"শিল্পনগরী" ক্যাটাগরীর সকল আর্টিকেল
শিল্পনগরী লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
শিল্প কারখানায় গভীর নলকূপ বসানোয় পটিয়ায় পানীয় জলের সংকট; ১২ শতাধিক নলকূপে উঠছে না পানি; পটিয়া; চট্টগ্রাম; Patiya; Chittagong; Chattogram
শিল্প কারখানায় গভীর নলকূপ বসানোয় পটিয়ায় পানীয় জলের সংকট; ১২ শতাধিক নলকূপে উঠছে না পানি

ভয়েস অব পটিয়া-নিউজ ডেস্ক: পটিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকার শিল্প কারখানায় গভীর নলকূপ বসিয়ে পানি উত্তোলনের ফলে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় উপজেলার ১৫ ইউনিয়নের প্রায় ১২ শতাধিক নলকূপে উঠছে না পানি। ফলে গ্রীষ্মের প্রচন্ড তাপদাহের মধ্যে সাধারণ জনগণকে পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার রিজেন্ট স্পেনিং মিল, ফোর এইচ গ্রুপ, এনার্জি পেক, মোস্তাফা সল্ট এন্ড পেপার মিলস্, হক্কানী গ্রুপ, জেরিন পেপার মিল, বনফুল এন্ড কোম্পানী, ফুলকলি, শাহ আমানত নিটিং এন্ড ডাইিং, ইফা ড্রিঙ্কিং ওয়াটার সাপ্লাই সহ আরো বিভিন্ন শিল্প কারখানাগুলোতে ৬/৭ ফুট ব্যাসের নলকূপ বসিয়ে মাটির নিচের পানি উত্তোলন করে বিভিন্ন ব্যবসা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। যার  ফলে উপজেলার কোলাগাঁও, জিরি, কুসুমপুরা, আশিয়া, কাশিয়াইশ, হাবিলাসদ্বীপ, বড়লিয়া, জঙ্গলখাইন, ধলঘাট, কেলিশহর, হাইদগাঁও, পটিয়া পৌরসভা, কচুয়াই, খরনা, দক্ষিণ ভূর্ষি, ভাটিখাইন সহ ইউনিয়নগুলোতে স্বাভাবিকের চেয়ে ১০/১৫ ফুট পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় নলকূপের পানি উঠছে না। এর ফলে বিভিন্ন এলাকায় পানীয় জলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বিকল্প হিসাবে অনেক জায়গায় কমপ্রেসার মেশিন দিয়ে পানি উত্তোলন করা হচ্ছে। অনেক এলাকায় এ ব্যবস্থা না থাকায় নলকূপগুলো অকেজো অবস্থায় রয়েছে।

এ ব্যাপারে জঙ্গলখাইন ইউপি চেয়ারম্যান শাহদাৎ হোসেন ফরিদ ভয়েস অব পটিয়া’কে জানান, ‘এলাকার কিছু শিল্প কারখানার মালিকরা ব্যবসায়িক ভিত্তিতে গভীর নলকূপ বসিয়ে পানি উত্তোলন করার ফলে এলাকার নলকূপগুলোতে পানি উঠছে না। এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় অনেকবার বলার পরও এখন পর্যন্ত কোনো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয় নি। এ ব্যাপারে বিভিন্ন ইউনিয়নের ইউপি চেয়াম্যানগণ গভীর নলকূপ বসিয়ে পানি উত্তোলন বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন। তাছাড়া এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে প্রতিটি এলাকায় প্রতিবাদ সভাসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে স্বারকলিপি প্রদান করা হয়।’

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোকেয়া পারভীন ভয়েস অব পটিয়া’কে বলেন, ‘মিল-কারখানাগুলোতে গভীর নলকূপ না বসিয়ে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করা এবং নদীর পানি পরিশোধনাগার প্ল্যান্ট বসিয়ে পানি পরিশোধন করে ব্যবহার করার জন্য বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে বিশেষভাবে পরিবেশ অধিদপ্তরকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলা হয়েছে।’

পটিয়া উপজেলার চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদ চৌধুরী টিপু’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ভয়েস অব পটিয়া’কে বলেন, ‘উপজেলার বিভিন্ন শিল্পকারখানাগুলোতে ৬/৭ ফুট ব্যাসের পাইপ বসিয়ে পানি উত্তোলনের ফলে বিভিন্ন এলাকার নলকূপগুলোতে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় পানি উঠছে না। এতে এলাকার প্রায় ১৫ শতাধিক নলকূপে পানি উঠছে না বলে এলাকাবাসীরা অভিযোগ জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে শিল্পকারখানাগুলোতে খাল, নদীর পানি পরিশোধন প্ল্যান্ট স্থাপন করে পানি ব্যবহারের জন্য এবং পরিবেশ অধিদপ্তরকেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলা হয়েছে। কিন্তু পরিবেশ অধিদপ্তর অনেক কারখানাতে পরিবেশ ছাড়পত্র দিয়ে দিয়েছে। তাছাড়া স্থানীয় সাংসদ সামশুল হক চৌধুরী এই পানি সংকট দূর করতে প্রায় ৫ শতাধিক গভীর নলকূপ স্থাপন করেন এবং কয়েকটি মিল থেকে টাকা নিয়ে কমপ্রেসার মেশিন কিনে দিয়ে কিছু কিছু এলাকায় পানি উত্তোলনের ব্যবস্থা করেছেন বলে এলাকাবাসী জানায়। তবে এ সংকট দূর করতে হলে অবলিম্বে কল-কারখানাগুলোতে গভীর নলকূপ স্থাপনের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে হবে। পরিবেশ অধিদপ্তর আরো তৎপর হলে এ সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।’

এ ব্যাপারে জানতে চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের অফিসে বেশ কয়েকবার ফোন করেও তাদের কোন বক্তব্য পাওয়া যায় নি।

ভুক্তভোগী উপজেলাবাসী এই পানীয় জলের সংকট দূর করতে উপজেলা প্রশাসনসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন।