"কৃষি" ক্যাটাগরীর সকল আর্টিকেল
কৃষি লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
বিতর্কিত কৃষি সংস্কার আইন : প্রতিবাদে ভারতজুড়ে কৃষকদের বিক্ষোভ


ভয়েস অব পটিয়া-ইন্টারন্যাশনাল ডেস্কঃ ভারতে বিতর্কিত নতুন কৃষি সংস্কার আইন বাতিলের দাবিতে কৃষকদের আন্দোলনে সৃষ্ট অচলাবস্থার অবসান হয়নি এখনো। দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে কৃষকদের বৈঠকে কোনো ফল না হওয়ায় পুনরায় অচলাবস্থার ডাক। 
বিতর্কিত এ কৃষি সংস্কার আইনগুলো বাতিলের দাবিতে ভারতের হাজার হাজার কৃষক বেশ কয়েকদিন ধরেই রাজধানী নয়াদিল্লির প্রবেশ মুখে অবস্থান নিয়েছেন। যার ফলে মহাসড়কে বন্ধ হয়ে গেছে যান চলাচল। 

ভারতীয় কৃষকদের মতে, ‘বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের নতুন পাশকৃত কৃষি সংস্কার আইনগুলো তাদের জীবন-জীবিকাকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার বলছে, মান্ধাতা আমলের বিপণন পদ্ধতি সংস্কারের লক্ষ্যেই নতুন এ আইনগুলো করা হয়েছে। এসব আইনের ফলে কৃষকরা তাদের ফসল বিক্রির ক্ষেত্রে আগের তুলনায় বেশি বিকল্প পাবেন বলেও ভাষ্য সরকারের।
কৃষকরা আরো জানান, ‘সরকারকে অবিলম্বে এ আইনগুলো বাতিল করতে হবে।’

দিল্লিতে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে আসা কৃষকদের বেশিরভাগই ভারতের শস্য উৎপাদক দুই রাজ্য হরিয়ানা ও পাঞ্জাবের বাসিন্দা। ভারতের ২ দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতির প্রায় ১৫ শতাংশই কৃষির উপর নির্ভরশীল। দেশটির ১৩০ কোটি জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি এ খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। 
সংশ্লিষ্ট কৃষকদের আশঙ্কা, বিতর্কিত নতুন এ কৃষি সংস্কার আইনগুলো ভারতের নিয়ন্ত্রিত বাজার ব্যবস্থাকে ভেঙে দেবে, যার ফলে সরকারও ধীরে ধীরে নির্ধারিত মূল্যে গম ও ধান কেনা বন্ধ করে দেবে, এর ফলশ্রুতিতে তাদেরকে ফসল বেচতে বেসরকারি ক্রেতাদের সঙ্গে দর কষাকষিতে প্রতিযোগিতা করতে হবে। এ  আইনগুলো কৃষকদের জীবন-জীবিকাকে অনিশ্চিত অবস্থার দিকে ঠেলে দেবে বলে দাবি করে আইনগুলো বাতিলসহ উৎপাদিত ফসল সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে কিনতে সরকারের বাধ্যবাধকতা বহালসহ আরও বেশ কিছু দাবি জানিয়েছেন বিক্ষোভরত কৃষকরা ।

রয়টার্স অবলম্বনে
বিমানে আসছে এস. আলম গ্রুপের পেঁয়াজ; পটিয়া; চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা; চট্টগ্রাম; চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক; ইন্দ্রপুল লবণ শিল্প, পটিয়া লবণ শিল্প, পটিয়া বাইপাস, চাঁনখালী খাল, কক্সবাজার; শ্রীমাই খাল; শ্রীমতি খাল; পেঁয়াজ; এস আলম
বিমানে আসছে এস. আলম গ্রুপের পেঁয়াজ

ভয়েস অব পটিয়া-ন্যাশনাল ডেস্কঃ দেশে পেঁয়াজের সরবরাহ ও মূল্য স্বাভাবিক রাখতে জরুরি ভিত্তিতে মিশর থেকে কার্গো বিমানযোগে পেঁয়াজ আমদানির যে ঘোষণা দিয়েছে সরকার তার প্রথম চালান মঙ্গলবার ঢাকায় এসে পৌঁছাবে।

শনিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আব্দুল লতিফ বকসী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। 
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘এস আলম গ্রুপ বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করছে, এটি তার প্রথম চালান। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য আমদানিকারকদের আমদানিকৃত পেঁয়াজ কার্গো উড়োজাহাজ যোগে ঢাকায় পৌছাবে।’

এর আগে শুক্রবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দেশে পেঁয়াজের সরবরাহ ও মূল্য স্বাভাবিক রাখতে জরুরি ভিত্তিতে কার্গো উড়োজাহাজে করে পেঁয়াজ আমদানি করার প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়েছে এবং অল্প সময়ের মধ্যে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ বাজারে সরবরাহ করা সম্ভব হবে। 
এছাড়া, সমুদ্র পথেও আমদানিকৃত পেঁয়াজের বড় চালান বাংলাদেশের পথে রয়েছে, যা অতিশীঘ্রই দেশে এসে পৌঁছাবে। 

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে টিসিবি’র মাধ্যমে সরাসরি তুরস্ক থেকে, এস. আলম গ্রুপ মিশর থেকে, বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান আফগানিস্তান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে জরুরী ভিত্তিতে কার্গো উড়োজাহাজযোগে পেঁয়াজ আমদানি করছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় হতে জরুরী ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে জানিয়ে সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে টেকনাফ স্থলবন্দর, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরসহ বিভিন্ন স্থানে পেঁয়াজ পরিবহনে কয়েকদিনের জন্য সমস্যা হয়েছিল। কেউ পেঁয়াজ অবৈধ মজুত করলে, কারসাজি করে অতি মুনাফা অর্জনের চেষ্টা করলে বা অন্য কোনো উপায়ে বাজারে পেঁয়াজের সংকট সৃষ্টির চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে আইন মোতাবেক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে উল্লেখ করে বলা হয়, দেশের গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃ্খংলা বাহিনী এ বিষয়ে তৎপর রয়েছে। 

ভারতের মহারাষ্ট্র ও অন্য এলাকায় বন্যার কারণে পেঁয়াজের ফলন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় গত ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করে দেয়ার পর বাংলাদেশ মিয়ানমার থেকে এলসি এবং বর্ডার ট্রেডের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পেঁয়াজ আমদানি শুরু করেছে। পাশাপাশি মিশর ও তুরস্ক থেকেও এলসি’র মাধ্যমে পেঁয়াজ আমদানি শুরু করা হয়েছে। সংবাদ বিজ্ঞতিতে বলা হয়, আমদানিকারকদের উৎসাহিত করতে পেঁয়াজ আমদানি ক্ষেত্রে এলসি মার্জিন এবং সুদের হার হ্রাস করা হয়েছে। স্থল ও নৌ বন্দরগুলোতে আমদানিকৃত পেঁয়াজ দ্রুত ও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে খালাসের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও বন্দর কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। 
দেশে পেঁয়াজের দাম ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ট্রেডিং করপোরেশন অফ বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে ট্রাক সেলে ঢাকা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ৩৫টি ট্রাকের মাধ্যমে প্রতি কেজি ৪৫ টাকা মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি করছে। এছাড়াও, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাজার মনিটরিং টিম ঢাকার শ্যামবাজার ও চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের মতো বড় পাইকারি বাজারগুলোতে অভিযান জোরদার করেছে। সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে তারা আশা করছেন, খুব কম সময়ের মধ্যে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ বাজারে চলে আসবে এবং মূল্য স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
চারিদিকে হাহাকার, ময়লার ভাগাড়ে পেঁয়াজ !; ভয়েস অব পটিয়া; পটিয়া; চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা; চট্টগ্রাম; চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক; ইন্দ্রপুল লবণ শিল্প, পটিয়া লবণ শিল্প, পটিয়া বাইপাস, কক্সবাজার; পেঁয়াজ;
চারিদিকে হাহাকার, ময়লার ভাগাড়ে পেঁয়াজ !

