর রেল ও সড়ক সেতু তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

এটি ভবিষ্যতে চীন, ভারত, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে সংযুক্ত করে ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কের অংশবিশেষ হিসেবে কাজ করবে। 

এটি নির্মাণে ব্যয় হবে ১ হাজার ১৬৪ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৩৮১ কোটি ১৭ লাখ এবং কোরিয়ার ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন ফান্ডের (ইডিসিএফ) ঋণ থেকে ৭৮৩ কোটি ৮১ লাখ টাকা ব্যয় করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। 
এ রোড ও রেল সেতু নির্মাণের মাধ্যমে জোড়াবিহীন রেল পরিবহন সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার করিডোরের অপারেশনাল বাধা দূর হবে। সেই সঙ্গে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের জন্য বৃহৎ করিডোর তৈরি করা যাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। 

পরিকল্পনা কমিশনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (আরএডিপি) বৈদেশিক সহায়তা প্রাপ্তির সুবিধার্থে বরাদ্দহীন অননুমোদিত প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে এটি। ‘কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদীর ওপর একটি রেল কাম রোড সেতু নির্মাণ’ নামের নতুন এ প্রকল্পটির প্রস্তাব করে রেলপথ মন্ত্রণালয়। অনুমোদন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হবে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। 
এতে সভাপতিত্ব করবেন পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য জুয়েনা আজিজ। সভায় প্রকল্পের প্রস্তাবিত বিভিন্ন অংশের ব্যয়সহ নানা বিষয় আলোচনা হবে। 

সব প্রক্রিয়া শেষে প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২৩ সালের আগস্টের মধ্যে বাস্তবায়নের কাজ শেষ করবে বাংলাদেশ রেলওয়ে। 

পিইসি সভার জন্য তৈরি কার্যপত্রে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর এবং রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল থাকায় জেলাটি জাতীয় শিল্প উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু। শহরটি কর্ণফুলী নদীর তীরে অবস্থিত। কক্সবাজারসহ চট্টগ্রামের দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য কর্ণফুলী নদীর ওপর দুটি সেতু (একটি সড়ক সেতু ও একটি পুরনো দুর্বল রেল সেতু) বিদ্যমান রয়েছে। এ রেল সেতুটি কালুরঘাটে অবস্থিত। মিটারগেজ লাইনে সেতুটি ১৯৩১ সালে নির্মাণ করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে ১৯৬২ সালে এর সঙ্গে সড়ক সেতু যুক্ত করে রেল কাম সড়ক সেতুতে রূপান্তর করা হয়। বর্তমানে সেতুটি জরাজীর্ণ ও সংস্কার অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এর কার্যক্ষমতাও কমেছে। সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেনগুলো ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার গতিতে চলাচল করতে পারে এবং যানবাহন ২০ মিনিট পরপর সেটি অতিক্রম করে। তাছাড়া ট্রেন চলার সময় সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। ফলে সেতুর উভয় পাশে ব্যাপক যানজট লেগে যায়। এ অবস্থায় বিদ্যমান সেতুটির পরিবর্তে নতুন রেল ও সড়ক সেতু নির্মাণ অনিবার্য হয়ে পড়েছে। 
এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১২ সালে অস্ট্রেলিয়ার এসএমইসি, তাইওয়ানের উয়িকন কোম্পানি এবং বাংলাদেশের এসিই কনসালটেন্ট ও ইঞ্জিনিয়ারিং কনসোর্টিয়াম যৌথভাবে সম্ভাব্যতা যাচাই করে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্র জানায়, এ সেতুটি বাস্তবায়নে সরকারের পক্ষ থেকে কোরিয়া সরকারের কাছে আর্থিক সহায়তা চাওয়া হয়। 

এ সময় কোরিয়ান কোম্পানি এসএমইসি’র সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের ভিত্তিতে ২০১৬ সালে এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অব কোরিয়া (কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংক) চূড়ান্ত সম্ভাব্যতা যাচাই করে এবং প্রকল্পের অ্যাপ্রেইজাল সম্পন্ন করার জন্য কোরিয়া ২০১৭ সালে একটি অ্যাপ্রেইজাল মিশন পাঠায়। মিশনটি গত বছরের ২৭ এপ্রিল ইআরডির সঙ্গে বৈঠক করে। ওই সভায় সরকার ও ইডিসিএফের মধ্যে মিউনিটস অব ডিসকাশন সই হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে।
পটিয়ার ইউএনওসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলাঃ কাগজপত্র না দেখে সার জব্দের অভিযোগ; পটিয়া; চট্টগ্রাম; Patiya; Chittagong; Chattogram
পটিয়ার ইউএনওসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলাঃ কাগজপত্র না দেখে সার জব্দের অভিযোগ

