vop-ad1

ভয়েস অব পটিয়াঃ পটিয়া উপজেলার ভাটিখাইন ও ছনহরা ইউনিয়নে সাড়ে ৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজে অনিয়ম-দুর্নীতি

পটিয়ায় বেড়িবাঁধ নির্মাণে অনিময়-দুর্নীতি, ভাঙ্গন আতঙ্কে ২০ হাজার মানুষ; পটিয়া; চট্টগ্রাম; Patiya; Chittagong; Chattogram
পটিয়ায় বেড়িবাঁধ নির্মাণে অনিময়-দুর্নীতি, ভাঙ্গন আতঙ্কে ২০ হাজার মানুষ

ভয়েস অব পটিয়া-নিউজ ডেস্কঃ পটিয়া উপজেলার ভাটিখাইন ও ছনহরা ইউনিয়নে সাড়ে ৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পায়নি বলে জানিয়েছেন এলাকার সাধারণ জনগণ। যার ফলে গত কয়েক দিন আগে ভাটিখাইনে শ্রীমতি খালের বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে কৃষক ও পুকুর ডুবে মৎস্য চাষীদের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। বর্তমানে আবারো ভাঙ্গন আতঙ্ক নিয়ে দুই উইনিয়নের ২০ হাজার মানুষ বসবাস করছে।

জানা যায়, প্রতিবছর পাহাড়ী ঢলের পানিতে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে তলিয়ে যায় পটিয়া উপজেলার ভাটিখাইন ও ছনহরা ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম। গত কয়েক দিন আগে টানা বর্ষণে শ্রীমাই খালের দু’পাশে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে কৃষক ও পুকুর ডুবে মৎস্য চাষীদের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। গত ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বেড়িবাঁধ নির্মাণের টাকা হরিলুটের কারণে উপজেলার ভাটিখাইন ও ছনহরা ইউনিয়নের ১০ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ ভাঙনের আশঙ্কার মধ্যে বসবাস করছে। আবারো যে কোন মুহূর্তে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে পানির প্রবল স্রোতে পুনরায় ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

শ্রীমতি খাল এলাকার একাধিক জায়গায় গত কয়েক দিন আগের ভয়াবহ বন্যায় প্রায় ১০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ পাহাড়ি ঢলের বিভিন্ন স্থানে পানিতে বিলীন হয়ে যায়। যার ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। বেড়িবাঁধগুলো ভেঙ্গে যাওয়ায় এসব পয়েন্ট দিয়ে ঢলের পানি লোকালয়ে প্রবাহিত হয়ে হাজার হাজার পরিবার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। পানিতে ভেসে গেছে লাখ লাখ টাকার পুকুরের মাছ। ফসলি জমি ডুবে গিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে সদ্য রোপণ করা আমন ফসল।

এদিকে ভাটিখাইন ও ছনহরা ইউনিয়নে পাহাড়ি ঢলে শ্রীমতি খালের পানি স্বাভাবিকের চাইতে বেড়ে গিয়ে আবারো ভাঙন দেখা দিয়েছে। ফলে ভাটিখাইন এলাকার ২ উইনিয়নের প্রায় ২০ হাজার মানুষ ভাঙ্গন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। দ্রত বেড়িবাঁধ মেরামত করা না গেলে লক্ষ লক্ষ টাকার জমির ফসল পাহাড়ি ঢলে বিলীন হয়ে যাবে। 

পাউবো ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বন্যা নিয়ন্ত্রণ, সেচ ও পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) উপজেলার শোভনদন্ডী, খরনা, কচুয়াই এলাকায় ২৫ কিলোমিটার খাল খনন, পাঁচটি স্লুইস গেইট মেরামত ও ভাটিখাইন-ছনহরা এলাকায় সাড়ে ৭ কিলোমিটার এলাকায় বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ করে। আর এ কাজটি মূল ঠিকাদার ইউনুচ এন্ড ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড পেয়ে থাকলেও সরকারী দলের প্রভাবশালীরা সিন্ডিকেট করে সাব ঠিকাদার হিসেবে বেড়িবাঁধের কাজ ভাগিয়ে নিয়ে অনিয়ম ও টাকা হরিলুট করেছে বলে পটিয়া উপজেলার মাসিক সমন্বয় সভায় অভিযোগ করেছিলেন ভাটিখাইন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। 

