"চট্টগ্রাম বন্দর" ক্যাটাগরীর সকল আর্টিকেল
চট্টগ্রাম বন্দর লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
উপকূলে আঘাত হানছে ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’; cyclone; sitrang
উপকূলে আঘাত হানছে ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’

ভয়েস অব পটিয়া-ন্যাশনাল ডেস্কঃ উপকূলে আঘাত হানছে ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’। সিত্রাং মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মনিটরিং সেল খোলা হয়েছে। 
মনিটরিং সেলের হটলাইন নাম্বার 01769010986, 0255029550, 0258153022
বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে শুরু করেছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। আজ সন্ধ্যা ছয়টা নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগ পটুয়াখালীর কলাপাড়া-খেপুপাড়া উপকূলে আছড়ে পড়তে শুরু করে। রাত আটটা নাগাদ ঝড়টির কেন্দ্র উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করতে পারে। এর প্রভাবে দেশের উপকূলীয় জেলাগুলোতে প্রচণ্ড ঝড়ো হাওয়া বইছে, হচ্ছে প্রচুর বৃষ্টিপাত। 

আবহাওয়া অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ছানাউল হক মন্ডল জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাবে উপকূলে এমনকি ঢাকায়ও দমকা বাতাস রেকর্ড হচ্ছে। ঝড়ের কেন্দ্র এখনও সাগরে। কক্সবাজারে ৭৪ কি.মি প্রতি ঘন্টা গতিবেগে ঝড়ো হাওয়া রেকর্ড হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সিত্রাং বড় আকারের ঘূর্ণিঝড়। ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাব অনেক বেশি হতে পারে। এ জন্য তারা তিনটি কারণের কথা বলছে। কারণ তিনটি হলো, ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ, অমাবস্যা তিথি ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্য। 
ঘূর্ণিঝড়টি উপকূল পার হওয়ার সময় চট্টগ্রাম, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, ঝালকাঠি, নোয়াখালী, ফেনীর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে স্বাভাবিক জোয়ার থেকে পাঁচ থেকে আট ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’, ৭ নং বিপদসংকেত; cyclone; sitrang
ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’, ৭ নং বিপদসংকেত

ভয়েস অব পটিয়া-ন্যাশনাল ডেস্কঃ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত ও চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ৬ নং বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেই সাথে উপকূলীয় এলাকায় ভারী ভর্ষণ ও জলোচ্ছ্বাসও হতে পারে। মঙ্গলবার ভোররাত বা সকাল নাগাদ বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে পারে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং।

এর আগে বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি আরও শক্তিশালী হয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ এ পরিণত হয়। সেই সময় সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৪ (চার) নং হুঁশিয়ারিং সংকেত দেখাতে বলা হয়। 

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং উপকূল থেকে কয়েকশ কিলোমিটার দূরে থাকলেও এর প্রভাবে উপকূলীয় জেলাগুলোতে চলছে তুমুল বৃষ্টি এবং ঝড়ো হাওয়া। দেশের উপকূলীয় সব জেলাতেই দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করছে। অস্বাভাবিক জোয়ারে নোয়াখালীর উপকূলীয় তিন উপজেলা হাতিয়া, সুবর্ণচর ও কোম্পানীগঞ্জে অন্তত ১০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ইতোমধ্যে আশ্রয়ণ কেন্দ্রে আসতে শুরু করেছে মানুষ। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দেশের বড় এলাকায় বৃষ্টি হচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকলীয় এলাকার ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা/ঝড়ো বাতাস বয়ে যেতে পারে, সেই সাথে ভারি (৪৪-৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতিভারি ৮৯ মিলিমিটারের বেশি) বর্ষণ হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।  

এদিকে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং আজ সন্ধ্যায় আঘাত হানবে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান। 
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং নিয়ে সোমবার (২৪ অক্টোবর) সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের তিনি একথা জানান। তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং সিভিয়ার সাইক্লোনে রূপান্তরিত হয়েছে। আবহাওয়াবিদের তথ্য অনুযায়ী, আজ সন্ধ্যায় এটি আঘাত হানবে। আগামীকাল মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে উপকূল অতিক্রম করবে। 
তিনি আরো বলেন, সিত্রাং বাংলাদেশে আঘাত হানবে। ভারতে আঘাত হানার সম্ভাবনা নেই। সব থেকে বেশি আঘাত হানবে বরগুনা এবং পটুয়াখালী। 
ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’, ৪ নং হুঁশিয়ারি সংকেত; cyclone; sitrang
ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’, ৪ নং হুঁশিয়ারি সংকেত

