
য়েস অব পটিয়া-নিউজ ডেস্কঃ ‘ফিরে চলি শৈশবে মেতে উঠি উৎসবে’ শ্লোগানে আবদুর রহমান সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬০ বছর পূর্তি উদযাপন
![]() |
আবদুর রহমান সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬০ বছর পূর্তি উদযাপন; উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদ চৌধুরী , ইউএনও আবদুল্লাহ আল মামুন |
ভয়েস অব পটিয়া-নিউজ ডেস্কঃ ‘ফিরে চলি শৈশবে মেতে উঠি উৎসবে’ শ্লোগানে
দক্ষিণ চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
পটিয়ার একমাত্র সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় আবদুর রহমান সরকারী বালিকা উচ্চ
বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ৬০ বছর পূর্তি উপলক্ষে
প্রথম বারের মতো অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ‘হীরক জয়ন্তী পুনর্মিলন উৎসব-২০১৭’।
দুইদিনব্যাপী হীরক জয়ন্তী পুনর্মিলন উৎসবে একত্রে মিলিত হয়ে প্রাক্তন
শিক্ষার্থীরা যেন ফিরে পেলেন হারানো শৈশব ।
বিদ্যালয়ের সেই দিনগুলোর মতোই প্রাক্তন
শিক্ষার্থীরা ফেলে যাওয়া শৈশবে ফিরে নেচে গেয়ে মাতিয়ে তোলেন বিদ্যালয়
প্রাঙ্গন। শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পুরোদমে পুনর্মিলনী উৎসব শুরু হলে বিদ্যালয়
প্রাঙ্গনে প্রাক্তন ছাত্রীদের উপস্থিতি মিলনমেলায় পরিণত হয়। জাতীয় পতাকা
উত্তোলন ও বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানে উদ্বোধন করার পর শুরু হয় আলোচনা সভা।
মাঝখানে জুমার নামাজের বিরতির পর চলে স্মৃতিচারণ পর্ব। অনুষ্ঠানের শেষের
দিকে টিভি ও বেতার শিল্পী সন্দীপন দাশ, অজয় চক্রবর্তী, রূপনা চৌধুরী,
প্রিয়াংকা দাশ ও ইলমা বখতিয়ারের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনায় মাতোয়ারা ছিল
অনুষ্ঠানের শেষ পর্ব।
হীরক জয়ন্তী পুনর্মিলন উৎসব আয়োজক কমিটির
আহবায়ক ও প্রাক্তন ছাত্রী ফাতেমা বেগমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান
অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম-১২ পটিয়ার সাংসদ জনাব সামশুল হক চৌধুরী।
এর আগে বৃহষ্পতিবার ‘হীরক জয়ন্তী পুনর্মিলন উৎসব-২০১৭’ উপলক্ষে এক বিশাল র্যালীর আয়োজন করা হয়। র্যালিটি পটিয়ার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
এর আগে বৃহষ্পতিবার ‘হীরক জয়ন্তী পুনর্মিলন উৎসব-২০১৭’ উপলক্ষে এক বিশাল র্যালীর আয়োজন করা হয়। র্যালিটি পটিয়ার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধক ছিলেন মাধ্যমিক ও
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড চট্টগ্রামের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শাহেদা ইসলাম। বিদ্যালয়ের
প্রাক্তন ছাত্রী শর্মিলা দাশ ও ফারজানা চৌধুরী জেকির যৌথ সঞ্চালনায় এতে
বিশেষ অতিথি ছিলেন পটিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ চৌধুরী টিপু,
পৌরমেয়র হারুনুর রশিদ, পটিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আবদুল্লাহ আল মামুন, সাবেক মেয়র সামশুল আলম মাষ্টার, রাজনীতিবিদ বিমল মিত্র।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আয়োজক কমিটির সদস্য
সচিব বেগম নূরজাহান, শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন আয়োজক কমিটির যুগ্ম সচিব
আকলিমা বেগম, দপ্তর উপ-পরিষদের আহবায়ক শিরিন আকতার, পটিয়া পৌরসভা
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু তৈয়ব সোহেল, অর্থ উপ-কমিটির আহবায়ক তামান্না
জাহান আমিরী, প্রচার উপ-পরিষদের আহবায়ক টুম্পা চৌধুরী, সাংস্কৃতিক
উপ-পরিষদের আহবায়ক প্রিয়াংকা দাশ, আপ্যায়ন উপ-পরিষদের আহবায়ক রহিমা বেগম,
শৃঙ্খলা উপ-পরিষদের আহবায়ক সাওয়াল খানম জেসি প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের
শুরুতে
জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন উদ্বোধক
প্রফেসর শাহেদা ইসলাম।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সামশুল হক
চৌধুরী এমপি বলেন, ‘দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারী। নারী সমাজকে সুশিক্ষায়
শিক্ষিত করতে জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার শিক্ষার উন্নয়নে ব্যাপক অর্থ ব্যয় করছেন
এবং নারীর ক্ষমতায়ন বৃদ্ধির লক্ষ্যেই বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে তাদেরকে