ভাটিখাইন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বেড়িবাঁধ নির্মাণের সময় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি কাজ না করে লাখ লাখ টাকা হরিলুট করে টাকা আতৎসাত করেছে। এই বেড়িবাঁধ নির্মাণে কোনরকম নিয়মকানুন মানেনি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি। বেড়িবাঁধ নির্মাণে উপরের অংশ ১৪ ফুট চওড়া ও নিচের অংশে ২৮ ফুট বাঁধ নির্মার্ণের কথা থাকলেও ৫০ ভাগ কাজও করেনি ওই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি। বেড়িবাঁধের মধ্যে ২০ লক্ষ টাকার ঘাস লাগানোর কথা থাকলেও এক টাকারও ঘাস লাগায়নি। ফলে প্রতি বছর বৃষ্টিতে পাহাড়ী ঢলে ইউনিয়নের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। এসব অনিয়ম, দুর্নীতিতে সহযোগীতা করেছে পানি উন্নয়ন বোডের ঘুষখোর কর্মকর্তারা। ফলে গত কয়েক দিন আগে টানা বৃষ্টিতে ভাটিখাইন-ছনহরা সীমান্তে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে বেশ কয়েকটি বাড়িঘরসহ রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল।’
তিনি আরো জানান, শ্রীমতি খালের ভাঙনের বিষয়টি ইতোমধ্যে পটিয়া উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বললে ভাটিখাইন ইউনিয়নের শহিদুল আলম নামের এক ভুক্তভুগী ব্যাক্তি বলেন, ‘বেড়িবাঁধের মাটি মানুষ দিয়ে কাটার কথা থাকলেও তা এস্কেলেটর দিয়ে তড়িঘড়ি করে কেটেছে। এস্কেলেটর দিয়ে মাটি কাটার ফলে খালের পাড়ের মানুষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এলাকার প্রাচীনতম হাজার হাজার গাছপালা নষ্ট করেছে।’

এ প্রসঙ্গে পটিয়া পানি উন্নয়ন বোডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমে ওই এলাকাটি ঝুঁকিপূর্ণ। গত কয়েক দিন আগে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে উপজেলার পূর্বাঞ্চল পাহাড় থেকে আসা শ্রীমাই খালের বাঁধ ভেঙ্গে ভাটিখাইন ও ছনহরা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ভাটিখাইন ও ছনহরা সীমান্তে বেড়িবাঁধ নির্মাণে কোন অনিয়ম হয়নি। শ্রীমতি খালের ব্যাপক ভাঙনের কথা স্বীকার করেন এবং অতি দ্রুত বেড়িবাঁধ নির্মাণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।’
Share To:

Voice of Patiya

জানাতে পারেন আপনার মন্তব্য :

0 comments so far,add yours

~ মন্তব্য নীতিমালা ~

• আমাদের প্ল্যাটফর্মে মন্তব্য, আলোচনা, সমালোচনা বজায় রাখার জন্য আমরা একটি নীতিমালা তৈরি করেছি। আমরা আশা করি যে, কোন মন্তব্য পোস্ট করার সময় আপনারা তার অনুসরণ করবেন। ভয়েস অব পটিয়া কর্তৃপক্ষ ভিজিটর কর্তৃক নির্দেশিকা লঙ্ঘন করে এমন মন্তব্যগুলো মুছে ফেলার অধিকার সংরক্ষণ করে।

• জাতি, ধর্ম, বর্ণ, বয়স, লিঙ্গ, চেহারা বা অক্ষমতার ভিত্তিতে কোনো ব্যক্তি, কোন গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের প্রতি আপত্তিকর বা আক্রমণ করে এমন ভাষায় মন্তব্য করা যাবে না।

• আলোচনার বিষয়ের সাথে সম্পর্ক নেই এমন কোন মন্তব্য পোস্ট করা যাবে না। কিছু বিষয় বিস্তৃত হিসাবে গণ্য করা যেতে পারে, তবে আলোচনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে পারে এমন কোনো বিষয় ভয়েস অব পটিয়া কর্তৃক অনুমোদন করা হবে না।

• কোনো পক্ষকে আইনি ঝামেলায় ফেলতে পারে এমন মন্তব্য করা যাবে না।

• বাণিজ্যিক প্রকৃতির কিংবা বিজ্ঞাপনীয় উপাদান/লিঙ্ক রয়েছে এমন মন্তব্য পোস্ট করা যাবে না।

• যেসব মন্তব্য স্প্যামিং বলে মনে হচ্ছে এবং একাধিক পোস্ট জুড়ে অভিন্ন মন্তব্য পোস্ট করছে সেগুলো মুছে ফেলা হবে।

• ঘৃণাত্মক, সহিংসতার প্ররোচনা দেয় অথবা ধর্মকে আক্রমণ করে এমন কোন মন্তব্য করা যাবে না।