ভয়েস অব পটিয়া-ন্যাশনাল ডেস্কঃ বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি আরও শক্তিশালী হয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ এ পরিণত হয়েছে। সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৪ (চার) নং হুঁশিয়ারিং সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ এর ফলে রোববার দিনভর উপকূলীয় জেলাগুলোর আকাশ ছিল মেঘাচ্ছন্ন। কোথাও কোথাও গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিও হচ্ছে। এদিকে, উপকূলীয় এলাকার নদ-নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ার আতঙ্কে রয়েছেন ওইসব এলাকার কয়েক লাখ মানুষ। 

আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি আরও উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’-এ পরিণত হয়ে পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। এটি রোববার সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৭১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭০০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর দিকে অগ্রসর হতে পারে। 

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর অশান্ত রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সেই সঙ্গে ভারী (৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতিভারী (৮৯ মিলিমিটারের বেশি) বর্ষণ হতে পারে বলে বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। 

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত নামিয়ে এর পরিবর্তে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতুর উদ্বোধন, দ্বার খুলেছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের; চট্টগ্রাম বন্দর; চট্টগ্রাম; খাগড়াছড়ি; রাঙ্গামাটি; রামগড়; সাব্রুম
বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতুর উদ্বোধন, দ্বার খুলেছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের

ভয়েস অব পটিয়া-ন্যাশনাল ডেস্কঃ বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ফেনী নদীর উপর নির্মিত মৈত্রী সেতুর উদ্বোধন করা হয়েছে। 
আজ মঙ্গলবার (০৯ মার্চ) দুপুরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভিডিও কনফারেন্সিং এ যুক্ত হয়ে এই সেতুর উদ্বোধন করেন। 

এই প্রথম বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার কোনো নদী সেতুর উদ্বোধন হলো। ফেনী নদীর উপর নির্মিত এই সেতুর নাম রাখা হয়েছে ‘মৈত্রী সেতু’। 
দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী এই সেতু উদ্বোধন করার পাশাপাশি ত্রিপুরার সাবরুমে একটি ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্টেরও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। 

ত্রিপুরাবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি মনে করি এই সেতু আমাদের দুই দেশের মাঝে শুধু সেতুবন্ধই রচনা করবে না বরং ব্যবসা-বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিরাট অবদান রাখবে। শুধু চট্টগ্রাম বন্দর নয়, চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও ত্রিপুরাবাসী ব্যবহার করতে পারবে।’

ফেনী নদীর উপর নির্মিত ফেনী সেতুর দৈর্ঘ্য ১.৯ কিলোমিটার। এটি বাংলাদেশের রামগড় উপজেলার সাথে ভারতের ত্রিপুরার সাবরুমকে যুক্ত করেছে।
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ত্রিপুরাসহ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে আমদানি-রপ্তানির সুবিধার জন্য ১৩৩ কোটি রুপি ব্যয়ে ভারতের ন্যাশনাল হাইওয়েস অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন এই সেতু নির্মাণ করেছে। 

এই সেতু নির্মিত হওয়ায় সহজেই পণ্য আমদানি-রপ্তানির পাশাপাশি দীর্ঘ দশক যোগাযোগ ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকা ত্রিপুরাসহ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে উন্নয়নের দ্বার উন্মোচিত হল।



চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার শুরু ভারতের, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আসাম-ত্রিপুরায় যাচ্ছে ভারতীয় পণ্য; চট্টগ্রাম বন্দর, চট্টগ্রাম, ভারত, বাংলাদেশ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়
চট্টগ্রাম বন্দর

ভয়েস অব পটিয়া-নিউজ ডেস্কঃ বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দর পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করে ভারতের আসাম ও ত্রিপুরা রাজ্যে পণ্য পৌঁছে দিতে কলকাতার বন্দর থেকে একটি জাহাজ রওনা হয়েছে। আগামী সোমবার এটি চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছাবে। একই দিনে একটি বাংলাদেশি পণ্য বোঝাই জাহাজ ও ভারতের পণ্য বোঝাই জাহাজ বন্দরে এলে চুক্তি অনুযায়ী ভারতের পণ্যবাহী জাহাজটি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সুবিধা পাবে। দেশীয় ব্যবসায়ীদের চেয়ে ভারতের ব্যবসায়ীরা বেশি সুযোগ সুবিধা পাওয়ার বিষয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে ব্যবসায়ী মহলে।