ভয়েস অব পটিয়া-হোসাইন আমিরীঃ কাগজপত্র যাচাই বাছাই ছাড়া টিএসপি সার জব্দ করার অভিযোগে পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাসেলুল কাদেরসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার বিবাদী অন্যরা হলেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আ.জ.ম মঈনউদ্দিন ও পটিয়া থানার ওসি শেখ মোঃ নেয়ামত উল্লাহ।

মঙ্গলবার পটিয়া যুগ্ম জেলা জজ আদালতে মামলাটি দায়ের করেন মেসার্স আমানত ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মোঃ ইউনুচ তালুকদার। মামলা নং-৬৪।

মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ৪ মার্চ ব্যবসায়ী ইউনুচের সাড়ে ৭ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি সার জব্দ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এ ঘটনায় দারোয়ান আবু বক্করকে আটক করা হয়। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। জব্দকৃত কোটি টাকার এসব সার ধ্বংস করতে গত ৬ মার্চ ফায়ার সার্ভিস, সড়ক ও জনপথ বিভাগ, পরিবেশ অধিদপ্তর ও থানা পুলিশকে পৃথক পৃথকভাবে চিঠি প্রদান করেন।

মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, বহিনোঙ্গরে ‘এম.ভি মাইমেরি মাদার ভেসেল’ নামের একটি সার বোঝাই জাহাজ শুল্ক পরিশোধের পর খালাসের অপেক্ষায় ছিল। ২০১৭ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর অন্য একটি জাহাজের ধাক্কায় সার বোঝাই জাহাজের একটি অংশ ফুটো হয়ে যায়। ওই সময় পানির আর্দ্রতায় ৭ হাজার ৪শ মেট্রিক টন টিএসপি সার নষ্ট হয়ে যায়। বন্দরের পরিবেশ ও নদীর পানি দূষিত হওয়ার সম্ভাবনায় শিপিং এজেন্ট এইচ.সি মেরিন লিমিটেড নষ্ট হওয়া সার সরিয়ে নিয়ে মেসার্স আমানত ট্রেডার্সকে কর্ণফুলী নদীর যে কোন সুবিধাজনক স্থানে রাখার জন্য একটি ওয়ার্ক অর্ডার প্রদান করে। এর প্রেক্ষিতে ইউনুচ তালুকদার নষ্ট টিএসপি সার কর্ণফুলী নদীর শাখা খাল ভেল্লাপাড়া খালের পাড়ে এনে মজুদ করেন। এসব টিএসপি সারের গুনগতমান কমে যাওয়ায় তা খামার বাড়ি মাছের ঘের ও চা বাগানে দেওয়ার জন্য প্রক্রিয়া শুরু করেন তিনি। ওইসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাসেলুল কাদের ঘটনাস্থলে গিয়ে ঐসব টিএসপি সার জব্দ করেন।

ব্যবসায়ী ইউনুচ তালুকদার অভিযোগ করেছেন, ‘উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে তার কোটি টাকা মূল্যের সার অবৈধভাবে জব্দ করে হয়রানি শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে তিনি ওই সার ধ্বংস করতে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, সড়ক জনপথ বিভাগ ও পরিবেশ অধিদপ্তরকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন। কিন্তু বৈধ কাগজপত্র থাকার ফলে ওই সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস কাজে এগিয়ে আসেনি। ইউএনও সম্পূর্ণ নিজ ইচ্ছায় এসব সার ধ্বংস করার পাঁয়তারা করছেন বলে অভিযোগ ব্যবসায়ী ইউনুচের।’

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাসেলুল কাদের ভয়েস অব পটিয়া’কে বলেন, ‘নষ্ট টিএসপি সার বাজারজাত করার খবর পেয়ে অভিযান চালানো হয়েছে। জব্দকৃত সাড়ে ৭ হাজার মেট্রিক টন সার এখনো খোলা পড়ে রয়েছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হয়েছে। সারগুলো ধ্বংস করতে ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তাদের কাছ থেকে সহযোগীতা পেলেই নষ্ট এসব সার ধ্বংস করা হবে।’

এ ব্যাপারে মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবি পটিয়া যুগ্ম জেলা জজ আদালতের এডভোকেট কাজী জসিম উদ্দীন বলেন, তার মক্কেলের কোটি টাকার টিএসপি সার ধ্বংসের নামে হয়রানির অভিযোগে এই মামলা করা হয়েছে। বিচারক শুনানি শেষে ইউএনওসহ তিনজনকে আদালতে স্বশরীরে হাজির থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
পটিয়া খরনা ইউনিয়ন সড়কের বেহালদশা-দুর্ভোগে সাধারণ জনগণ; পটিয়া; চট্টগ্রাম; Patiya; Chittagong; Chattogram
পটিয়া খরনা ইউনিয়ন সড়কের বেহালদশা-দুর্ভোগে সাধারণ জনগণ