ভয়েস অব পটিয়া-ন্যাশনাল ডেস্কঃ পেঁয়াজের উচ্চমূল্যের ঝাঁজে নাজেহাল সারাদেশ। হু হু করে দাম বেড়ে যাওয়া সেই পেঁয়াজই নাকি পরে আছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ‘ভাগাড়ে’! শুধুই ভাগাড়ই নয়, গতকাল শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যার পর কে বা কারা নগরের ফিরিঙ্গীবাজার ব্রীজঘাট এলাকায় কর্ণফুলী নদীতেও ফেলে গেছে ৭ থেকে ৮ বস্তা পচা পেঁয়াজ।

খাতুনগঞ্জের কয়েকটি আড়তে গিয়ে দেখা যায়, বস্তাভর্তি পেঁয়াজ পচে মাটিতে পড়ে আছে। দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে গোটা এলাকায়। শ্রমিকরা এসব পেঁয়াজ ভাগাড়ে নিয়ে ফেলছেন। প্রায় ১৫ টন পঁচা পেয়াজ বের হয়েছে খাতুনগঞ্জের আড়তগুলো থেকে।

এই ঘটনার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর নগরবাসীর মাঝে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। তারা বলছেন, দাম বাড়াতে অতি মুনাফার লোভে গুদামজাত করা পেঁয়াজ এখন পচে নষ্ট হচ্ছে। মুনাফার লোভে ন্যায্য মূল্যে বিক্রি না করে, সেই পচা পেঁয়াজ এখন ফেলা হচ্ছে ভাগাড়ে-নদীতে। তবে ব্যবসায়ীদের দাবি, মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ পচা হওয়ায় তারা সেগুলো ফেলে দিচ্ছেন। এ কারণে তাদের ব্যাপক লোকসান হচ্ছে। 

এদিকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শক সৈয়দ আহমদ ছফা মাতব্বর জানান, ‘গত তিন-চারদিন ধরে খাতুনগঞ্জসহ নগরের বিভিন্ন পাইকারী ও খুচরা বাজার থেকে বেশি পরিমাণ পচা পেঁয়াজ সরাতে হয়েছে। পচে নষ্ট হওয়া এসব পেঁয়াজ ফেলা হচ্ছে সিটি কর্পোরেশনের ভাগাড়ে। পাঁচ টন ধারণক্ষমতার চারটি গাড়ি দিয়ে এসব বর্জ্য অপসারণ করা হচ্ছে।’

তবে খাতুনগঞ্জের আড়ৎদাররা বলেন, ‘মজুদকৃত পেঁয়াজ নয়, সদ্য মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের বড় একটি অংশ পচা। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে টেকনাফ স্থলবন্দরে আটকে পড়া পেঁয়াজের চালান এখন ঢুকছে। পানিতে সেসব পেঁয়াজের অধিকাংশই পচে গেছে। ব্যবসায়ীরা সেসব পেঁয়াজ ভাগাড়ে-নদীতে ফেলছে।’
পানি প্রবাহের পথ বন্ধ করে খালে ব্রীজ নির্মাণ, ক্ষতির আশঙ্কায় কয়েকশ একর বোরো ফসল; পটিয়া; ইউনিয়ন; খাল; বড়লিয়া;  চাষাবাদ; বোরো; ধান; কৃষক; বাম্পার ফলন; চট্টগ্রাম; Patiya; Chittagong; Chattogram
পানি প্রবাহের পথ বন্ধ করে খালে ব্রীজ নির্মাণ, ক্ষতির আশঙ্কায় কয়েকশ একর বোরো ফসল

ভয়েস অব পটিয়া-নিউজ ডেস্কঃ পটিয়া উপজেলার বড়লিয়া ইউনিয়নে জোয়ার-ভাটার খালে বাঁধ দিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ করে ব্রীজ নির্মাণকে কেন্দ্র করে উদ্বিগ্ন কৃষকরা। ক্ষতির আশঙ্কায় কয়েকশ একর বোরো ফসল। 
উপজেলার বড়লিয়া ইউনিয়নের ওকন্যরা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা বদিউজ্জামানের বাড়ির পাশে কাটাখালী খালে একটি ব্রীজ নির্মাণকে কেন্দ্র করে খালের উপর বাঁধ স্থাপনের মাধ্যমে পানি প্রবাহ বন্ধ করার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেন কৃষকরা। সেচের পানি চলাচলের কোন ব্যবস্থা না রেখে ব্রীজ নির্মাণের জন্য বাঁধ দেয়া হলে কয়েকশ একর জমিতে রোপিত বোরো ফসলে সেচ কার্যক্রম বিঘ্নিত হবে আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। এর ফলে চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলার বড়লিয়া, কর্তালা, পূর্ব বাড়ৈকারা, পশ্চিম বাড়ৈকারা, বেলখাইন, ওকন্যরা সহ আশপাশের এলাকায় বোরো চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। 