বৃহস্পতিবার ভারতের কলকাতার শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বন্দর থেকে চারটি কনটেইনারে রড ও ডালের একটি চালান নিয়ে যাত্রা করেছে এমভি সেঁজুতি নামের ভারতীয় জাহাজ। 
বাংলাদেশে নিযুক্ত  ভারতের হাই কমিশনার ও বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ভারত বাংলাদেশ ট্রান্সশিপমেন্ট এর চুক্তির আওতায় প্রথমবারের মতো এ জাহাজটি ১০৮ টি কনটেইনার নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছাবে। এরপর, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কাভার্ড ভ্যানে করে চারটি কনটেইনার আখাউড়া-আগরতলা স্থলবন্দর হয়ে প্রবেশ করবে ভারতের ত্রিপুরা ও আসাম রাজ্যে।

ভারতীয় হাইকমিশন ও বাংলাদেশের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের এক চিঠির সূত্রে জানা গেছে, এ চারটি কনটেইনারের মধ্যে দুটি কনটেইনারের রড ত্রিপুরার জিরানিয়ার এস এম করপোরেশনের। বাকি দুই কনটেইনারের ডাল যাবে আসামের জেইন প্রতিষ্ঠানের কাছে। 
এ চালানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দর ও সড়কপথ ব্যবহার করে ভারতীয় পণ্য উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যেগুলোতে পরিবহনের প্রথম পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু হলো। 

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, ‘এখন বন্দরে কোন জাহাজের জট নেই। ফলে ভারতীয় জাহাজটি আসা মাত্রই আমরা বার্থিং কার্যক্রম শুরু করতে পারবো।’ বাংলাদেশের অন্যান্য আমদানিকারকদের মতোই নির্ধারিত হারে মাশুল আদায় করে জাহাজটিকে ছাড়পত্র দেয়া হবে বলে জানান তিনি। 

সূত্র জানায়, চুক্তি অনুযায়ী ভারতীয় পণ্য ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশ কাস্টমস কর্তৃপক্ষ সাত ধরনের মাশুল আদায় করবে। এই সাতটি হলো প্রতি চালানের প্রসেসিং ফি ৩০ টাকা, প্রতি টনের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট ফি ৩০ টাকা, নিরাপত্তা মাশুল ১০০ টাকা, এসকর্ট মাশুল ৫০ টাকা এবং অন্যান্য প্রশাসনিক মাশুল ১০০ টাকা। এ ছাড়া প্রতি কনটেইনার স্ক্যানিং ফি ২৫৪ টাকা এবং বিধি অনুযায়ী ইলেকট্রিক সিল ও লক মাশুল প্রযোজ্য হবে। 

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের অক্টোবরে দিল্লিতে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে পণ্য সরবরাহ করতে দুই দেশের চুক্তি হয়। চুক্তির আর্টিক্যাল-৪ (পোর্ট এন্ড আদার্স ফ্যাসিলিটিজ) এ বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি পণ্যের ক্ষেত্রে যে ধরণের সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে পরিবাহিত ইন্ডিয়ার পণ্যের ক্ষেত্রেও একই সুবিধা প্রদান করবে। এছাড়াও এ ধরনের পণ্যের ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ‘প্রায়োরিটি’র ভিত্তিতে ‘স্পেস’ প্রদান করবে ‘ডেডিকেটেড’ নয়। 