ভয়েস অব পটিয়া-নিউজ ডেস্কঃ পটিয়া উপজেলার খরনা ইউনিয়ন পরিষদ সড়কের কার্পেটিং উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে যানবাহন ও সাধারণ জনগণকে চলাফেরা করতে গিয়ে দুর্ভোগের সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

জানা যায়, পটিয়া উপজেলার অন্তর্গত খরনা ইউনিয়ন পরিষদ সড়ক দিয়ে তৎকালীন ইংরেজরা পটিয়া চা বাগানে যাতায়াত করত। বর্তমানে চা বাগানটি বিলুপ্ত। চা বাগানের কারণে পটিয়া খরনা ইউনিয়ন পরিষদ সড়কটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এ সড়কের সাথে লালারখীল, ফকিরপাড়া, মাঝিরপাড়া, কইস্যাপাড়া, ওয়াহিদুরপাড়া গ্রামের সাথে প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যোগাযোগ রয়েছে। মুজাফফরাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়, মুজাফরাবাদ কলেজ, দক্ষিণ খরনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এ সড়ক দিয়ে চলাচল করে। 

পটিয়ার ১৭ ইউনিয়নের মধ্যে সিংহভাগ শাক-সবজি খরনার বিভিন্ন গ্রাম হতে উৎপন্ন হয়। এখানে উৎপাদিত শাক-সবজি এ সড়ক দিয়ে পরিবহন করা হয়। খরনা ইউনিয়ন পরিষদ ও খরনা ভূমি অফিসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পেশার লোকের যাতায়তের একমাত্র পথ এ সড়ক।

এ সড়কের গুরুত্ব বিবেচনা করে ১৯৯২ সালে তৎকালীন বিএনপি সরকারের সংসদ সদস্য মরহুম শাহ নেওয়াজ চৌধুরী মন্টু খরনা ইউপি সড়কটিতে কার্পেটিং এর ব্যবস্থা করেন। ১৯৯৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে এ সড়কের আরো কিছু অংশ বৃদ্ধি করে কার্পেটিং সহ সড়কের সংস্কার কাজ করা হয়। 
২০০৫ সালে বিএনপি সরকারের আমলে সড়কটিতে পুনরায় কার্পেটিং কাজে সংস্কার করা হয়। কিন্তু বিগত ১৪ বছর ধরে এই সড়কের আর কোন সংস্কার কাজ না করায় সড়কের কার্পেটিং উঠে যাওয়ায় সড়কটি প্রায় চলাচলের অযোগ্য। দু’পাশে রাস্তার মাটি সরে গিয়ে  চল বর্ষা মৌসুমে এ দুর্ভোগ আরো চরম পর্যায়ে পৌঁছবে বলে এলাকার লোকজনের ধারণা। 

এ ব্যাপারে খরনা ইউপি চেয়ারম্যান মাহাবুবুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ভয়েস অব পটিয়া’কে বলেন, ‘সড়কটির বিষয়ে পটিয়ার সাংসদ সামশুল হক চৌধুরীকে  অবগত করা হয়েছে। আগামী বাজেটে বরাদ্দ পেলে সড়কটির সংস্কারের কাজ করা হবে।’
চট্টগ্রামে এলএনজি এপ্রিলেইঃ যুক্ত হচ্ছে পটিয়ার শিল্পকারখানাতেও; পটিয়া; চট্টগ্রাম; মহেশখালী, কক্সবাজার, Patiya; Chittagong; Chattogram; Moheskhali, Coxsbazar
চট্টগ্রামে এলএনজি এপ্রিলেইঃ যুক্ত হচ্ছে পটিয়ার শিল্পকারখানাতেও

ভয়েস অব পটিয়া-নিউজ ডেস্কঃ আগামী ২৫ এপ্রিল নগরীতে প্রবেশ করছে এলএনজি (Liquefied Natural Gas বা তরলায়িত প্রাকৃতিক গ্যাস)। এতে বিগত এক দশকের বেশি সময় ধরে গ্যাস সমস্যায় ধুঁকতে থাকা অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে যাচ্ছে চট্টগ্রামবাসী। 
গ্যাসের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে শিল্প কারখানায় ও আবাসিকে সংযোগ বন্ধ থাকায় পিছিয়ে রয়েছে চট্টগ্রাম। এলএনজি গ্যাস আসার সাথে সাথে সবার আগে গ্যাস সংযোগ পাবে শিল্প ও অ্যাকটিভ পাওয়ার প্ল্যান্ট। ইতিমধ্যে এ দুই খাতে গ্যাস সংযোগের ডিমান্ড নোটও দেয়া হয়েছে।