ইতোমধ্যে বিষয়টি পটিয়া উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা কৃষি অফিসের মাঠ কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে বলে জানায় কৃষকরা। খালের পানি প্রবাহ বন্ধ করে বাঁধ নির্মাণ হলে কৃষকদের চাষকৃত বোরো ফসল নষ্টের আশঙ্কা। জোয়ার-ভাটার খালের পানি আটকে রাখার চেষ্টার ঘটনায় শুক্রবার সকালে এলাকার কৃষকরা বিক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। 

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) অধীনে বড়লিয়া ইউনিয়নের ওকন্যরা গ্রামে কাটাখালী খালের উপর একটি ব্রীজ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। নির্মানাধীন ব্রীজের উত্তর ও দক্ষিণ দিকে রয়েছে শত শত একর ফসলি জমি। ব্রীজ নির্মাণের জন্য উক্ত খালে বাঁধ স্থাপনের ফলে খালের পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাবে। যার ফলে ওই এলাকার পানি সেচের জন্য স্থাপিত প্রায় ১২টি স্কীম বন্ধ হয়ে বোরো চাষাবাদ বিঘ্ন সৃষ্টি হবে। 

এ ব্যাপারে কৃষকদের সাথে কথা বললে তারা জানান, কাটাখালী খালটি চানখালী কেরিঞ্জা খালের সঙ্গে যুক্ত। জোয়ার-ভাটার এই খালের পানি দিয়ে অত্র এলাকার কৃষকরা ইরি, বোরো মওসুমে চাষাবাদ করে থাকেন। ব্রীজ নির্মাণে নিয়োজিত ঠিকাদার খালের পানি প্রবাহ বন্ধ করে কৃষকের বোরো চাষাবাদে ক্ষতি করার চেষ্টা করছে। এ ব্যাপারে কৃষক মোঃ আবু হাজী, জাহাঙ্গীর আলম, আবদুস ছত্তার ও স্কীম ম্যানেজার মো. রফিক পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তাদের অভিযোগ, ব্রীজ নির্মাণের ঠিকাদার খালের পানি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে নিজের ইচ্ছেমত কাজ করার অপচেষ্টা করছে। খালের পানি প্রবাহ বন্ধ করে দিলে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

পটিয়া উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা (পিআইও) আবুল হোসেন বলেন, কৃষকের ক্ষতি হয় এমন কোন কাজ ঠিকাদারকে করতে দেওয়া হবে না। জনগণের জন্য ব্রীজ নির্মাণ করাও জরুরী। খালের পানি নিয়ে কৃষক যাতে বোরো চাষাবাদ করতে পারেন সে ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, কৃষকদের নিয়ে বৈঠক করে বিষয়টির সমাধান করবেন বলে তিনি জানান। 

এ বিষয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকার কৃষকেরা স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী’র সাথে সাক্ষাত করে তার জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন। তিনি বিষয়টি তদারকি করে দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস প্রদান করেন বলে সূত্র জানায়।
দক্ষিণ চট্টগ্রামে উৎপাদিত লেবুর সুখ্যাতি দেশজুড়ে; পটিয়া; চট্টগ্রাম; Patiya; Chittagong; Chattogram; চন্দনাইশ; সাতকানিয়া; লোহাগাড়া; আনোয়ারা; বোয়ালখালী; রাঙ্গুনিয়া; বাঁশখালী;
দক্ষিণ চট্টগ্রামে উৎপাদিত লেবুর সুখ্যাতি দেশজুড়ে

ভয়েস অব পটিয়া-নিউজ ডেস্কঃ দক্ষিণ চট্টগ্রামের লেবুর সুখ্যাতি সর্বত্র। চলিত বর্ষা মৌসুমে নির্দিষ্ট সময়ে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ায় লেবুর বাম্পার ফলন হয়েছে। লেবুর দাম ভালো থাকায় কৃষকেরাও মহাখুশি।

দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়া ও বোয়ালখালীর পাহাড়ী এলাকায় প্রতি বছর প্রচুর লেবুর চাষ হয়ে থাকে। রমজান, ঈদ ও আবহাওয়া গরম থাকার কারণে লেবুর দাম চড়া থাকায় কৃষকরা খরচ পুষিয়ে লাভের মুখ দেখছেন বলে জানিয়েছেন অনেক লেবু চাষী। জনপ্রিয় ও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ লেবু ফলটি দক্ষিণ চট্টগ্রামের ঐতিহ্যও বহন করে।

লেবু চাষীরা জানান, লেবু সাধারণত ৫ জাতের হয়ে থাকে। এগুলো হলো, কাগজী, পাতি, এলাচি, বাতাবি ও নতুন জাতের হাইব্রিড সিডলেস নামে একটি লেবু চাষও বর্তমানে হচ্ছে। উৎপাদিত লেবুগুলোর মধ্যে কাগজী লেবু ছোট আকৃতির হয়। বাণিজ্যিকভাবে লেবু উৎপাদন ও বিক্রি করে প্রতি বছরই লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করেন এ এলাকার লেবু চাষীরা।

বাণিজ্যিকভাবে লেবু উৎপাদন ও বিক্রয় করার কারণে এ পাহাড়ের গ্রামগুলোকে লেবু গ্রামও অনেকেই বলে থাকেন। পাহাড়ী ও সমতল উর্বরভূমি লেবু চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে লেবু চাষের প্রতি অনেকেই ঝুঁকে পড়েছেন। ফাল্গুন-চৈত্র মাসে লেবুর ফুল আসে এবং জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ়-শ্রাবণ মাস জুড়ে ফলন পাওয়া যায়।

চলতি বছর লেবুর ফলন ভাল হওয়ায় রমজান মাস ও ঈদের চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত লেবুর প্রয়োজনীয়তার ফলে গত বছরের তুলনায় ৫-৬ গুণ দাম বেশি পাচ্ছে লেবু চাষীরা। ফলে লেবু চাষীরা বেজায় খুশি। তারা জানান, প্রতিদিন প্রচুর লেবু বিক্রি হচ্ছে।

এখানকার উৎপাদিত লেবু চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা, চট্টগ্রাম শহর ও ঢাকার কয়েকটি বড় বড় বাজারে সরবরাহ করে থাকেন লেবু ব্যবসায়ীরা। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর কমল মুন্সীর হাট, খরনা রাস্তার মাথা, কেলিশহর দারগা হাট, বোয়ালখালীর কড়লডেঙ্গা-গোমদণ্ডী-ফুলতল সড়ক হয়ে ৪/৫ টি লেবু ভর্তি ট্রাক পিক-আপ লেবু নিয়ে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে চলে যাওয়ার দৃশ্য দেখা যায়।

লেবু চাষীদের অভিযোগ, পরিত্যক্ত পাহাড়ী ভূমি যদি লেবু চাষের আওতায় আনা হয় তাহলে উৎপাদিত লেবু দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিপুল পরিমাণে বিদেশেও রপ্তানী করা যেত। স্থানীয় লেবু চাষীরা আক্ষেপ করে বলেন, সবজি রাখার জন্য হিমাগার না থাকায় উৎপাদিত লেবু সহ বিভিন্ন ধরনের সবজি সংরক্ষণ করতে না পারার কারণে অনেক সময় কম দামে শাক-সবজি বিক্রি করতে হয়, এতে কৃষকদের মূলধন তুলতেই বেগ পেতে হয়।
দক্ষিণ চট্টগ্রামে পেয়ারার বাম্পার ফলন, ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত কৃষক; পটিয়া; চট্টগ্রাম; Patiya; Chittagong; Chattogram; চন্দনাইশ; সাতকানিয়া; লোহাগাড়া; আনোয়ারা; বোয়ালখালী; রাঙ্গুনিয়া; বাঁশখালী;
দক্ষিণ চট্টগ্রামে পেয়ারার বাম্পার ফলন, ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত কৃষক

