vop-ad1

ভয়েস অব পটিয়াঃ মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)’কে অবমাননার প্রতিবাদে বিশ্বজুড়ে ফ্রান্সের পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছে মুসলিমরা।

মহানবী (সাঃ) কে অবমাননা, প্রতিবাদে বিশ্বজুড়ে ফ্রান্সের পণ্য বয়কটের ডাক; #boycottfrance #boycottfranceproducts #hashtag
#boycottfrance #boycottfranceproducts #hashtag


ভয়েস অব পটিয়া-নিউজ ডেস্কঃ
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)’কে অবমাননার প্রতিবাদে বিশ্বজুড়ে ফ্রান্সের পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছে মুসলিমরা।

ফ্রান্সের পণ্য বয়কটের ডাক দিয়ে হ্যাশ ট্যাগ (#boycottfranceproducts) ব্যবহার করছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা। তাদের এ আন্দোলনে ব্যাপক সাড়া মিলেছে বিশ্বব্যাপী। ইতোমধ্যে বিভিন্ন মুসলিম প্রধান দেশগুলোর মার্কেট থেকে ফ্রান্সের পণ্য সরিয়ে নেয়া হয়েছে। কুয়েতের বিভিন্ন মার্কেট থেকে ফ্রান্সের পণ্য সরিয়ে নেয়ার নানা ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই #boycottfranceproducts হ্যাশট্যাগের সঙ্গে জুড়ে দিচ্ছেন এসব ছবি ও ভিডিও। 

গত ১৬ অক্টোবর ফ্রান্সের প্যারিসে এক স্কুল শিক্ষককে গলা কেটে হত্যা করা হয়। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স ফ্রান্স পুলিশের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, হামলাকারীর বয়স ১৮ বছর। তিনি চেচেন জাতিগোষ্ঠীর এবং জন্ম রাশিয়ার মস্কোতে। নিহত ওই শিক্ষক রাষ্ট্রবিজ্ঞান পড়াতেন। ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা’ ক্লাসে তিনি শিক্ষার্থীদের মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-কে ব্যাঙ্গ করে কার্টুন দেখিয়ে ছিলেন। এই অবমাননার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় তাকে ব্যাঙ্গকারীকে হত্যা করা হয় বলে পুলিশ জানায়। 

এ ঘটনার জের ধরে ফ্রান্সের পুলিশ দেশটির অন্তত অর্ধশতাধিক মসজিদ ও মুসলিম-অধ্যুষিত এলাকায় ব্যাপক-ধরপাকড় চালায়। পাঁচ বছর আগে ফ্রান্সের ব্যাঙ্গাত্মক ম্যাগাজিন ‘শার্লি এবদো’ হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)’কে নিয়ে ব্যাঙ্গাত্মক অবমাননাকর কার্টুন ছাপানোর বিরুদ্ধে ওই দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় তাতে হামলার ঘটনা ঘটে। এর পুনরাবৃত্তি করে এবারও কার্টুন ছাপিয়েছে ম্যাগাজিনটি। 

ফ্রান্সের দুটো সরকারি বিল্ডিংয়ে মুহাম্মদ (সাঃ)’র ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন করা হচ্ছে। এ ঘটনায় সমালোচনার ঝড় উঠলেও ব্যাঙ্গকারীদের পক্ষে শক্ত অবস্থান নিয়ে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো বলেছেন, ‘তারা ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন বন্ধ করবে না। এটা তাদের ‘ফ্রিডম অব স্পিচ’ (বাক-স্বাধীনতা)। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)’র বিতর্কিত কার্টুন ছাপানো নিয়ে নিন্দা জানাবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন। সেই সাথে প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দেন তিনি। 

ফ্রান্স সরকার কর্তৃক মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)’র কার্টুন বন্ধে ব্যবস্থা না নেয়া এবং শার্লি এবদোর পক্ষে অবস্থান নেয়ার পর মুসলিম বিশ্বে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ক্ষোভে ফেটে পড়ছে মুসলিম দেশগুলো। এরই প্রতিবাদে ফ্রান্সের সব ধরনের পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছে কুয়েত।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী বিশেষ করে ফেসবুক-টুইটারে ফ্রান্সের অবমাননাকর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

ফ্রান্স রাষ্ট্রীয়ভাবে মুহাম্মদ (সাঃ) এবং ইসলামের বিরুদ্ধে এমন কুরুচিপূর্ণ প্রচারণা-বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে। ইতিমধ্যে ফ্রান্স সরকার প্রায় অর্ধশতাধিক মসজিদ ও মাদ্রাসা বন্ধ করে দিয়েছে। আরও অসংখ্য মসজিদ-মাদ্রাসা বন্ধের তালিকায় আছে।

এদিকে আন্দোলনকারীরা ফেসবুক-টুইটার পোস্টে ফ্রান্সের বিভিন্ন কোম্পানির একটি তালিকা প্রকাশ করছেন। যেখানে ফ্রান্সের মালিকানাধীন কোম্পানীগুলোর লোগো ও নাম ব্যবহার করা হয়েছে। এরই মধ্যে ফ্রান্সের সরকারি বিভিন্ন সংস্থার দেয়ালে শার্লি এবদোর সেই বিতর্কিত ১২টি কার্টুন প্রদর্শন করা হচ্ছে। 