এলএনজি আলাদা কোন জ্বালানি নয়, আদতে এটি প্রাকৃতিক গ্যাসেরই তরল রূপ। প্রাকৃতিক গ্যাস সাধারণ চাপ ও তাপমাত্রায় গ্যাসীয় অবস্থায় থাকে। শীতলীকরণ প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রাকৃতিক গ্যাসের তাপমাত্রা কমিয়ে -১৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামিয়ে আনলে গ্যাস তরলে পরিণত হয়। এই তরল প্রাকৃতিক গ্যাসকেই এলএনজি বলা হয়। পরিবহনের সুবিধার্থে এক বায়ুমণ্ডলীয় চাপে এলএনজি তৈরি করা হয়। এলএনজির প্রধান উপাদান হচ্ছে মিথেন। প্রাকৃতিক গ্যাসকে এলএনজিতে রূপান্তরিত করার সময় মিথেন বাদে অন্যান্য অনাকাঙ্ক্ষিত উপাদান যেমন ধূলিকণা, এসিড, হিলিয়াম, পানি, অপেক্ষাকৃত ভারী হাইড্রোকার্বন, নাইট্রোজেন ইত্যাদি দূর করা হয়; যার ফলে অন্য অনেক জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে এলএনজি ব্যবহারে দূষণ কম হয়।

তবে এলএনজি এলেও এর দাম কতো হবে তা নিয়ে বৃহত্তর চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের মধ্যে এক ধরনের শঙ্কা রয়েছে। এলএনজি আসার আগে থেকেই বলা হচ্ছে এ গ্যাসের দাম বেশি পড়বে। আর চট্টগ্রামে এর সংযোগ দেয়া হবে বলে এখানকার শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়তে পারে। 
এ বিষয়ে চিটাগাং চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম বলেন, ‘এলএনজি আসবে ভাল কথা, কিন্তু এর মূল্য কি হবে? চট্টগ্রামের জন্য এক রেট এবং বাইরের এলাকার জন্য আরেক রেট হলে হবে না। সারাদেশের জন্য একই রেট হতে হবে। অন্যথায় শিল্পপণ্য উৎপাদনে পিছিয়ে পড়বে চট্টগ্রামের শিল্প মালিকরা।’

ব্যবসায়ীদের উদ্বেগের বিষয়ে কথা হয় কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) প্রকৌশলী মনজুরুল হকের সাথে, তিনি বলেন, ‘আমাদের অভ্যন্তরীণ প্রাকৃতিক গ্যাস ও মহেশখালী দিয়ে আসা এলএনজি দুটো একসাথে মিলিত হয়ে পাইপ লাইনে সরবরাহ করা হবে। তাই সারাদেশে গ্যাসের দরের ক্ষেত্রে কোনো তারতম্য হবে না। চট্টগ্রামে যে দর হবে, অন্যান্য এলাকায়ও একই দর হবে।’
কতো দর হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আপাতত শিল্প ও ক্যাপটিভ পাওয়ারে প্রতি ঘনমিটারে ১৪ টাকা ৯০ পয়সা হতে যাচ্ছে। আর এই দর সারা দেশের শিল্প ও ক্যাপটিভ পাওয়ারের ক্ষেত্রে একই হবে।’

উল্লেখ্য, বর্তমানে শিল্প ও ক্যাপটিভ পাওয়ারে প্রতি ঘনমিটার গ্যাস গ্রাহকের কাছে বিক্রি হচ্ছে যথাক্রমে ৭ টাকা ৪২ পয়সা ও ৭ টাকা ৪৬ পয়সা দরে। তবে আবাসিক বা অন্য খাতগুলোতে আগামীতে কি দর হবে তা নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে কর্ণফুলী গ্যাসের রাজস্ব বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান।

আগামী ২৫ এপ্রিল থেকে এলএনজি প্রবেশ করলেও তা নিয়ে কর্ণফুলী গ্যাসের কি পরিকল্পনা সম্পর্কে উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, ‘১৫০ কোটি টাকায় চট্টগ্রাম মহানগরীর বিদ্যমান গ্যাসের মেইন চাপের পাইপলাইনগুলো সংস্কার করা হচ্ছে। একইসাথে পটিয়ার শিকলবাহা ও কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড় এলাকার শিল্প কারখানাগুলোতে গ্যাস সরবরাহ করতে ১৬ ইঞ্চি ব্যাসের একটি নতুন পাইপ লাইন বসানো হচ্ছে। এর মাধ্যমে ওই এলাকায় দিনে ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা যাবে।’