ভয়েস অব পটিয়া-নিউজ ডেস্কঃ চলতি মৌসুমে দক্ষিণ চট্টগ্রামের ৭ উপজেলায় পেয়ারার বাম্পার ফলন হয়েছে। এবার প্রায় ৪০ কোটি টাকার পেয়ারা উৎপাদন হয়েছে বলে জানান কৃষি অফিস ও পেয়ারা চাষীরা। দক্ষিণ চট্টগ্রামে উৎপাদিত পেয়ারা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাইকাররা সরবরাহ করে থাকেন। এখন পর্যন্ত কোনো হিমাগার বা পেয়ারা সংরক্ষণের যথাযথ ব্যবস্থা না থাকায় অনেক সময় সংরক্ষণের অভাবে অনেক কম দামে পেয়ারা বিক্রয় করে দিতে হয় বলে জানায় পেয়ারা চাষীরা। এতে পেয়ারা চাষীরা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হয়।

দক্ষিণ চট্টগ্রামের ৭ উপজেলার কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, গত বছর প্রায় তিন হাজার ছয় শত একর জমিতে পেয়ারার চাষ হয়েছে। এ বছর চাষ আরো বেড়েছে। লোহাগাড়া, সাতকানিয়া, বাঁশখালী, বোয়ালখালী, আনোয়ারা, চন্দনাইশ, পটিয়া উপজেলায় ছোট-বড় পেয়ারার বাগান রয়েছে প্রায় ৬ হাজার ৮০০ টির মত। বেশিরভাগ বাগান গড়ে উঠেছে পাহাড়ে। যার বেশিরভাগের অবস্থান চন্দনাইশ উপজেলার কাঞ্চননগর, হাশিমপুর. ছৈয়দাবাদ, রায়জোয়ারা, ধোপাছড়ি, দোহাজারী শঙ্খ নদী পাশ ঘেষে; পটিয়া উপজেলার কেলিশহর, হাইদগাঁও, খরনা, কচুয়াই ইউনিয়নের শ্রীমতি খাল পাশে; বাঁশখালী উপজেলার, কালীপুর, বোয়ালখালী উপজেলার করলডেঙ্গা পাহাড়ে; এছাড়াও সাতকানিয়া উপজেলার পদুয়া, বাজালিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলার পূর্বাংশের পাহাড় এবং সমতল ভূমিতে পেয়ারা চাষ করা হয়। 
গত বছরে চাইতে এবার ফলন খুব ভালো হয়েছে। তবে বিশ্বে বিভিন্ন জাতের পেয়ারা থাকলেও দক্ষিণ চট্টগ্রামে কাজী, আঙ্গুরি, বাউ ও কাবিরি— এ চার জাতের পেয়ারা বেশি পাওয়া যায়। এ এলাকার হাজার হাজার একর বনভূমিকে যদি পেয়ারা চাষের আওতায় আনা যায়, তাহলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিপুল পরিমাণ পেয়ারা বিদেশে রফতানি করা সম্ভব। পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।

কৃষি অফিস সূত্রে আরও জানা যায়, পটিয়া ও চন্দনাইশের অধিকাংশ পেয়ারার মাঝেখানে লাল আবরণ থাকে। দেশজুড়ে এ লাল পেয়ারার খ্যাতি রয়েছে। তাছাড়া কিছু বাগানে ১২ মাস পেয়ারা পাওয়া যায়। কৃষক এই পেয়ারাকে বারোমাসি পেয়ারা নামে ডাকেন। তবে চন্দনাইশ ও পটিয়া উপজেলার পেয়ারা সবচেয়ে বেশি সুস্বাদু। তাই দেশজুড়ে এর প্রচুর চাহিদাও রয়েছে। 

পেয়ারা চাষী একাধিক কৃষক বলেন, ‘শুধু মাত্র দক্ষিণ চট্টগ্রামে বছরে ৪০ কোটি টাকার পেয়ারা উৎপাদিত হয়। সরকার বা কৃষি বিভাগ পেয়ারা চাষীদের সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসেনি। বেসরকারিভাবে কোনো সাহায্য-সহযোগিতা পাননি বলেও অভিযোগ পেয়ারা চাষীদের।’ 
দক্ষিণ চট্টগ্রামের এ অপার সম্ভাবনাময় পেয়ারা চাষে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন এ অঞ্চলের পেয়ারাচাষী ও ব্যবসায়ীরা। 
পেয়ারা চাষীরা আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কোনো হিমাগার বা পেয়ারা সংরক্ষণের সরকারীভাবে যথাযথ ব্যবস্থা না থাকায় অনেক সময় সংরক্ষণের অভাবে পেয়ারা চাষীদের অত্যন্ত কম দামে পেয়ারা-লেবুসহ বিভিন্ন সবজি বিক্রয় করে দিতে হয়। এতে পেয়ারা ও সবজিচাষীরা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হন। ’