#boycottfrance #boycottfranceproducts #hashtag
#boycottfranceproducts তালিকা

দেশটির সরকার এবং কয়েকটি গণমাধ্যমের এমন সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি)। ফ্রান্সের কয়েকটি ভবনের সামনে এবং সরকারের সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে ইসলামকে সম্পৃক্ত করা এবং মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)’কে অপমানজনক প্রচারণার সমালোচনা করেছে সংস্থাটি। 

ওআইসির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা আমাদের প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এঁর প্রতি অবমাননা, মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে ক্রমাগত আঘাতের তীব্র নিন্দা জানাই। রাজনৈতিক স্বার্থে ফ্রান্সের নাগরিক ও ইসলামকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর ঘৃণ্য চেষ্টা করছেন কতিপয় ফরাসী সরকারি কর্মকর্তারা। বাক-স্বাধীনতার নামে কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়।’

সংস্থাটি ফ্রান্সকে তার বৈষম্যমূলক নীতিগুলো পর্যালোচনা করার আহ্বান জানিয়েছে। 


এদিকে ১৯৪৭ সালের ১০ ডিসেম্বর সবার জন্য মানবাধিকার বিষয়ক একটি ঘোষণাপত্র জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন গৃহীত হয়। এটি গোটা বিশ্বের মানুষের মানবাধিকারের দলিল হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ফ্রান্সের ইসলামবিদ্বেষী এ অবস্থান জাতিসংঘের সেই ঘোষণাপত্রটি সরাসরি লঙ্ঘন করেছে। 

ঘোষণাপত্রের প্রথম অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘পৃথিবীর সব মানুষ সমান অধিকার নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তাদের অধিকার ও মর্যাদা সমান। প্রত্যেকেই ভ্রাতৃত্বপূর্ণ একটি সম্পর্ক বজায় রাখবে, একে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করবে।’ 

কিন্তু ফ্রান্সের ইসলামবিদ্বেষী আচরণ, তার কার্টুন প্রদর্শন সরাসরি জাতিসংঘের এ ঘোষণা লঙ্ঘন করে। এতে কার্যত জাতিসংঘকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করেছে ফ্রান্স। 

ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী, হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় রাসূল এবং সর্বশেষ নবী। তাঁর কোনও ধরনের অবয়ব আঁকা ধর্ম অবমাননা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই এবারও হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এঁর কার্টুন নিয়ে মুসলিম বিশ্বে চরম সমালোচনা চলছে। সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা বলে বিতর্কিত কার্টুনটির পক্ষেই অবস্থানের কথা জানালেন লেবানেন সফররত ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রো। এদিকে ফান্স সরকারের এরকম ঘৃণ্য কাজের প্রতিবাদ জানিয়েছেন তুরষ্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান। তিনি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টকে মানসিক চিকিৎসা নেয়ার কথা বলেছেন।


Share To:

Voice of Patiya

জানাতে পারেন আপনার মন্তব্য :

0 comments so far,add yours

~ মন্তব্য নীতিমালা ~

• আমাদের প্ল্যাটফর্মে মন্তব্য, আলোচনা, সমালোচনা বজায় রাখার জন্য আমরা একটি নীতিমালা তৈরি করেছি। আমরা আশা করি যে, কোন মন্তব্য পোস্ট করার সময় আপনারা তার অনুসরণ করবেন। ভয়েস অব পটিয়া কর্তৃপক্ষ ভিজিটর কর্তৃক নির্দেশিকা লঙ্ঘন করে এমন মন্তব্যগুলো মুছে ফেলার অধিকার সংরক্ষণ করে।

• জাতি, ধর্ম, বর্ণ, বয়স, লিঙ্গ, চেহারা বা অক্ষমতার ভিত্তিতে কোনো ব্যক্তি, কোন গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের প্রতি আপত্তিকর বা আক্রমণ করে এমন ভাষায় মন্তব্য করা যাবে না।

• আলোচনার বিষয়ের সাথে সম্পর্ক নেই এমন কোন মন্তব্য পোস্ট করা যাবে না। কিছু বিষয় বিস্তৃত হিসাবে গণ্য করা যেতে পারে, তবে আলোচনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে পারে এমন কোনো বিষয় ভয়েস অব পটিয়া কর্তৃক অনুমোদন করা হবে না।

• কোনো পক্ষকে আইনি ঝামেলায় ফেলতে পারে এমন মন্তব্য করা যাবে না।

• বাণিজ্যিক প্রকৃতির কিংবা বিজ্ঞাপনীয় উপাদান/লিঙ্ক রয়েছে এমন মন্তব্য পোস্ট করা যাবে না।

• যেসব মন্তব্য স্প্যামিং বলে মনে হচ্ছে এবং একাধিক পোস্ট জুড়ে অভিন্ন মন্তব্য পোস্ট করছে সেগুলো মুছে ফেলা হবে।

• ঘৃণাত্মক, সহিংসতার প্ররোচনা দেয় অথবা ধর্মকে আক্রমণ করে এমন কোন মন্তব্য করা যাবে না।