বর্তমানে চট্টগ্রামে দিনে সরবরাহ করা হচ্ছে ২০৭ থেকে ২০৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। এর মধ্যে খাগড়াছড়ির সেমুতাং থেকে প্রায় দুই মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের বাইরে পুরো গ্যাসই আসে জাতীয় গ্রিড থেকে। এখন মহেশখালীতে স্থাপন করা এফএসআরইউ (ফ্লোটিং স্টোরেজ এন্ড রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিট) থেকে দিনে আসবে ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস।
তখন গ্যাসের সমন্বয় কিভাবে করা হবে সে সম্পর্কে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) প্রকৌশলী মনজুরুল হক বলেন, ‘তখন আমরা জাতীয় গ্রীড থেকে গ্যাস নিবো না। আর আমাদের এখানে উদ্বৃত্ত থাকলে তা জাতীয় গ্রীডে সরবরাহ করা হবে। এছাড়া ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের পুরোটা আমরা একসাথে নগরীর পাইপ লাইনে যুক্ত করবো না, পর্যায়ক্রমে ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট করে বাড়ানো হবে। তবে এতটুকু বলা যায় ২৫ এপ্রিল এলএনজি প্রবেশের সাথে সাথে নগরীতে গ্যাসের যে সঙ্কট আছে তা আর থাকবে না।’

এর আগে গত ৭ জানুয়ারি বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ মহেশখালীর মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে উপস্থিত সংবাদকর্মীদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘আগামী এপ্রিলে চালু হচ্ছে এলএনজি গ্যাস।’

উল্লেখ্য, দেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ কমে যাওয়ায় এলএনজি ছাড়া গ্যাস সমস্যা সমাধানের কোনো অপশন নেই। আর এ জন্যই এলএনজি গ্যাস সরবরাহের লক্ষ্যে ২০১০ সালে নেয়া প্রকল্পের চুক্তি হয় ২০১৬ সালের মার্চে যুক্তরাষ্ট্রের এক্সিলারেট এনার্জি লিমিটেডের সাথে। সেই চুক্তির আলোকে মহেশখালীতে ভাসমান এফএসআরইউ (ফ্লোটিং স্টোরেজ এন্ড রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিট) ইউনিট স্থাপনের মাধ্যমে গ্যাস আসবে জাতীয় গ্রীডে।

গত বছর পাইপ লাইনের কাজ শেষ হওয়ার পর শুরু হওয়া এফএসআরইউ স্থাপনের কাজ শেষ হচ্ছে এপ্রিলে। আর তা শেষ হলেই জাতীয় গ্রীডে প্রতিদিন যুক্ত হবে ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। 
কাতার থেকে আমদানি করা তরল গ্যাসকে কক্সবাজারের মহেশখালীর সাগর উপকূল থেকে তিন কিলোমিটার দূরে সাগরবক্ষে ভাসমান এফএসআরইউ গ্রহণ করবে। সেখান থেকে সাগরের তলদেশ দিয়ে পাইপ লাইনের মাধ্যমে এলএনজি চলে আসবে স্থলভাগে। রূপান্তরিত গ্যাস ৩০ ইঞ্চি ব্যাসের পাইপ লাইনের মাধ্যমে মহেশখালী থেকে চট্টগ্রামের আনোয়ারা পর্যন্ত চলে আসবে। আনোয়ারা থেকে একটি সাবস্টেশনের মাধ্যমে গ্যাসের প্রেসারকে নিয়ন্ত্রণ করে নগরীতে প্রবেশ করবে এ গ্যাস।
শুকিয়ে যাচ্ছে নদী-নালাঃ পটিয়াসহ চট্টগ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকায় সেচ সংকটে কৃষকরা; পটিয়া; চট্টগ্রাম; Patiya; Chittagong; Chattogram; হালদা
শুকিয়ে যাচ্ছে নদী-নালাঃ পটিয়াসহ চট্টগ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকায় সেচ সংকটে কৃষকরা