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ১৩টি স্পটে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার পেয়ারা বেচাকেনা হয়। হাটে আসা পেয়ারা চাষীরা জানান, শুধু রওশন হাটে প্রতিদিন এক হাজার বারেরও বেশি পেয়ারা বিক্রি হয়। পটিয়ার কমল মুন্সীর হাট, চন্দনাইশ উপজেলার বাদমতল, গাছবাড়িয়া খান হাট ও বাগিচা হাটে চাষিরা পাহাড়ি অঞ্চলে উৎপাদিত পেয়ারা নিয়ে আসেন ভারে করে। সেখান থেকে সংগ্রহ করে ব্যাপারীদের হাত ঘুরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলে যায় এই পেয়ারা। বংশপরম্পরায় পেয়ারা চাষ ও বিক্রিতে নিয়োজিত এ অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ। জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত শুধু চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরাই নন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকারি ক্রেতারা ছুটে আসেন দক্ষিণ চট্টগ্রামের এই পেয়ারা বাজারগুলোতে। এক একটি পেয়ারা খুচরা বাজারে ২ থেকে ৮ টাকায় পর্যন্ত বিক্রয় হতে দেখা যায়। 

চন্দনাইশ উপজেলার পেয়ারা চাষী কৃষক কামাল বলেন, আমি নিজের ৩০০ শতক জমিতে পেয়ারা চাষ করেছি। যাতে বাগান সংখ্যা হচ্ছে ৮টি। এতে পেয়ারার বাম্পার ফলন হয়েছে। একটি বাগান থেকে ২-৩ লাখ টাকার পেয়ারা বিক্রি করা সম্ভব বছরে। বর্তমানে প্রতি ভার পেয়ারা বিক্রি হচ্ছে ৮০০-১০০০ টাকায়। এক ভারে ৫০০ থেকে ৬০০ পেয়ারা থাকে। 

পটিয়া ও চন্দনাইশ উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা রঘুনাথ নাহা ও তৌফিক হোসেন খান ভয়েস অব পটিয়া’কে বলেন, ‘পটিয়া ও চন্দনাইশে সবচাইতে বেশি পেয়ারা উৎপাদিত হয়। এ বছর উৎপাদন অনেক ভালো। তবে বাগান পরিচর্যা ও অন্য কতিপয় বিষয়ে মনোযোগ দেয়া গেলে এ উপজেলাগুলোতে পেয়ারার উৎপাদন দ্বিগুণ করা সম্ভব। বাংলাদেশে যে কয়টি পেয়ারার জাত রয়েছে তার মধ্যে সবচাইতে চন্দনাইশ ও পটিয়ার পেয়ারা বেশি সুস্বাদু। এই অঞ্চলের পেয়ারা চাষীদের দাবির কথা আমাদের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। তারা সরকারের সীমাবদ্ধতার কথা বলেন। তবে সবজি ও ফলমূল সংরক্ষণের জন্য এই এলাকায় একটি হিমগারের প্রয়োজন রয়েছে।’

পেয়ারা বিষয়ে ডাক্তাররা বলেন, ‘দাঁতের ব্যাথার জন্য পেয়ারা খুব উপকারী। পেয়ারা গাছের ছাল ও শেকড় আমাশয়ের ওষুধ হিসাবে ব্যবহার করা হয়। মুখের রুচি বাড়াতে পেয়ারা খুব ভালো। পেয়ারার পুষ্টির সাথে রয়েছে ভেষজগুণও। একটি পেয়ারাতে রয়েছে একটি কমলার চাইতে চারগুণ বেশি ভিটামিন সি। তাই বিশ্বজুড়ে পেয়ারার গুণি ফল হিসাবে স্বীকৃতি রয়েছে।