ভারতীয় পণ্য অগ্রাধিকার (প্রায়োরিটি) দেয়ার প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, এর অর্থ এই নয়, ভারতীয় পণ্যবাহী জাহাজ ভেড়ানোর জন্য আমরা দেশীয় জাহাজকে জেটি থেকে বের করে দেবো। বন্দরের জেটি ও ইয়ার্ড খালি থাকা সাপেক্ষেই তাদের এ সুবিধা দেয়া হবে। একই দিনে একটি বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের পণ্য বোঝাই জাহাজ ও ভারতের পণ্য বোঝাই জাহাজ বন্দরে এলে কোনটি আগে বন্দরে ভিড়বে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দুই দেশের চুক্তি অনুযায়ী অবশ্যই ভারতের পণ্যবাহী জাহাজটিকেই আগে প্রায়োরিটি দিতে হবে।’ এতে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের বঞ্চিত করা হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে হওয়া একটি চুক্তিকে সবারই সম্মান করা উচিত।’ 
চট্টগ্রাম বন্দরের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ভারতের পণ্যের ক্ষেত্রে যে প্রায়োরিটি দেয়ার কথা বলা হয়েছে তাতে বন্দরের কিছু করার নেই। চুক্তি অনুযায়ী তা আমাদের করতে হবে। যদিও চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি রপ্তানি বাড়ার কারণে বছরে কয়েক দফা, প্রায় ৫-৬ মাস জাহাজ জটে পড়তে হয়।’ তিনি বলেন, ‘শুরুতে ভারতের পক্ষ থেকে তাদের পণ্যবাহী জাহাজের জন্য একটি ডেডিকেটেড জেটি ও ইয়ার্ড দাবি করা হয়েছিল। বন্দর বিভিন্ন চেষ্টার মাধ্যমে ‘ডেডিকেটেড’ এর পরিবর্তে ‘প্রায়োরিটি’ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। 

দেশীয় ব্যবসায়ীদের চেয়ে ভারতের ব্যবসায়ীরা বেশি সুযোগ সুবিধা পাওয়ার বিষয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে বিভিন্ন ব্যবসায়ী মহলে। তবে ভারতীয় পণ্যের এ সুবিধার পক্ষেও মত দিয়েছেন অনেক ব্যবসায়ী। 
চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘আপনার বাড়িতে কোন মেহমান এলে নিজে খাওয়ার আগে অবশ্যই মেহমানদের খাওয়ানো উচিত। সে হিসাবে ভারতীয় পণ্য বেশি প্রায়োরিটি পেতে পারে। এতে দেশি আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের তেমন কোন সমস্যা হবে না বলে দাবি করেন তিনি।’

তবে তৈরি পোশাক শিল্পের সংগঠন বিজিএমইএর সহ সভাপতি এ এম চৌধুরী সেলিম বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে বন্দরে যেহেতু জাহাজ জট ও কনটেইনার জট নেই সেহেতু আপাতত কোন সমস্যা হবে না। তবে যখন বন্দরের জাহাজ জট শুরু হবে এবং চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে ভারতের পণ্য পরিবহন আস্তে আস্তে বাড়বে তখন দেশীয় ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। একজন ব্যবসায়ী যখন নিজ দেশে প্রায়োরিটি পাবেন না তখন তিনি কোথাও ভালো কিছু করতে পারবেন না।’

বিজিএমইএর সাবেক প্রথম সহ-সভাপতি নাছির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘আমদানি পণ্য হাতে বুঝে পেতে এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় লাগে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের। ঈদ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বাজেটের আগে-পরে চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ জট তীব্র হয়ে পড়ে। তা কাটিয়ে উঠতে কয়েক মাস সময় লাগে। এমন অবস্থায় ভারতীয় পণ্য অগ্রাধিকার পেলে দেশের অর্থনীতিতেই এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তৈরি পোশাক ক্রেতাদের কাছে জাহাজের গড় অবস্থান ও পণ্য খালাসের দীর্ঘসূত্রতার কারণে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক মনোভাব রয়েছে। ভবিষ্যতে তা আরো বাড়বে এবং রপ্তানিতে এর প্রভাব পড়তে পারে।’ 

বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন এর সভাপতি আহসানুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমরা এখনো জানি না বছরে ভারত থেকে কী পরিমান পণ্য এ বন্দর দিয়ে পরিবহন করা হবে। ফলে এখনই বিস্তারিত কিছু বলা যাচ্ছে না। যদি ভারতের পণ্য পরিবহন বাড়ার পাশাপাশি আমাদের বন্দরের অবকাঠামোগত সম্প্রসারণ না হয় তাহলে তা দেশের আমদানি-রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালক (অপারেশন) এনামুল হক বলেন, ‘বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে কোন জাহাজ জট কিংবা কনটেইনার জট নেই। ফলে এখন প্রায়োরিটি দেয়া না দেয়া একই কথা। করোনার শুরুতে প্রতিটি জাহাজের গড় অবস্থান চার দিন হলেও তা কমে এখন একদিনে চলে এসেছে বলেও জানান তিনি। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে জাহাজ জট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’