ভয়েস অব পটিয়া-বিশেষ প্রতিনিধিঃ শীতের শুরু হতেই শুকিয়ে যাচ্ছে বর্ষায় টইটম্বুরে থাকা কর্ণফুলীর ৩টি শাখা খাল ও দুটি নদী। পানি শুকিয়ে বালুর চরে পরিণত হচ্ছে এসব খাল ও নদী। ফলে চট্টগ্রামের আবাদী বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ইরি-বোরো ও সবজি চাষাবাদে সেচ সংকট দেখা দিয়েছে। অনাবাদি হয়ে পড়ছে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী ও পটিয়া উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ডলুখাল, রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার মধ্যদিয়ে প্রবাহিত ইছামতি নদী; পদুয়া, শিলক ও সরফভাটা ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত শিলক খাল, ডং খাল; রাউজান ও হাটহাজারী উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হালদা নদী এলাকাধীন বিস্তীর্ণ ফসলি জমি। ধান ও সবজিসহ নানা ফসল উৎপাদনে এসব খাল ও নদী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে বলে জানিয়েছেন এতদঞ্চলের কৃষকরা। 

চট্টগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, শস্যভান্ডার খ্যাত গুমাইবিলসহ রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় প্রায় ১৭ হাজার ৩০০ হেক্টর জমি ধান ও পাঁচ হাজার হেক্টর সবজি আবাদযোগ্য জমি রয়েছে। রাউজান উপজেলায় রয়েছে ১৪ হাজার ১০০ হেক্টর ধান ও ৩ হাজার ৩০০ হেক্টর সবজি, বোয়ালখালী উপজেলায় ৯ হাজার ৩০০ হেক্টর ধান ও ২ হাজার ৭০০ হেক্টর সবজি আবাদযোগ্য জমি। যা সম্পূর্ণ এসব খাল ও নদীর পানি সেচের ওপর নির্ভরশীল। এছাড়া হাটহাজারী উপজেলার একাংশের প্রায় ২ হাজার ১০০ হেক্টর ধান, ৬০০ হেক্টর সবজি, পটিয়া উপজেলার একাংশের ১ হাজার ৯০০ হেক্টর ধান, ৭০০ হেক্টর সবজি আবাদযোগ্য জমিও এসব খাল ও নদীর পানি সেচের আওতায় রয়েছে। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে এসব জমিতে চাষাবাদ হলেও শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে অর্ধেক জমিতেও ইরি-বোরো ও সবজি চাষাবাদ হয় না। 

স্থানীয় কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে রাঙ্গুুনিয়ায় ৮ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ও দেড় হাজার হেক্টর জমিতে সবজি চাষাবাদ, রাউজান উপজেলায় ৬ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ও ৯০০ হেক্টর জমিতে সবজি, বোয়ালখালী উপজেলায় ৩ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ও ৭০০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। হাটহাজারী উপজেলার দক্ষিণাংশে এক হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ও ৪০০ হেক্টর জমিতে সবজি, পটিয়া উপজেলার উত্তর-পূর্বাংশে ৮০০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ও ৩৫০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। 

পানি সেচ সুবিধা থাকলে আবাদযোগ্য সব জমিতে ইরি-বোরো ও সবজি চাষাবাদ করতে পারত কৃষকরা। এতে জড়িত প্রায় ৩০ হাজার কৃষকের ভাগ্য বদলে যেত। ঘুরে যেত জেলার অর্থনীতির চাকা। 

কৃষকরা জানান, ভারতের আসাম ও ত্রিপুরা রাজ্য থেকে হালদা ও ইছামতি নদীর উৎপত্তি। শিলক খাল, ডং ভাল ও ডলু খালের উৎপত্তি বান্দরবান জেলা থেকে। ফলে প্রতিবছর বর্ষায় উজান থেকে নেমে আসা পলিতে এসব খাল ও নদী ক্রমশ ভরাট হতে থাকে। হ্রাস পেতে থাকে পানির গভীরতা। ফলে বর্ষায় এসব খাল ডুবে উপচে পড়ে জনপদে। আর শীতে শুকিয়ে প্রায় মৃত হয়ে পড়ে। এতে দেখা দেয় সেচ সংকট। ব্যাহত হয় ধান ও সবজি চাষাবাদ। গত দুই দশক ধরে চলছে এ অবস্থা। চলতি মৌসুমেও শীত শুরু হতে না হতে কর্ণফুলীর এসব শাখা খাল ও নদী শুকিয়ে বালুরচরে পরিণত হচ্ছে। চরের কারনে এসব নদীতে একটি নৌকাও চলাচল করতে পারছে না। সবকটি খাল ও নদী পায়ে হেঁটে পার হচ্ছেন স্থানীয় লোকজন। 
স্থানীয়রা জানান, এসব খাল ও নদীতে বর্ষা মৌসুমে প্রায় ৩-৪ ফুট পানি থাকে। জোয়ার-ভাটায় কর্ণফুলী নদী থেকে এসব খাল ও নদীতে পানি প্রবেশ করে। কিন্তু শুষ্ক মৌসুমে স্বাভাবিকের চেয়ে কর্ণফুলী নদীর পানিও হ্রাস পাওয়ায় এসব খাল ও নদী শুকিয়ে যায়। ফলে খাল ও নদী তীরবর্তী পাঁচ উপজেলায় চাষাবাদে ব্যাপক সেচ সংকট দেখা দেয়। সেচের অভাবে অর্ধেক জমি অনাবাদি থেকে যায়।