সুদক্ষ নারী হিসেবে গড়ে তুলছেন। তাই বর্তমানে দেশে সরকারী, বেসরকারী
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নারীরা দক্ষতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে। নারীরা সুশিক্ষায়
শিক্ষিত না হলে জাতি উন্নয়ন অগ্রগতি শিখরে পৌঁছতে পারবে না। নারী সমাজকে
এগিয়ে নিতে আবদুর রহমান সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় যে অবদান রেখে যাচ্ছে
তা অব্যাহত থাকলে প্রতিষ্ঠানটি দেশসেরা প্রতিষ্ঠান হিসেবে রূপ নিবে।’ নতুন
প্রজন্মকে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে অভিভাবক ও শিক্ষক সমাজদের এগিয়ে
আসার আহবান জানান তিনি।
উদ্বোধক অধ্যাপক শাহেদা ইসলাম বলেন, ‘প্রতিযোগিতার বিশ্বে নারী সমাজ এগিয়ে যাচ্ছে। যার একটি উদাহরণ আবদুর রহমান
সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের হীরক জয়ন্তী পুনর্মিলন উৎসব। দেশের প্রত্যেক
স্তরে নারীরা যেভাবে ভূমিকা রাখছে তা পুরুষের চেয়ে কম নয়। বর্তমান তথ্য
প্রযুক্তি বিশ্বে প্রতিযোগিতায় ঠিকে থাকতে হলে মেয়েদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত
করার বিকল্প নেই। নারীরা পরিবারে বোঝা নয় দেশও জাতির সম্পদ। শুধু
প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি নিলেই সুশিক্ষিত হওয়া যায় না। নৈতিকতা সাহিত্য
সাংস্কৃতিক সামাজিক বিভিন্ন কর্মকান্ডে জড়িত থেকে জ্ঞান অর্জন করলে
পরিপূর্ণ শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া যায়।’
অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারন করতে গিয়ে বিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচের ছাত্রী রহমতুন্নেছা
বলেন, ‘১৯৬১ সালে তারা ৭-৮ জন প্রথম এ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায়
অংশগ্রহণ করে সবাই উত্তীর্ণ হন। সে সময় নারীরা বিভিন্ন ভাবে অবহেলিত হলেও
তারা এগিয়ে আসেন শিক্ষা গ্রহণ করার জন্য। অনেক দুর্দশা ত্যাগ-তিতিক্ষার পর তারা পড়াশোনা
করেছেন। নতুন প্রজন্মের নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে। অনেকবার মেয়েদের অভিভাবক
হিসেবে আবদুর রহমান সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে আসা হয়েছে। এবার ছাত্রী
হয়ে এসে খুব ভালো লেগেছে তাঁর। দীর্ঘ ৫৫ বছর পর বিদ্যালয়ে ছাত্রী হিসেবে
এসে নিজেকে ধন্য মনে করছেন তিনি। তার আশা
নারীরা এগিয়ে যাক। ভবিষ্যতে যেন এরকম আয়োজন এর ধারাবাহিতা বজায় রাখে সেজন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং
আয়োজকদের প্রতি তিনি আহবান জানান।’
তাঁর মতো অনেকে বিদ্যালয়ে এসে নিজেরে
অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন এবং নিজেদের সহপাঠীদের নিয়ে স্কুল প্রাঙ্গনে
ঘুরেফিরে সময় কাঠিয়েছেন। এ যেন এক মিলনমেলা। অনেকে প্রানোচ্ছ্বাসে হাসলেও কেউ আবার প্রিয়
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সেই পুরোনো দিনের কথা মনে করে আবেগাপ্লুত হয়ে চোখের জল ঝরিয়েছেন।
আবার মিলিত হওয়ার আশা নিয়ে বিদায় জানিয়েছেন একে অপরকে।
জানাতে পারেন আপনার মন্তব্য :
0 comments so far,add yours
~ মন্তব্য নীতিমালা ~
😀 আমাদের পোর্টালে মন্তব্য, আলোচনা, সমালোচনা বজায় রাখার জন্য আমরা একটি নীতিমালা তৈরি করেছি। আমরা আশা করি, কোন মন্তব্য পোস্ট করার সময় আপনারা তার অনুসরণ করবেন।
• ভয়েস অব পটিয়া কর্তৃপক্ষ ভিজিটর কর্তৃক নির্দেশিকা লঙ্ঘন করে এমন মন্তব্যগুলো মুছে ফেলার অধিকার সংরক্ষণ করে।
• জাতি, ধর্ম, বর্ণ, বয়স, লিঙ্গ, চেহারা বা অক্ষমতার ভিত্তিতে কোনো ব্যক্তি, কোন গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের প্রতি আপত্তিকর বা আক্রমণ করে এমন ভাষায় মন্তব্য করা যাবে না।
• আলোচনার বিষয়ের সাথে সম্পর্ক নেই এমন কোন মন্তব্য করা যাবে না। কিছু বিষয় ব্যতিক্রমী হিসেবে গণ্য করা যেতে পারে, তবে আলোচনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে পারে এমন কোনো বিষয় ভয়েস অব পটিয়া কর্তৃক অনুমোদন করা হবে না।
• কোনো পক্ষকে আইনি ঝামেলায় ফেলতে পারে এমন মন্তব্য করা যাবে না।
• বাণিজ্যিক প্রকৃতির কিংবা বিজ্ঞাপনীয় উপাদান/লিঙ্ক রয়েছে এমন মন্তব্য করা যাবে না।
• যেসব মন্তব্য স্প্যামিং বলে মনে হচ্ছে এবং একাধিক পোস্ট জুড়ে অভিন্ন মন্তব্য করলে সেগুলো মুছে ফেলা হবে।
• ঘৃণাত্মক, সহিংসতার প্ররোচনা দেয় অথবা ধর্মকে আক্রমণ করে এমন কোন মন্তব্য করা যাবে না।