বোয়ালখালী উপজেলার শাকপুরা ইউনিয়নের কৃষক আবদুর রশিদ (৪৩) জানান, ইউনিয়নের শাকপুরা চরে তার আড়াই একর জমি রয়েছে। যেখানে সারাবছর শুধু সবজি চাষ হত। কর্ণফুলী নদীর শাখা ডলু খালের পানিই ছিল চরের জমি চাষাবাদের মূল উৎস। কিন্তু গত ১০-১২ বছর ধরে শীত মৌসুমে ডলু খাল শুকিয়ে মরে যায়। তিনি বলেন, ১০-১২ বছর আগেও ডলু খালের গভীরতা ছিল প্রচুর। এ নদীতে তখন প্রচুর পরিমাণে দেশীয় প্রজাতির মাছও পাওয়া যেত। এ নদীর পানি দিয়ে শাকসবজি ও ধান চাষাবাদ করত চাষিরা। শাকপুরার চরসহ বোয়ালখালী উপজেলার সবকয়টি চরের জমিতে সবজি ও ধান চাষ করে স্বাবলম্বি হয়েছে অনেক কৃষক। 

রাউজান উপজেলার উত্তর ভুর্ষি এলাকার কৃষক আমিনুল ইসলাম (৫১) বলেন, কর্ণফুলীর শাখা হালদা নদীর পানি সেচ দিয়ে ভূর্ষি চরের সবজি চাষ করে সংসারের ব্যয়ভার নির্বাহ করতাম আমি। কিন্তু বর্তমানে নদীর উজানে পানি শুকিয়ে যাওয়ায় সেচ সুবিধা কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্যয়বহুল হয়ে পড়েছে ইরি-বোরো ধান ও সবজি চাষাবাদ। ফলে বিলের জমিতে অনেকে ধান ও সবজি চাষাবাদ করতে পারছেন না। 

রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার মুরাদনগর পৌর এলাকার ইছামতি চরের সবজি চাষি কফিল উদ্দিন (৩৮) জানান, চরে প্রায় সাড়ে ৩ শতাধিক চাষি সবজি ও অন্যান্য অর্থকরি ফসলের চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে। কিন্তু ইছামতি নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ায় চাষাবাদ করতে পারছে না। ফলে কৃষক পরিবারগুলো অভাব অনটনে দিন কাটাচ্ছে। 

রাঙ্গুনিয়া উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রমিজ উদ্দিন জানান, রাঙ্গুনিয়া পৌরসভা ও ৪টি ইউনিয়নের ৪টি চরের প্রায় ৪ হাজার একর জমির ফসল উৎপাদন ইছামতি নদীর পানি সেচের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু গত দুই দশক ধরে ইছামতি নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ায় চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। পানির অভাবে ৪টি চরের ১০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিপুল পরিমাণ ফসলি জমি অনুৎপাদনশীল হয়ে পড়েছে। 

পানি উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম বিভাগ-১ এর জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী বিদ্যুৎ কুমার সাহা এ প্রসঙ্গে বলেন, কর্ণফুলীর শাখা খাল ও নদীর পানির উপর গুমাই বিলসহ চট্টগ্রামের পাঁচ উপজেলার ধান ও সবজি চাষাবাদ নির্ভরশীল। কিন্তু এসব খাল ও নদী ভরাট হয়ে এখন মৃত প্রায়। হালদা নদীতেও পানির স্তর হ্রাস পাচ্ছে ক্রমশ। এ নদী রক্ষায় এখনই প্রয়োজনীয় উদ্যোগ না নিলে অদুর ভবিষ্যতে খাল ও নদী তীরবর্তি উপজেলার বিলগুলো মরুভুমিতে পরিণত হবে। 

চট্টগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, কর্ণফুলীর শাখা খাল ও নদীগুলো রক্ষার উদ্যোগ নেওয়া না হলে আগামী কয়েক দশকে তা হারিয়ে যাবে। ফলে পানির অভাবে পাঁচ উপজেলায় খাদ্যশস্য উৎপাদনে বিপর্যয় নেমে আসবে। দেখা দেবে খাদ্যভাব। এ ব্যাপারে বিভাগীয় পর্যায়ে একাধিকবার প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।
দক্ষিণ চট্টগ্রামে উৎপাদিত লেবুর সুখ্যাতি দেশজুড়ে; পটিয়া; চট্টগ্রাম; Patiya; Chittagong; Chattogram; চন্দনাইশ; সাতকানিয়া; লোহাগাড়া; আনোয়ারা; বোয়ালখালী; রাঙ্গুনিয়া; বাঁশখালী;
দক্ষিণ চট্টগ্রামে উৎপাদিত লেবুর সুখ্যাতি দেশজুড়ে

ভয়েস অব পটিয়া-নিউজ ডেস্কঃ দক্ষিণ চট্টগ্রামের লেবুর সুখ্যাতি সর্বত্র। চলিত বর্ষা মৌসুমে নির্দিষ্ট সময়ে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ায় লেবুর বাম্পার ফলন হয়েছে। লেবুর দাম ভালো থাকায় কৃষকেরাও মহাখুশি।

দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়া ও বোয়ালখালীর পাহাড়ী এলাকায় প্রতি বছর প্রচুর লেবুর চাষ হয়ে থাকে। রমজান, ঈদ ও আবহাওয়া গরম থাকার কারণে লেবুর দাম চড়া থাকায় কৃষকরা খরচ পুষিয়ে লাভের মুখ দেখছেন বলে জানিয়েছেন অনেক লেবু চাষী। জনপ্রিয় ও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ লেবু ফলটি দক্ষিণ চট্টগ্রামের ঐতিহ্যও বহন করে।

লেবু চাষীরা জানান, লেবু সাধারণত ৫ জাতের হয়ে থাকে। এগুলো হলো, কাগজী, পাতি, এলাচি, বাতাবি ও নতুন জাতের হাইব্রিড সিডলেস নামে একটি লেবু চাষও বর্তমানে হচ্ছে। উৎপাদিত লেবুগুলোর মধ্যে কাগজী লেবু ছোট আকৃতির হয়। বাণিজ্যিকভাবে লেবু উৎপাদন ও বিক্রি করে প্রতি বছরই লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করেন এ এলাকার লেবু চাষীরা।

বাণিজ্যিকভাবে লেবু উৎপাদন ও বিক্রয় করার কারণে এ পাহাড়ের গ্রামগুলোকে লেবু গ্রামও অনেকেই বলে থাকেন। পাহাড়ী ও সমতল উর্বরভূমি লেবু চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে লেবু চাষের প্রতি অনেকেই ঝুঁকে পড়েছেন। ফাল্গুন-চৈত্র মাসে লেবুর ফুল আসে এবং জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ়-শ্রাবণ মাস জুড়ে ফলন পাওয়া যায়।

চলতি বছর লেবুর ফলন ভাল হওয়ায় রমজান মাস ও ঈদের চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত লেবুর প্রয়োজনীয়তার ফলে গত বছরের তুলনায় ৫-৬ গুণ দাম বেশি পাচ্ছে লেবু চাষীরা। ফলে লেবু চাষীরা বেজায় খুশি। তারা জানান, প্রতিদিন প্রচুর লেবু বিক্রি হচ্ছে।

এখানকার উৎপাদিত লেবু চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা, চট্টগ্রাম শহর ও ঢাকার কয়েকটি বড় বড় বাজারে সরবরাহ করে থাকেন লেবু ব্যবসায়ীরা। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর কমল মুন্সীর হাট, খরনা রাস্তার মাথা, কেলিশহর দারগা হাট, বোয়ালখালীর কড়লডেঙ্গা-গোমদণ্ডী-ফুলতল সড়ক হয়ে ৪/৫ টি লেবু ভর্তি ট্রাক পিক-আপ লেবু নিয়ে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে চলে যাওয়ার দৃশ্য দেখা যায়।

লেবু চাষীদের অভিযোগ, পরিত্যক্ত পাহাড়ী ভূমি যদি লেবু চাষের আওতায় আনা হয় তাহলে উৎপাদিত লেবু দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিপুল পরিমাণে বিদেশেও রপ্তানী করা যেত। স্থানীয় লেবু চাষীরা আক্ষেপ করে বলেন, সবজি রাখার জন্য হিমাগার না থাকায় উৎপাদিত লেবু সহ বিভিন্ন ধরনের সবজি সংরক্ষণ করতে না পারার কারণে অনেক সময় কম দামে শাক-সবজি বিক্রি করতে হয়, এতে কৃষকদের মূলধন তুলতেই বেগ পেতে হয়।